চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ (বিআরডিবিভুক্ত) ৫১তম বার্ষিক সাধারণ সভা ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুরে দিকে সদর উপজেলার বীজ প্রত্যয়ন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিআরডিবির উপ-পরিচালক মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ইউসিসিএ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোঃ আবু কাউছারের সভাপতিত্বে বার্ষিক সাধারণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ.এইচ মাহবুব আলম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব ও বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সদর উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ আজিজুল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার সৈয়দ ইয়াছিন।
বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ ফরহাদ হোসেন, জুনিয়র অফিসার (হিসাব) মোঃ মুক্তার হোসেন, সদর ইউসিসিএ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি তোফায়েল আহম্মেদ মোল্লা, জয়নাল আবেদীন, সদস্য মোঃ আবু কাউসার, মোঃ এলেম খাঁ, নূর মোহাম্মদ খলিফা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিআরডিবির উপ-পরিচালক মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছে। সরকার বিআরডিবির মাধ্যমে গরিব মানুষের মধ্যে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করছে। কেন্দ্রীয় সমিতি একটি দুধের গাভীর মতো, তার দুধ খাও, মাংস খেওনা। এই কথাটাকে হৃদয়ে উপলদ্ধি করতে হবে। ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের ঋণের টাকা যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে সে টাকা আবার সঠিক সময়ের মধ্যে ফেরত দেয় তা নিশ্চিত করতে হবে। গ্রামীন জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিআরডিবি নিরলসভাবে কাজ করছে। সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সকলকে এক সাথে কাজ করতে হবে। বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রায় শতাধিক সমবায়ী অংশ নেয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেনের ১৫টি আসনের ৬টি টিকেটসহ আমিন মিয়া (৩২) নামের এক টিকেট কালোবাজারিকে আটক করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি।
আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল ৯টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে অভিযান পরিচালনা করে তাকে আটক করা হয়। আটককৃত আমিন মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের পৌর এলাকার পুনিয়াউট গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, টিকেট কালোবাজারি আমিন মিয়াকে আন্তঃনগর বিভিন্ন ট্রেনের আসনের টিকেট নিয়ে স্টেশনে উচ্চ দামে বিক্রি করার জন্য ডাকাডাকি করছিলো। সন্দেহ হলে তার দেহ তল্লাশি চালিয়ে ৬টি টিকেটের ১৫টি আসন পাওয়া যায়। আটককৃত আমিন মিয়া স্বীকার করেছেন সে টিকেট কালোবাজারি করেন। তার বিরুদ্ধে আগেও টিকেট কালোবাজারি একটি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্যাংকারদের মধ্যে অভিজ্ঞতা ও তথ্য বিনিময়, পেশাগত ও সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে এসোসিয়েশনভূক্ত ব্যাংকসমূহের সদস্যদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াস্থ ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের ১২৫ শাখায় কর্মরত প্রায় ছয় শতাধিক কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত ‘এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ এর প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বার্ষিক সাধারণ সভা-২০২৩ অনুষ্ঠিত হলো। আজ ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় আমিন কমপ্লেক্সে (৮ম তলা) কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম মোঃ মোবারক হোসেন।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জনতা ব্যাংকের অঞ্চল প্রধান মোঃ আবু হানিফা, কৃষি ব্যাংকের অঞ্চল প্রধান মোহাম্মদ ইউসুফ খান, কর্মসংস্থান ব্যাংকের অঞ্চল প্রধান তালিম হোসেন।
সভায় এসোসিয়েশনভূক্ত ব্যাংকসমূহের নির্বাহী ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় এসোসিয়েশনের প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত স্যুভেনির এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এ ছাড়াও ২০২২, ২০২৩ সনে ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষার দ্বিতীয় পর্বে উত্তীর্ণদের এবং ২০২৩ সনে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়।
সভায় এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাকালীন উপদেষ্টাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়।
সোনালী ব্যাংকের এজিএম মোঃ শরীফুল হকের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অগ্রনী ব্যাংকের এসপিও মোঃ ছাগীউর রহমান।
একে একে সকল ব্যাংকের নির্বাহী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাগণ বক্তব্য রাখেন।
সভা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভা সঞ্চালনা করেন সোনালী ব্যাংকের এসপিও মোঃ শহিবুর রহমান।
পবিত্র ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট। জেলার ৯টি উপজেলায় বসেছে ৭১টি পশুর হাট। ইতিমধ্যেই এসব হাটে বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। তবে ক্রেতারা জানান, অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর গবাদি পশুর দাম একটু বেশী।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য জেলার ১৩ হাজার ৮৯১ টি খামারে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৬৬টি গবাদি পশু লালন-পালন করা হয়। তবে জেলায় কোরবানীর জন্য গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার। চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে ২০ হাজার গবাদি পশু।
তবে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডাঃ কাজী নজরুল ইসলাম জানান, চাহিদার তুলনায় গবাদি পশু কম থাকলেও কোন সমস্যা হবেনা। কারন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জেলা থেকে ২০/২৫ হাজার গবাদি পশু আমদানি করবেন।
এছাড়াও জেলায় বহু কৃষক পরিবারে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন। যার জন্য জেলায় কোরবানীর পশু নিয়ে কোন সমস্যা হবেনা। তিনি বলেন, এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গবাদি পশু কেনা বেচা হবে বলে আশা করছি।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য মতে জেলার ১৩ হাজার ৮৯১ টি খামারে মধ্যে সদর উপজেলায় ৪১০৬টি খামার, সরাইল উপজেলায় ৯৬৬টি, আখাউড়া উপজেলায় ৬৭৪টি, কসবা উপজেলায় ২১৩৬টি, নাসিরনগর উপজেলায় ১৬০৭টি, নবীনগর উপজেলায় ১৫৯৫টি, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ১২৫০টি, আশুগঞ্জ উপজেলায় ৯৩৭টি ও বিজয়নগর উপজেলায় ৬২০টি খামার রয়েছে।
এসব খামারে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ৫২০৭৭টি ষাঁড়, ১৯১৯৫টি বলদ, ১৭৬৮৪টি গাভী, ১২২১৩টি মহিষ, ১৩৫৮৮টি ছাগল, ৫৯০৭টি ভেড়া, অন্যান্য ৩২টি লালন-পালন করা হয়। এছাড়াও অনেক কৃষক পরিবারেই কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন।
এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন উপজেলায় কোরবানীর হাট বসছে ৭১টি। এইসব হাটের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় পৌরসভার ১টিসহ মোট ৫টি, সরাইল উপজেলায় ৯টি, নাসিরনগর উপজেলায় ৯টি, আখাউড়া উপজেলায় ৫টি, কসবা উপজেলায় ১১টি, নবীনগর উপজেলায় ১৩টি, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ৫টি, আশুগঞ্জ উপজেলায় ৬টি ও বিজয়নগর উপজেলায় বসবে ৮টি কোরবানীর হাট।
এসব হাটে কাজ করবে ৫৩টি মেডিকেল টীম। এর মধ্যে সদর উপজেলায় কাজ করবে ৬টা, সরাইল উপজেলায় কাজ করবে ৪টা, নাসিরনগর উপজেলায় কাজ করবে ৯টা, আখাউড়া উপজেলায় কাজ করবে ৫টা, কসবা উপজেলায় কাজ করবে ৩টা, বাঞ্চারামপুর উপজেলা কাজ করবে ৫টা, আশুগঞ্জ উপজেলায় কাজ করবে ৬টা, বিজয়নগর উপজেলায় কাজ করবে ২টা টীম।
সরজমিনে কয়েকটি খামারে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদ-উল আযহাকে সামনে রেখে খামারের মালিক- কর্মচারিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। খামারিরা রুটিন মাফিক গবাদি পশুর পরিচর্যা করছেন। প্রতিটি খামারেই কাজ করছে ৮/১০জন শ্রমিক। গবাদি পশুকে গোসল করানো, খাবার দেয়াসহ গবাদি পশুর গোবর পরিষ্কার করেন তারা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের নয়নপুর এলাকার রূপচান্দ বিবি ডেইরি খামারে গিয়ে দেখা যায় ওই খামারে কোরবানীর জন্য শতাধিক দেশীয় গরু লালন-পালন করা হচ্ছে।
খামারের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর আমরা দেড় শতাধিক গরু লালন-পালন করেছিলাম। গত বছর ৩০টি গরু বিক্রি করতে পানিনি। গত বছরের থাকা ৩০টি গরুসহ এই বছর শতাধিক গরু লালন-পালন করেছি। সবগুলোই দেশীয় জাতের। প্রতিদিন গরুগুলোকে ২/৩বার করে মোটরের পানি দিয়ে গোসল করাই। গরুর যাতে গরম না লাগে সেজন্য ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছে খামারে। গরুগুলোকে স্বাভাবিক খাওয়ার দেয়া হয়। বেশীর ভাগ সময় দেয়া হয় ঘাস।
তিনি বলেন, এ বছর গুরুর খাবার ও ঔষধপত্রসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। তাই গত বছরের চেয়ে এ বছর প্রতি গরুতে ২০/২৫ হাজার টাকা বেশী খরছ হয়েছে। আশা করি এই আমাদের সবগুলো গরু বিক্রি হবে, দামও ভাল পাবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের গোকর্ণঘাটের নিউ প্রিন্স ডেইরী খামারে কোরবানীর জন্য ২৬০টি গরু লালন-পালন করা হয়। ইতিমধ্যেই তারা ৩০ টি গরু বিক্রি করে ফেলেছেন। এই খামারে সর্বোচ্চ ৬ লাখ টাকা ও সর্বনিম্ন দেড় লাখ টাকা মূল্যের গরু রয়েছে।
খামারের মালিক মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, ২৬০টি গরুর মধ্যে ইতিমধ্যেই ৩০ গরু বিক্রি করে দিয়েছি। ঢাকা, সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা খামারে এসে গরু কিনে নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, খামারের বড় গরুটা ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। খামারে ১৮জন শ্রমিক কাজ করে। তিনি বলেন, এই বছর প্রতি গরু ১০-১৫ হাজার টাকা বেশী দিয়ে কিনতে হয়েছে। এছাড়াও এ বছর গবাদি পশুর খাবার ও ঔষুধপত্রের দাম বেশী। তিনি বলেন আশা করি ভারত থেকে গরু না আসলে আমাদের ব্যবসা ভালো হবে।
এ ব্যাপারে খান এগ্রো ডেইরি ফার্মের কর্ণধার ও জেলা ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ সাইফুদ্দিন খান শুভ্র জানান, জেলায় প্রায় ১৩ হাজার ৮শত খামারি রয়েছে। গো-খাদ্যের দাম বাড়াতে গরুর মাংসের দাম বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, দানাদার খাবারের পরিবর্তে, গো-খাদ্য ঘাসের উৎপাদন বাড়াতে পারলে গরুর দাম অনেক কমে যাবে।
তিনি বলেন, এ বছর তার খামারে বিক্রির জন্য ১০৭টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি খামার থেকেই গরু বিক্রি করি। তিনি বলেন, ভারত থেকে চোরাইপথে গরু না আসলে স্থানীয় খামারীরা লাভবান হবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডাঃ কাজী নজরুল ইসলাম জানান, চাহিদার তুলনায় গবাদি পশু কম থাকলেও কোন সমস্যা হবেনা। কারন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জেলা থেকে ২০/২৫ হাজার গবাদি পশু আমদানি করবেন। এছাড়াও জেলায় বহু কৃষক পরিবারে কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য ২/৩টি করে গবাদি পশু লালন-পালন করছেন। এতে জেলার চাহিদা পূরণ হবে। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গবাদি পশু বিক্রি করা হবে বলে আশা করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, পেশি শক্তির দাপট, ভিজিএফ ও ভিজিডির মাল আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছেন সদস্যরা। সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের ৯ সদস্য এ অনাস্থা দিয়েছেন।
এ ঘটনায় সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু ছায়েদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে ২৭ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
অভিযোগপত্রে ইউপি সদস্যরা উল্লেখ করেন, টিআর/কাবিখার জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরের জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ পাওয়া ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান। সরকারের কৃষি প্রণোদনা সার এবং বীজ কৃষকের মাঝে বিতরণ না করে নিজেই তা লুটপাট করেছেন। এছাড়া গ্যাস ফিল্ড থেকে প্রাপ্ত ট্যাক্সের ৪ লাখ ১০ হাজার টাকার মধ্যে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা কাজ করে অবশিষ্ট টাকা আত্মসাৎ করেন। ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ এলাকার জনগণ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে সরকারি কোষাগারে সম্পূর্ণ টাকা জমা না রেখে বেশির ভাগ অংশ আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, এলাকার অসহায়-হতদরিদ্র মানুষদের কাছ থেকে জন্মনিবন্ধন আবেদন, সংশোধন পরিবর্তন, পরিবর্ধন বাবদ বিভিন্ন অসুবিধা জটিলতা দেখিয়ে দুই হাজার, তিন হাজার, পাঁচ হাজার টাকা নিয়া জনগণের কাজ করে দেয় এমনকি চাহিদা মত টাকা না পেলে দীর্ঘদিন হয়রানি করেন। চেয়ারম্যান আবু ছায়েদ নিজ ইচ্ছায় অসৎ উপায়ে টাকা উপার্জন করার লক্ষ্যে ডালিম নামে এক ব্যক্তিকে দিয়ে বিভিন্ন সরকারি অনুদান যেমন প্রেগনেন্সি ভাতা, কৃষি প্রণোদনা, সার, বীজ, ধান বীজ, সরিষাসহ সরকারি টিউবওয়েল, টিসিবির পণ্য বিক্রি করে টাকা উপার্জন করে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারীদের একজন সংরক্ষিত ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নাসরিন আক্তার বলেন, চেয়ারম্যান আবু ছায়েদ নির্বাচিত হওয়ার পর নাটাই উত্তর ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্পে তিনি স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে গেছেন। অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করা সব ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ঠ হয়ে আছেন।
৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল হাই বলেন, লিখিত অভিযোগে যা লেখা হয়েছে, তা সামান্য মাত্র। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। সবশেষ বরাদ্দ পাওয়া টিউবওয়েলও লুট করে খেয়েছেন। তার সঙ্গে আমাদের কাজ করা সম্ভব নয়। তাই আমরা অনাস্থা দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান আবু ছায়েদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ইউপি সদস্যরা অহেতুক কারণে এমন করছেন। তাদের সঙ্গে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপসচিব) রুহুল আমিন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে একটি আবেদন দেওয়া হয়েছিল জেলা প্রশাসকের কাছে। কিন্তু নিয়ম হচ্ছে অভিযোগ জানিয়ে আবেদন করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। তিনি তদন্ত করে বিষয়টি জানাবেন জেলা প্রশাসককে। আমরা তাদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি ইউএনওর কাছে আবেদন করতে।