চলারপথে রিপোর্ট :
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সংস্কৃতির রাজধানীখ্যাত তিতাস বিধৌত জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া। মুক্তিযুদ্ধে এই জেলার রয়েছে গৌরবোজ্জল ইতিহাস। যুগে যুগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন অনেক জ্ঞানী, গুনী মহাপুরুষ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানুষ সংস্কৃতিমনা ও অতিথি পরায়ন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা। এখানকার ঐতিহ্যের মধ্যে রয়েছে মিষ্টি, ছানামুখী, মেলা/বান্নি, হাঁসলি মোরগ, গরুর দৌড়, নৌকা বাইচ ও পুতুল নাচ।
এক সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচ দেশে ও বিদেশে বিখ্যাত ছিলো। পুতুল নাচের সংস্কৃতি ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে সমৃদ্ধ করেছিলো দেশে-বিদেশে। তবে কালের আর্বতে পুতুল নাচের আগের জৌলুস আর নেই। আধুনিক সংস্কৃতির আগ্রাসনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাচ এখন বিলুপ্তির পথে।
বাঙ্গালীর অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখ, বসন্ত উৎসবসহ হাতেগুনা দুই/একটি উৎসবে পুতুল নাচে অনুষ্ঠান ছাড়া তেমন আর চেখে পড়েনা।
শহরের প্রবীন ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গেছে, ভারতীয় উপমহাদেশে পুতুল নাচের সৃষ্টি করেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের বিপিন পাল। বিপিন পালকে ভারতীয় উপমহাদেশে পুতুল নাচের জনক বলা হয়। তিনি প্রথম আধুসিক পুতুল নাচের প্রচলন করেন। তিনি হিন্দু ধর্মের বা পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে ও তৎকালীন সময়ের সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পুতুল নাচ করতেন।এ ছাড়াও গ্রামীন জীবনের নানা দৃশ্যপট তুলে ধরতেন তার পুতুল নাচে। তাঁর পুতুল নাচ দেখে শিশু থেকে সব বয়সী মানুষ আনন্দ পেতো। বিশেষ করে শিশুদের আনন্দের সীমা ছিল না, এই ভাবনা থেকেই তিনি প্রথমে মাটির পুতুল, ক্রমান্বয়ে স্টিক পুতুল, স্প্রিং পুতুল ও সূতোর তৈরি পুতুল তৈরী করেন। একই এলাকার কয়েক জন শিষ্যকে সাথে নিয়ে তিনি চমক তৈরি করে ছিলেন পুতুল নাচ সৃষ্টির মাধ্যমে। পুতুল নাচের ব্যাপক জনপ্রিয়তা দেখে তাঁর পরিবার সহ মতি মিয়া, রমনাথ বাবু, তারু মিয়া ও সিদ্দিক মিয়াকে সাথে নিয়ে বৃদ্ধি করেন পুতুল নাচের প্রচার ও প্রসার। তাঁর এ শিষ্যরা দীর্ঘবছর তাঁর সাথে থেকে পরবর্তীতে যার যার এলাকায় পুতুল নাচের দল তৈরি করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনপদে পুতুল নাচের সাথে জড়িত আরো কয়েকজনের নাম জানা যায়। এরা হলেন জেলার নবীনগরের কৃষ্ণনগর গ্রামের গিরীশ আচার্য্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মেড্ডা গ্রামের ধন মিয়া, কালু মিয়া ও মোঃ রাজ হোসেন। এক সময় ধন মিয়ার পুতুল নাচ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
ধন মিয়ার পুতুল নাচ দলের নাম ছিলো রয়েল বীনা অপেরা। ধন মিয়া শুধু দেশে নয়, বিদেশে ও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
১৯৮০ সালে ধন মিয়া পুতুল নাচ দেখাতে সোভিয়েত ইউনিয়নে গিয়েছিলেন। তৎকালীন সময়ে ধন মিয়া রাশিয়ার মস্কো, তাসখন্দ, সমরখন্দসহ বিভিন্ন শহরে ২০ দিন অবস্থান করে পুতুল নাচ দেখিয়ে বাংলাদেশের নাম বিশ্ব পরিমন্ডলে ছড়িয়ে দেন। ধন মিয়ার পুতুল নাচের মধ্যে ছিলো “বড়শি বাওয়া” “বাঘে কাঠুরিয়াকে ধরে নেওয়া” এবং “বৈরাগী বৈরাগিনীর ঝগড়া” অন্যতম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচের জৌলুস এখন আর আগের মতো নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য পুতুল নাচ এখন বিলুপ্তির পথে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সূর্যমুখী কিন্ডার গার্টেন এন্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে পুতুলের আদলে অসাধারণ নৃত্য প্রদর্শন করা হয়। যা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরা পায়ের আঙ্গুলের সাথে হাতে সূতো বেঁধে, মাথায় ঘুমটা দিয়ে ও গায়ে বাঙ্গালীয়ানা পোশাক পরিধান করে নাচ প্রদর্শন করে।
পুতুলের আদলে ২৬ জন শিশু গানের তালে তালে অসাধারণ নৃত্য প্রদর্শন করে। ৫ মিনিটের মনোমুগ্ধকর পুতুলের আদলে নাচের ভিডিও উপস্থিত অতিথি ও অভিভাবকদের মুগ্ধ করে, তাদের হৃদয় জয় করে। সেই নাচের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা দেখে সূধীজনরা প্রশংসা করছেন। পুতুলের আদলে শিশুদের নাচ নতুন প্রজন্মের সাথে পুতুল নাচের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।
পুতুলের আদলে শিশুদের দিয়ে এই নৃত্যের মূল কারিগর শহরের পশ্চিম মেড্ডা এলাকার তরুন নৃত্য শিল্পী মোহাম্মদ আল সাইফুল আমিন জিয়া। তিনি পশ্চিম মেড্ডা এলাকার মৃত রমজান মিয়ার ছেলে। তিনি সূর্যমূখী কিন্ডার গার্টেন এন্ড উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় ১১ বছর ধরে সহকারী শিক্ষক (নৃত্য) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ ব্যাপারে নৃত্যশিল্পী মোহাম্মদ আল সাইফুল আমিন জিয়া বলেন, ছোট বেলায় পুতুল নাচ দেখতাম। সূতা দিয়ে পুতুল নাচানো হতো। তবে এখন আর পুতুল নাচ সেভাবে হয় না। আমি ভাবলাম একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান ও সংস্কৃতির কর্মী হিসেবে বিলুপ্ত হতে থাকা পুতুল নাচের জৌলুসকে আবারো আনতে। নতুন প্রজন্মকে পুতুল নাচের সাথে পরিচিত করার ভাবনা থেকেই এই পুতুল নাচটি তৈরী করি। তিনি আরো বলেন, আমার প্রদর্শিত পুতুলের আদলে শিশুদের নৃত্যটি দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হওয়ায় আমি অনেক খুশি। আমি মনে করি আমার কষ্ট সার্থক হয়েছে। তিনি বলেন, আমি নিজের চেষ্টায় ৬ বছর বয়স থেকে নাচ করি, এবং ১৫ বছর বয়স থেকে নাচ করাই। আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে কাজ করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বীমা ফোরামের উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্স কোঃ লিঃ এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কোর্ট রোডস্থ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা বীমা ফোরামের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা বীমা ফোরামের উপদেষ্টা মোহাম্মদ আরজু মিয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি এইচ এম আবুল বাশার, সহ-সভাপতি মোঃ তাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক আমীর হোসেন ফারুক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া কার্যকরী সদস্য মোঃ ইকবাল হোসেন।এছাড়া বিভিন্ন বীমা কোম্পানীর কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বার্ষিক আনন্দ ভ্রমণসহ সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের চাবি ও দলিল হস্তান্তর করা
এ উপলক্ষে আজ ১১ জুন মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখের সভাপতিত্বে ঘরের চাবি ও দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন সুলতানা, সদর উপজেলা পরিষদের সদ্য বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোনাব্বের হোসেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম ভূইয়া, ইউপি চেয়ারম্যান আলামিনুল হক পাভেল প্রমুখ।
সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশে একযোগে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর ঘর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের আমিরপাড়ায় নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৫০টি ঘরের দলিল ও চাবি উপকারভোগিদের মধ্যে হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, মুজিব শতবর্ষে “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” এই শ্লোগান নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার আশ্রয়ণ-২-প্রকল্পের আওতায় ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন (যাদের জমি নেই ঘরও নেই) তাদের পূনর্বাসনের জন্য ৫ম পর্যায়ে (২য় ধাপে) ৫০টি পরিবারের জন্য র্গহ নির্মাণ করা হয়েছে। ২শতাংশ খাস জমিতে দুই কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি আধা পাকা ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। সব গুলো ঘর একই নকশায় নির্মিত হয়েছে। ৫ম পর্যায়ে (২য় ধাপে) সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের আমিরপাড়া এলাকায় ৫০ টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে ভূমিহীনদের পুর্ণবাসনের ক্ষেত্রে এটি একটি বিপ্লব।
তিনি উপকারভোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ঘরের পাশে যে খালি জায়গা রয়েছে সেখানে সবজি ও গাছ রোপন করতে হবে। ঘরটাকে বাগানে পরিণত করতে হবে।
সড়ক দুর্ঘটনা, অগ্নীসংযোগ ও আকর্ষিক প্রাকৃতিক দূর্যোগে হতাহতদের চিকিৎসায় বিনামূল্যে জরুরী অক্সিজেন সরবরাহ করার জন্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাপরিষদ আজ ১৯ রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট কে ১০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার হস্তান্তর করেছে।
এসময় জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান যুদ্ধহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফিরোজুর রহমান ওলিও, উপজেলা চেয়ারম্যান রাফি উদ্দিন আহম্মদ, উপজেলা চেয়াম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, উপজেলা চেয়ারম্যান নাছিমা মুকাই আলী, উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, পৌরমেয়র মোঃ গোলাম হাক্কানী, মেয়র শিব শংকর দাস, মেয়র মোঃ তফাজ্জল হোসেন এবং রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের পক্ষে সম্পাদক আলহাজ¦ মোঃ শাহআলম সদস্য মাসুকুল কবির, আশিকুর রহমান পাঠান ও সালাউদ্দিন সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাস ফিল্ডে স্থাপন করা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিফলক উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ ৯ আগস্ট বুধবার দুপুরে তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১নং কূপে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্মৃতি ফলকটির উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
জ্বালানি নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর অবদান স্মরণীয় করে রাখতেই তার স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়েছে। জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষ্যে তিতাস গ্যাস ফিল্ডসহ পাঁচটি গ্যাস ফিল্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে শাহাদাত বরণের মাত্র ছয় দিন আগে বঙ্গবন্ধুর পাঁচটি গ্যাস ফিল্ড কেনার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তেই সোনার বাংলা গড়ার ভিত তৈরি হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতার জন্যই অর্থনৈতিকভাবে বিশ্ব-দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সুলতান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার ও পরিচালক (প্রশাসন) আলতাফ হোসেন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. রুহুল আমিন প্রমুখ।
স্মৃতিফলক উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, সকল কূপ থেকেই গ্যাস উত্তোলনের জন্য স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে যেসব কূপ বন্ধ আছে, সেগুলো জরুরি ভিত্তিতে চালুর কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিতাসের নতুন আরও কিছু কূপ অনুসন্ধান এবং বর্তমানে যে স্তর রয়েছে তারচেয়ে আরও গভীরে গিয়ে গ্যাস উত্তোলনের চেষ্টা করছি আমরা।
অনুষ্ঠানে বিজিএফসিএল, পেট্রোবাংলা, গ্যাস ফিল্ডস এবং বাপেক্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান শেল অয়েলের কাছ থেকে তিতাস, বাখরাবাদ, রশিদপুর, হবিগঞ্জ ও কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড কিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাভুক্ত করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর কেনা পাঁচটি গ্যাস ফিল্ডের মধ্যে তিনটি পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের অধীনে। আর পাঁচটি গ্যাস ফিল্ডে বর্তমানে মজুত আছে ৫ দশমিক ২৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। যার বাজারমূল্য ৩ লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আইয়ূবপুর ইউনিয়নের চর ছয়ানী গ্রামে ঘরে ঢুকে প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই শিশু পুত্রকে জবাই করে হত্যা করেছে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা। আজ ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে চর ছয়ানী গ্রামের দক্ষিণপাড়ার নিজ ঘর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন, ছয়ানী গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদি আরব প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী জেসি আক্তার (৩৫), তার বড় ছেলে মাহিন (১৪) ও ছোট ছেলে মহিন (৭)। এ সময় তাদের ৭ মাস বয়সী বয়সী কন্যা সন্তান ওজিহাকে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।
ঘটনার পর পরই ত্রিপল খুলের রহস্য উদ্ধার করতে বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ, পিবিআই, সিআইডিসহ আইন-শৃংখলাবাহিনীর একাধিক টিম কাজ শুরু করে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আইয়ূবপুর ইউনিয়নের চর ছয়ানি গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদি আরব প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী জেসি আক্তার দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে বাড়ির একটি পাকা ভবনে বসবাস করতেন।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির গৃহপরিচারিকা জেসমিন আক্তার বাসায় কাজ করতে এসে বাড়ির গেইট বন্ধ দেখতে পায়।
পরে তিনি জেসি আক্তারের জায়ের কাছ থেকে চাবি নিয়ে গেইট খুলে ভেতরে প্রবেশ করে দেখেন বিল্ডিংয়ের দরজা বন্ধ।
পরে জেসমিন আক্তার বিষয়টি আশপাশের লোকজনকে জানালে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে রুমের মেঝেতে মা জেকি আক্তার ও বড় ছেলে মাহিনের লাশ এবং পাশের বাথরুমে ছোট ছেলে মহিনের লাশ দেখতে পায়। এ সময় প্রবাসী শাহআলমের ৭ মাস বয়সী কন্যা সন্তান ওজিহাকে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, আমরা জেসি আক্তার ও তার বড় ছেলে মাহিনের রক্তাক্ত লাশ মেঝে থেকে ও ছোট ছেলে মহিনের লাশ বাথরুম থেকে উদ্ধার করে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে তাদেরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে ভোরের দিকে পূর্ব পরিচিত অথবা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। তবে বাড়ি থেকে কোন মালামাল খোয়া যায়নি। তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা তিনজনকে আটক করেছি। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত করার জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন ) মোঃ ইকবাল হোসাইন বলেন, আমরা বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে ঘটনার তদন্তকাজ করছি। রহস্য উদঘাটনে বাঞ্ছারামপুর থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ, পিবিআই, সিআইডিসহ আইন-শৃংখলাবাহিনীর একাধিক টিম কাজ শুরু করেছে।