অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, তার সরকার একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে (বিসিজি) অতি-আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি, জাহাজ ও হেলিকপ্টার দিয়ে সাজিয়ে একটি আধুনিক ও ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপান্তরিত করছে।
তিনি বলেন, ‘কেউ পিছিয়ে থাকবে না। কোস্ট গার্ড বাহিনীতে আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক জাহাজ, হেলিকপ্টার এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করবে। ’
আজ ১০ মার্চ রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওস্থ কোস্ট গার্ড সদরদপ্তরে ‘২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং কোস্ট গার্ড দিবস ২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কোস্টগার্ডের অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়াতে ভি-স্যাটনেট কমিউনিকেশন সিস্টেম এবং ছয়টি স্টেশন ও আউটপোস্ট এবং তাদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে খুব শিগগিরই এ বাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির জাহাজ, মেরিটাইম সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম, হোভারক্রাফট ও দ্রতুগতিসম্পন্ন বোট।
পাশাপাশি সমুদ্র নির্ভর পেশায় নিয়োজিত জনসাধারণের ও নৌপথের নিরাপত্তায় কোস্টগার্ডের গভীর সমুদ্রে টহল উপযোগী আরও ৪টি ওপিভি, ২টি মেরিটাইম ভার্সন হেলিকপ্টার সংগ্রহের অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ভি-স্যাটনেট কমিউনিকেশন সিস্টেমের অন্তর্ভুক্তি যা কোস্ট গার্ডকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এর যোগাযোগ এবং অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমি দুটি হেলিকপ্টার উইংসহ এভিয়েশন উইং গঠনের নীতিগত অনুমোদন প্রদান করেছি, যা সংযোজনের মাধ্যমে কোস্ট গার্ডকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডে ৪টি অফশোর প্যাট্রল ভেসেলসহ বিভিন্ন আকারের ১৬টি জাহাজ ও ১৩৮টি বোট কোস্ট গার্ড বহরে সংযোজিত হয়েছে। গভীর সমুদ্রে কোস্ট গার্ড-এর যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- ১’ এর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য আজ কোস্ট গার্ডের নবসংযোজিত ভিস্যাটনেট সিস্টেম ও ঢাকা জোন, পূর্ব জোন এবং দক্ষিণ জোনের বিভিন্ন ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জন্য ৯টি প্রতিস্থাপক জাহাজ নির্মাণের লক্ষ্যে একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ১৯৯৫ সালে স্বল্প পরিসরে যাত্রা শুরু করে দীর্ঘ ২৯ বছরে আজ একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, ১৯৯৪ সালে জাতীয় সংসদের তৎকালীন বিরোধীদল আওয়ামী লীগের আনীত বিলের কারণেই ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড’ একটি আধা-সামরিক বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এরপর ১৯৯৬ সালে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকার কোস্ট গার্ডের বিভিন্ন জোনের জন্য ভূমি বরাদ্দ, অবকাঠামো নির্মাণ এবং নতুন নতুন জলযান সংযোজনের মাধ্যমে কোস্ট গার্ডের অগ্রযাত্রায় বিশেষ অবদান রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের উপকূলীয় এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোস্ট গার্ড-এর স্টেশন ও আউটপোস্টসমূহে কোস্টাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টারসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন আকারের জলযান নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কোস্ট গার্ড-এর জোনসমূহে কর্মরত সদস্যগণের বাসস্থান, ব্যারাক ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পটুয়াখালী অঞ্চলে নিজস্ব প্রশিক্ষণ বেইস তৈরির মাধ্যমে কোস্ট গার্ড-এর জনবলের প্রশিক্ষণ সক্ষমতাও বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা পরবর্তীতে তিনি নিজেই ‘বিসিজি বেইস অগ্রযাত্রা’ নামে কমিশন করেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড-এর জন্য ইনশোর প্যাট্রল ভেসেল, ফ্লোটিং ক্রেন, ট্যাগ বোট এবং বিভিন্ন ধরনের হাইস্পিড বোট তৈরি করা হয়েছে। এ বাহিনীর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়ায় একটি ডকইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী যে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন জাহাজ ও সরঞ্জামের অন্তর্ভুক্তি এ বাহিনীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ বাহিনীর অধিকতর সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
অনলাইন ডেস্ক :
নতুন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ঢাকাসহ দেশের ১০ জেলায় । আজ ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।
জনা গেছে, গাজীপুরের ডিসি আনিসুর রহমানকে ঢাকার ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনকে রাঙ্গামাটির, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের একান্ত সচিব শাহ মোজাহিদ উদ্দিনকে বান্দরবানের, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের একান্ত সচিব মো. কায়ছারুল ইসলামকে টাঙ্গাইলের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত সচিব মু. আসাদুজ্জামানকে পাবনার, পানিসম্পদ উপমন্ত্রীর একান্ত সচিব আরিফুজ্জামানকে শরীয়তপুরের, অর্থবিভাগের উপসচিব সুরাইয়া জাহানকে লক্ষ্মীপুরের, দুর্যোগ ব্যবস্থা প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সচিব খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমানকে কুমিল্লার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তারকে ফেনীর ও বিদ্যুৎ বিভাগের উপসচিব আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামকে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
অনলাইন ডেস্ক :
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। একইসঙ্গে আইনটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের জন্য নয়, বরং সাইবার অপরাধ দমনের জন্য করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আজ ৩ মে বুধবার দুপুরে রাজধারীর ধানমন্ডি মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) হলরুমে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০২৩ উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজিত হয়।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় সম্পাদক পরিষদের দাবির প্রেক্ষিতে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না। এখন এই আইনে কেউ অভিযোগ করলেই মামলা নেওয়া হয় না। এটি প্রথমে পর্যবেক্ষণের জন্য আমাদের নির্ধারিত সেলে পাঠানো হয়। সেখানে বিষয়টি যুক্তিযুক্ত মনে হলে পরে এটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয় বা আদালতে পাঠানো হয়। মামলা হতে পারে এমন কিছু প্রতিষ্ঠিত না হলে গ্রেপ্তার থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ ভবিষ্যতে প্রণয়ন করা প্রত্যেক আইনে সাংবাদিকদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, অনলাইন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দায়িত্বশীলতার ঘাটতি রয়েছে। যার মাধ্যমে সাইবার অপরাধ সংগঠিত হতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সাইবার অপরাধ দমনে আইন রয়েছে। বাংলদেশেও এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয় তখন গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের কার্যকর পদক্ষেপের কারণে এখন আইনটির অপব্যবহার কমেছে। এটিকে আরও পরিশুদ্ধ করার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। আমরা একটা কমিটি গঠন করেছি, যাতে আইনটির সমস্যাগুলো সমাধান করে সকলের গ্রহণযোগ্য একটা আইন করা যায়।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের জন্য নয় দাবি করে আনিসুল হক বলেন, এ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে সাইবার অপরাধ দমনের জন্য। প্রধানমন্ত্রী কখনো সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করবেন না, তিনিও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চান। এখন ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্টের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। স্বাধীনতা না থাকলে এগুলো নিয়ে আলোচনায় যেতাম না। আইন হচ্ছে ডাটা প্রোটেক্ট করার জন্য, নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়। মুক্তগণমাধ্যম নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গিকারবদ্ধ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করার সময় মতামত নেওয়া হয়নি, সম্পাদক পরিষদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, আইনটি যখন করা হয় তখন তারা আমার সঙ্গে আলোচনা করতে আসে। যে পর্যায়ে আলোচনা করতে আসে তখন আইনটি সংসদে চলে যায়। কিন্তু স্ট্যান্ডিং কমিটিতে তারা তাদের বক্তব্য দিয়েছেন, তাদেরকে সে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তখন প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় সবাই আইনটির ব্যপারে ঐক্যমত ছিলেন। তাদের মতামত অনুযায়ী ২১ ধারায় শাস্তি কমানোর বিষয়টি গ্রহণ করা হয়, জামিনযোগ্য এবং অজামিনযোগ্যের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, আমি নিজ উদ্যোগে ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্টের বিষয়ে সকলের সঙ্গে আলোচনা করে যাব। প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট নিয়েও আলোচনা হবে। আমরা সবসময় আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রাখতে চাই, আলোচনা না করে কিছু হবে না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের চেষ্টা করা হবে। এ আইনে কারো অভিযোগ পর্যবেক্ষণের জন্য যে সেল করা হয়েছে সেটি আইসিটি মন্ত্রণালয় বা আইন মন্ত্রণালয়ে পাবেন না, সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাবেন।
স্বাধীন সাংবাদিকতা করার অধিকার সবার আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সত্য তুলে ধরার দায়িত্ব আপনাদের। প্রত্যেকটা জিনিসেরই দুইটা দিক থাকে, আপনারা দুটোই তুলে ধরবেন যাতে জনগণ বুঝে নিতে পারে।
মুক্তগণমাধ্যমের সূচকে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের নিচে অবস্থান করছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে নীর্ণায়কে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের নিচে থাকে, আমার বিষয়ে সেই নির্ণায়কের বিষয়েই সকলের প্রশ্ন থাকা উচিৎ।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় এ সময় আরো বক্তব্য দেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরিন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, ইউনাইটেড ন্যাশনস ইন বাংলাদেশের রেসিডেন্ট কোঅর্ডিনেটর জিউন লিউইস, ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের অফিসার ইন চার্জ সুজান ভিজ।
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের (বিজেএসসি) নিয়োগ পরীক্ষায় সহকারী জজ পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাতজন শিক্ষার্থী। সারাদেশে মোট ১০৪ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন।
কমিশন সচিবালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শরীফ এ এম রেজা জাকের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। তাদের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও।
সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী ফাতেমা জান্নাত, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের রুবাইয়া ইয়াসমিন, মারিয়া সুলতানা, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের সেলিনা শেলী, ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ফারজানা ইভা, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আরিফ হোসেন এবং আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আসাদুজ্জামান নুর।
সহকারী জজ পদে সুপারিশপ্রাপ্ত সেলিনা শেলী বলেন, এই অনুভূতি যে কেমন, সেটা আমি বুঝাতে পারব না। সব থেকে বড় বিষয় হলো আমার বাবা-মাকে হাসাতে পেরেছি। আশপাশের সবাই যখন আমাকে নিয়ে গর্ব করছে, তখন অত্যন্ত ভালো লাগছে।
বিচারক হওয়ার স্বপ্ন ছিল না আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মারিয়ার। কিন্তু ক্যাম্পাসে এসে অনেকের অনুপ্রেরণায় বিচারক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন এবং সফলও হয়েছেন তিনি।
মারিয়া বলেন, আমি চতুর্থ বর্ষের শেষের দিকে পড়াশোনা শুরু করেছিলাম। এই অর্জনে অনেকের অবদান রয়েছে। তাদের সহযোগিতা ছাড়া হয়তো এটা সম্ভব ছিল না। দোয়া রাখবেন যাতে জনগণের ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করতে পারি।
চলারপথে রিপোর্ট :
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে আন্তঃনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়েছে। উপজেলার হাসানপুর রেল স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনের পেছন থেকে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ধাক্কা দিলে ১৬ এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুই ট্রেনের সংঘর্ষে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে অন্তত অর্ধশত যাত্রী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, মালবাহী ট্রেনটি হাসানপুর স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল। এ সময় চট্টগ্রাম থেকে আসা সোনার বাংলা এক্সপ্রেস একই লাইনে ঢুকে পেছন থেকে মালবাহী ট্রেনটিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জসিম উদ্দিন বলেন, মালবাহী ট্রেনটিকে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ধাক্কা দিলে চারটি বগি মালবাহী কন্টেইনারের ওপর উঠে যায়। এ ছাড়া অন্য বগিগুলো লাইনচ্যুত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরাও জানান, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দেয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
খুবই নিস্তব্ধ ও সুনসান নীরব দুলালপুর গ্রামটি। লালমাটির ওপর তৈরি পাঁকা সড়ক দিয়ে ভেতরে ঢুকলেই দুই পাশে দেখা যায় হরেক রকমের বাগান। আর সেখানেই স্থানীয় আলমগীর ভূঞা গড়ে তুলেছেন চায়না থ্রি জাতের কমলার বাগান। বাগানজুড়ে ধরে আছে অনেক রঙিন কমলা। গত বছরও এ বাগানে প্রচুর কমলা ধরেছিল। দ্বিতীয়বারের মতো বাগানে কমলার বাম্পার ফলন হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম দুলালপুর। ২০১৯ সালে বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নে চায়না জাতের কমলা বাগানের যাত্রা শুরু হয়। প্রবাসফেরত আলমগীর ভূঞা এই এলাকায় সর্বপ্রথম চায়না থ্রি জাতের কমলার বাগান চাষের উদ্যোগ নেন। পরীক্ষামূলক চাষেই তিনি লাভবান হয়েছেন। ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে দুলালপুরের এই কমলা বাগান। বিভিন্ন হণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে আলমগীর ভূঞা ১৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করেছিলেন। কমলা বাগানে কর্মরত মো. রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, এ বছর আলমগীর ভূঞা দুই বিঘা জমিতে চায়না থ্রি জাতের কমলার চাষ করছেন। বিশাল এই বাগানে রয়েছে ১৭৫টি গাছ। তবে বাগানে পরিচর্যা ও যত্নে দিতে হয় অক্লান্ত শ্রম ও অর্থ। দুই বিঘা জমির কমলা চাষে খরচ পড়েছে সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। গত বছরের তুলনায় যত্ন ভালো হওয়ায় ও স্থানীয় কৃষি অফিসারের সঠিক পরামর্শে ১৬ খেকে ১৭ লাখ টাকার কমলা বিক্রি হবে বলে আশা রাসেলের। জানা যায়, আলমগীর মিয়ার চাষ দেখে অনেকেই এখন কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে বিষ্ণপুর গ্রামে এখন পাঁচজন কমলাচাষ করছেন। তারা হলেন—ছতুরপুর গ্রামের খোকন মিয়া, মহেশপুর গ্রামের নুরুজ্জামান, কালু মিয়া, ইগরতলির তৈয়বুর রহমান।
কথা হয় আরেক কমলা চাষি মহেশপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রবাস থেকে ফিরেছেন চার বছর আগে। এলাকায় ফিরেই চাষাবাদ শুরু করেন। গত মৌসুমে আলমগীর মিয়াকে দেখেই নতুন উদ্যোক্তা হয়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা খরচ করে তিন বিঘা জমিতে চায়না থ্রি জাতের রঙিন কমলা চাষ করেন। নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে ভালো মুনাফা হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন নুরুজ্জামান।
বাগানে প্রবেশ করলেই বাশের বেড়া দিয়ে বানানো হয়েছে একটি ছোট ঘর। তার পাশেই টেবিল চেয়ার ও মাপ নির্ধারণের জন্য ডিজিটাল মেশিন নিয়ে বসে রয়েছেন বাগানের কর্মরত লোকজন। পাশেই একটি বিশাল ঝুড়িতে রাখা আছে কমলা। বাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী অথবা কমলা নিতে আসা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেই ঝুড়িতে কমলাগুলো বাছাই করে রাখা হয়েছে। ব্যবসায়ী অথবা দর্শনার্থী সবার কাছ থেকে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় রঙিন কমলা। তবে অনেকেই আবার ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। সেই কমলাগুলো পাকাপোক্ত হওয়ার আগেই এমন দরে বিক্রি করছে। বাগানের ভেতর ঢুকতেই দেখা মিলে মনোমুগ্ধকর অপূর্ব দৃশ্য। বাগানজুড়ে ধরে আছে অনেক কমলা। প্রতিটি গাছের থোকায় থোকায় সবুজ পাতার ফাঁকে যেন রঙিন কমলাগুলো উঁকি দিচ্ছে।
বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল উদুদ জানান, বিজয়নগর কৃষিতে সম্ভাবনাময় একটি উপজেলা। এ উপজেলায় নানা সবজি ও ফলমূল আবাদ হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের লিচুর খ্যাতি পুরো দেশজুড়ে। কাঁঠাল, পেয়ারা, ড্রাগন, আম, আনারস, বড়ই, গ্রিন মাল্টা চাষ হচ্ছে। এরই মধ্যে চায়না কমলা চাষ শুরু হয়। বাণিজ্যিকভাবে নতুন করে কমলা চাষে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ৯ বিঘা জমিতে চায়না কমলা আবাদ করেছেন পাঁচজন কৃষক। এ বছর বিষ্ণপুর ইউনিয়নের এই পাঁচ বাগানে ২৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তবে আশা করি সেটি ছাড়িয়ে যাবে এবং সামনে কমলার বাগান আরও বাড়বে বলে কৃষি বিভাগ মনে করেন।
এদিকে কমলা বাগানগুলো এখন ভ্রমণের স্থান হিসেবে রূপ নিয়েছে। রঙিন কমলার স্বাদ নিতে ভ্রমণপিপাসুরা আসছেন প্রতিনিয়ত। বাগান পরিদর্শন শেষে টাটকা কমলা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে বাড়ি। কমলা বাগানের এমন দৃশ্য দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।
বাগানে ঘুরতে আসা এক দম্পতি জানান, ফেসবুকের ছবি দেখে বাগানে এসেছেন নিজের চার বছরের ছেলেকে নিয়ে। কমলা বাগান দেখে অনেকটাই মুগ্ধ হয়েছেন। এই বাগানের কমলা খেতে নাকি বেশ সুস্বাদু বলে জানান তিনি।