আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

জাতীয়, 25 March 2024, 798 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
‘পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত/ ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে/ নতুন নিশান উড়িয়ে/ দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক/ এই বাংলায় তোমাকে আসতেই হবে হে স্বাধীনতা।’ সত্যিই বাংলায় এসেছে সেই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। আর আজ বাঙালির সেই গৌরবদীপ্ত দিন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি।

banner

বাঙালি জাতির জীবনে ২৬ মার্চ দিনটি একই সঙ্গে গৌরব ও শোকের। বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকেরা শোষণ এবং ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধিকারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাঙালিরা। তারা ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীন করার শপথ গ্রহণ করে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে প্রতিটি বাঙালির মনে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা।

প্রতিবছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে দিবসটি উদযাপন করে গোটা জাতি। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী দেশের বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধা জানায় মহান স্বাধীনতার রূপকার বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের প্রতি।

এই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে পুরো বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালি। ১৯৪৮, বায়ান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টির পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে কেঁপে উঠেছিল জেনারেল আইয়ুবের গদি। জনতার সাগরে সৃষ্টি হয়েছিল তাল স্রোতধারা। ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত ছিল গ্রাম-শহর, জনপদ। শত ষড়যন্ত্র ও সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্তরের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।

কিন্তু বাঙালির হাতে শাসনভার দেয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। পর্দার আড়ালে প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞের ‘নীলনকশা’।

কিন্তু ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণেই পাওয়া যায় মুক্তির দিকনির্দেশনা। আক্ষরিক অর্থেই তখন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। সেই প্রবল প্রদীপ্ত আন্দোলনের জোয়ারে ধীরে ধীরে বাঙালির হৃদয়ে আঁকা হয় একটি লাল-সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ছবি।

কিন্তু বাঙালির আবেগ, সংগ্রাম ও মুক্তির আকাক্সক্ষাকে নির্মূল করতে অস্ত্র হাতে নামে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু করে নিষ্ঠুর গণহত্যা।

সেই কালরাত্রি থেকেই শুরু হয় মৃত্যু, ধ্বংস, আগুন আর আর্তনাদ, পৈশাচিক বর্বরতা। কিন্তু ওই ঘোরতর অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য। ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম অর্জন- মহান স্বাধীনতা।

Leave a Reply

আখাউড়ায় বিজয় ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিক্সার চালকসহ…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজি চালিত Read more

জীবিত নবজাতক দাফনের চেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক : চাঁদপুর শহরের পৌর কবরস্থানে অবিশ্বাস্য ও হৃদয়বিদারক Read more

নবীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে প্রাইভেটকার ও ট্রাক্টরের সঙ্গে Read more

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী : ভূমি অধিগ্রহণে অন্যায্য ক্ষতিপূরণ বন্ধের নির্দেশ

জাতীয়, 5 September 2023, 1077 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
উন্নয়ন প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে অন্যায্য ক্ষতিপূরণের পথ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, প্রকল্প হওয়ার খবরে কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাতারাতি স্থাপনা নির্মাণ করে অন্যায্য ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়। এ ধরনের অপচেষ্টা রোধে প্রাথমিক পর্যায়েই প্রকল্প এলাকার ছবি তুলে রাখতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।

banner

আজ ৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন নির্দেশনা এবং একনেকের অন্যান্য প্রসঙ্গে বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয়ের সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে ভূমি অধিগ্রহণ। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই ব্যয় হয় এ খাতে। এর মধ্যে আবার ভূমি মালিকদের কেউ কেউ বেশি ক্ষতিপূরণের লোভে প্রকল্প এলাকায় রাতারাতি বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রকল্পের নকশা প্রণয়নে দুর্বলতা নিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। নড়াইলে কালিয়া সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার পর নকশায় ভুল ধরা পড়ে। সেতুর নিচ দিয়ে নৌকা চলাচল করতে পারে না। জনগণের টাকা গেল, সময় নষ্ট হলো। এর পরিপ্রেক্ষিতে সব প্রকল্প নির্মাণ শুরুর আগেই সঠিক নকশা করতে হবে।

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হওয়া সেতুটির জন্য নতুন করে আরও ৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদন করেছে একনেক। প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ৭৫ কোটি টাকা। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের জুনে। এখন ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর অন্য নির্দেশনা প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সৌরবিদ্যুতের প্যানেল নির্মাণে যথাযথ উচ্চতা রক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যাতে প্যানেলের নিচে জায়গা থেকে যেখানে পর্যাপ্ত পানি ও বাতাস চলাচল করতে পারে। ফসল ফলানো যায়।

অসমাপ্ত প্রকল্প উদ্বোধন এবং নতুন প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের নির্বাচনী ভাবনা রয়েছে কিনা– সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এখন যেসব প্রকল্প চালু হয়েছে, সেগুলো ছয় মাস-এক বছর আগের প্রকল্প। প্রকল্পের যে অংশ ব্যবহার উপযোগী হয়েছে, সে অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে। মানুষ ব্যবহার করে খুশি।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, বর্তমান সরকার রাজনৈতিক। ভোট হচ্ছে গণতন্ত্রের ভিত্তি। সরকার এটি চাইলে দোষের কিছু নয়। তবে নির্বাচন সামনে রেখে কোনো প্রকল্প নেওয়া হয়নি। এখন যেসব প্রকল্প উদ্বোধন হচ্ছে, এগুলো আরও আগেই শেষ হওয়ার কথা ছিল।

একনেকে বিভিন্ন খাতের মোট ১৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১০টি নতুন, বাকি সাতটি চলমান প্রকল্পের সংশোধনী। এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা। এ ব্যয়ের মধ্যে ২ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা বিদেশি ঋণ, বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর নামমাত্র ১৪ কোটি এবং বাকি ১০ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব জোগান। এ ছাড়া দুটি প্রকল্পের সময় বাড়ানো হয়েছে এক বছর করে। নতুন করে ব্যয় বাড়ানো হয়নি।

অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে ধীরাশ্রম আইসিডি নির্মাণে জমি অধিগ্রহণসহ পুবাইল ধীরাশ্রম রেল লিঙ্ক নির্মাণে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পটির সম্পূর্ণ অর্থই সরকারের নিজস্ব জোগান থেকে দেওয়া হচ্ছে। আগামী অক্টোবরে প্রকল্পটির কাজ শুরু হবে। শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের অক্টোবরে।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের এ প্রকল্প ২০২৭ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা। মঙ্গলবার একনেকে অনুমোদিত তৃতীয় সর্বোচ্চ বড় ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ প্রকল্পে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। এ প্রকল্পও স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের। আগামী মাসে শুরু হয়ে ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

আগামীকাল ডিসেম্বর মাসের টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

জাতীয়, 5 December 2023, 918 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রতি মাসের বিক্রয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ডিসেম্বর মাসের জন্য ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আগামীকাল থেকে বিক্রি শুরু করতে যাচ্ছে। একইসাথে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীর মাঝে স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু হচ্ছে।

banner

আগামীকাল বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনারের কার্যালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এই কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।

উল্লেখ্য, সারা দেশে এক কোটি নিম্ন-আয়ের মানুষ টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডধারী। গত ৯ নভেম্বর টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডধারীর মাঝে স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু হয়। আগামীকাল থেকে বিতরণ করা হবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায়। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য জায়গায় টিসিবির স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে।

এদিকে ডিসেম্বর মাসে টিসিবির কার্ডধারী একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল অথবা কুঁড়ার (রাইস ব্র্যান) তেল, পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি মসুর ডাল, দুই কেজি পেঁয়াজ ও এক কেজি চিনি কিনতে পারবেন। প্রতি লিটার সয়াবিন বা কুঁড়ার তেলের দাম রাখা হবে ১০০ টাকা। প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা, মসুর ডাল ৬০ টাকা এবং প্রাপ্যতা সাপেক্ষে প্রতি কেজি আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৫০ টাকা ও চিনি ৭০ টাকা দামে বিক্রি করবে টিসিবি।

কার্ডধারীরা নিজ নিজ এলাকার পরিবেশকদের দোকান বা নির্ধারিত জায়গা থেকে পণ্য নিতে পারবেন।বাসস

হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

জাতীয়, 13 June 2023, 1271 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
মেহেরপুরের গাংনীর কাজিপুর গ্রামের কৃষক কাজিমুদ্দীন ওরফে কাজু হত্যা মামলায় শরিফুল ইসলাম নামে একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ ১৩ জুন মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ শহিদুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। শরিফুল ইসলাম (৪২) গাংনীর কাজিপুর গ্রামের রোমজিতের ছেলে। তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

banner

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৬ মে রাত আটটার দিকে গ্রামের একটি চায়ের দোকানে চায়ের বিল দেয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ শরিফুল ও তার লোকজন পিটিয়ে হত্যা করে কৃষক কাজিমুদ্দীনকে। ওই রাত্রেই কাজিমুদ্দীনের ছেলে আবু সাঈদ দফাদার বাদী হয়ে তিন নারীসহ ১০ জনকে আসামি করে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় শরিফুল ইসলামকে প্রধান আসামি করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে চার্জশিট প্রদান করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন।

মামলায় ৭ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও বাদী বিবাদী পক্ষের আইজীবীদের যুক্তি তর্ক শেষে আসামি শরিফুলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছর কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। মামলায় বাদী সরকারি পক্ষের কৌশুলী ছিলেন পল­ব ভট্টাচার্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন কেএম শফিকুল আলম।

বিগত ১৭ বছর প্রতিবেশী দেশ ভারত নানানভাবে দেশকে শোষণ করেছে

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, রাজনীতি, 22 December 2024, 855 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইলিয়াস হোসেন মাতব্বর বলেছেন, গত ১৭ বছর স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা বিভিন্ন অন্যায়ের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিকে কলুষিত করেছে। গুম, খুনের মাধ্যমে ভীতি কায়েম করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ছাত্র সমাজকে পিছপা করতে পারেনি। এই ছাত্র সমাজ তাদের রক্তের বিনিময়ে শেখ হাসিনাকে গদি ছাড়তে বাধ্য করেছে।

banner

২২ ডিসেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গনে বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজ জেলা শাখা আয়োজিত ছাত্র সমাগমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইলিয়াস হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক সংকটকালে বিএনপির সৃষ্টি হয়। যা বর্তমানে বৃহৎ দল। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র সমাজের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার পর দেশের সবচেয়ে বৃহৎ দল হবে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি। সেদিকে লক্ষ্য রেখে দলীয় নেতাকর্মীদের কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছর প্রতিবেশী দেশ ভারত নানানভাবে দেশকে শোষণ করেছে। এখন তারা চট্টগ্রামকে তাদের অংশের সাথে যুক্ত করতে চায়। তাদের উদ্দেশে বলব, ভারতীয় সেনাবাহিনীকে প্রতিহত করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনগণই যথেষ্ট। সবশেষে বিজেপির এই নেতা বলেন, তরুণ প্রজন্ম যেহেতু বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির নেতৃত্বের হাল ধরেছে, আগামীতে (বিজেপি) সংসদ দখল করবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সদস্য শাহরিয়ার হোসাইন আরিফ ও জেলা জাতীয় ছাত্র সমাজের জেলা শাখার প্রধান সংগঠক মেহেদী মোহাম্মদ নিশাদের পরিচালনায় প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় যুব সংহতি কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ, বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আলম বাঁধন ও আবিদ চৌধুরী। ছাত্র সমাগম উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে জাতীয় ছাত্র সমাজের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শীতের দাপটে গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় বেড়েছে

জাতীয়, 13 January 2024, 954 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহ চলছে । কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু সারা দেশের মানুষ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্রমেই নিচের দিকে নামছে পারদের কাঁটা। ফলশ্রুতিতে অধিকাংশ এলাকায়ই সূর্যের দেখা নেই কদিন থেকে। অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে রাজধানীতেও।

banner

কলকারখানা-গাড়ির ধোঁয়া, মানুষের কর্মচাঞ্চল্য, কোলাহল সবকিছুকে পেছনে ফেলে সকাল-সন্ধ্যা কুয়াশায় চাদরে ঢাকা পড়ছে ঢাকা শহর। তবে সুসংবাদ নেই। চলমান এই শৈত্যপ্রবাহ আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে শীত বাড়াতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এমন অবস্থায় শীত নিবারণে রাজধানীজুড়ে চাহিদা বেড়েছে গরম কাপড়ের। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন বিপণী বিতান, শপিং মল থেকে শুরু করে ফুটপাতে বেচাকেনা হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের শীতের কাপড়।

আজ ১৩ জানুয়ারি শনিবার দুপুরে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোডসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মিরপুর রোডের গোল্ডেন গেট শপিং সেন্টার, খান প্লাজা, কাদের অর্কেড, প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টার, বাইতুল মামুর জামে মসজিদ মার্কেট, বদরুদ্দোজা সুপার মার্কেট, নেহার ভবন, নুরজাহান সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নূর ম্যানশন সুপার মার্কেট, নিউ সুপার মার্কেটসহ সবগুলো মার্কেটেই শীতের কাপড়ের ব্যাপক সমাহার। ব্যবসায়ী ও দোকানিরা ক্রেতাদের চাহিদা আর রুচির কথা মাথায় রেখে পসরা সাজিয়েছেন এসব পোশাকের। এরমধ্যে জ্যাকেট, সোয়েটার, হুডি, ফুল স্লিভ টি-শার্ট, ব্লেজার, স্লিভলেস কোট, কটি, জিন্সের মোটা শার্ট-জ্যাকেট, ডেনিম শার্ট, উইন্টার কোট, উলের তৈরি শাল, খাদির শাল, মাফলার, কানটুপি, হাত-পায়ের মোজা অন্যতম।

ব্যবসায়ীরা জানান, শীতের অধিকাংশ ক্রেতাই তরুণ-তরুণী। সেজন্য তাদের পছন্দের কথা চিন্তা করে দোকানে ক্যাজুয়াল ফ্যাশনের কালেকশনই বেশি রাখা হয়েছে। এরমধ্যে এবার জ্যাকেটের চাহিদা বেড়েছে। এরমধ্যে জেন্টস লেদার জ্যাকেট, জেন্টস ফুল স্লিভ জ্যাকেট, লেডিস ফিট ফুল স্লিভ জ্যাকেট, জেনস কটন জ্যাকেট, ফুল স্লিভ জেন্টস ক্যাজুয়াল জ্যাকেট, জেন্টস হুডি জ্যাকেট অন্যতম। নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের কথা মাথায় রেখে এসব জ্যাকেটের প্যাটার্নেও এখন আনা হয়েছে বেশ নতুনত্ব। সিনথেটিক এবং মিক্সড লেদারের জ্যাকেটও রয়েছে দোকানগুলোতে। এছাড়াও ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন প্যাটার্ন স্টাইল এবং গুণগত মানের কাপড় দেখা গেছে দোকানগুলোতে।

চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী বাপ্পি হাওলাদার বলেন, নিউমার্কেটসহ আশপাশের এলাকার অধিকাংশ ব্যবসায়ীরাই মৌসুমভিত্তিক কাপড়ের ব্যবসা করেন। সে অনুযায়ী এখন অধিকাংশ দোকানেই শীতের পোশাক। তবে এক্ষেত্রে আমরা তরুণ-তরুণীদের পছন্দকে প্রাধান্য দেই। কারণ বয়স্ক মানুষজন একটি শীতের কাপড়ের একাধিক বছর চালালেও তরুণ-তরুণীদের প্রতি বছর নতুন কাপড় কেনার প্রবণতা বেশি। সেজন্য আমরা তাদের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই শীতের পোশাক সংগ্রহ করে থাকি। এবছর বিক্রি খুবই ভালো হচ্ছে। সম্প্রতি শীত বাড়ার কারণে দোকানে ক্রেতার পরিমাণও বেড়েছে। সবমিলিয়ে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার শীতের পোশাকের বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্টির কথাও জানান তিনি।

রবিউল হুসাইন নামের আরেক বিক্রেতা শীতের পোশাকের দাম সম্পর্কে বলেন, গুণগত মান এবং ব্র্যান্ডের উপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারিত হচ্ছে। দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি ভালো কোয়ালিটির জ্যাকেট ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আবার এক্সপোর্ট কোয়ালিটি কিংবা চায়না জ্যাকেট দেড় থেকে আড়াইহাজার টাকায় বিক্রি করছি। লেদার জ্যাকেটের দাম নির্ধারিত হচ্ছে গুণগত মানের উপর। সোয়েটার এবং হুডি ৮শ টাকা থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করছি। মূলত, এবছর টেক্সটাইল এবং সব ধরনের গার্মেন্টস পণ্যের উপাদানের দাম বাড়ার কারণে এর প্রভাব খুচরা বাজারে পড়েছে। তবে বেশি বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের কাছে স্বল্প লাভেই বিক্রি করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্ট ফুটপাতের বিক্রেতারাও। মেয়েদের ওলের ওড়না, জ্যাকেট, চাদর থেকে শুরু করে ছোট বাচ্চাদের বিভিন্ন শীতের পোশাকের পসরা নিউমার্কেটের ফুটপাতজুড়ে। দামেও কিছুটা কমের কারণে সেসব দোকান ঘিরে ভিড় করছেন মানুষজন। অনেক দোকানে আবার চাদর, হুডি, হাতাওয়ালা টিশার্ট তাল মিলিয়ে ‘বাইচ্ছা লন, তিনশ’, ‘দেইখা লন, তিনশ’ এভাবে ডেকে বিক্রি করতে দেখা যায়।

আব্দুল ওয়াহাব নামের ফুটপাতের এক বিক্রেতা বলেন, বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। কমদামে ভালো কাপড় দিচ্ছি। আমাদের তো দোকান ভাড়া দিতে হয়না। কর্মচারী বিল নাই। সেজন্য অল্প লাভেই মানুষের কাছে বিক্রি করতে পারছি। আজকে ছুটির দিন হওয়ার কারণে সকাল থেকেই ক্রেতা সমাগম বেশি।

আবার নিউমার্কেটের ভেতরে দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, মানুষজন বেশি কেনাকাটা করছেন তাদের এলাকায় থাকা আত্মীয় স্বজনদের কাছে পাঠানোর জন্য। বাড়ির ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্কদের জন্য শাল, মাফলার, হাত-পায়ের মোজার ক্রেতার পরিমাণ বেশি। ভেতরের দোকানগুলোতে শাল চাদর মানভেদে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা, মাফলার ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে তিনশো টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার বাচ্চাদের পোশাকও গুণগত মান ও বয়সভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে।

কেনাকাটা করতে আসা তাসলিমা বেগম বলেন, আমার বাড়ি গাইবান্ধা। সেখানে প্রচুর শীত পড়েছে। বাবা-মায়ের জন্য শীতের পোশাক আগেই পাঠিয়েছি। তারপরও এখন আবার মোটা খাদি কাপড়ের শাল চাদর, মাফলার এবং হাত পায়ের মোজা বেশি করে কিনে বাড়িতে পাঠাচ্ছি। দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশিই। তারপরও প্রয়োজনের তাগিদে কেনাকাটা তো করতেই হচ্ছে।

ইউসুফ মিয়া নামের আরেকটা ক্রেতা বলেন, শীত একটু বেশি পড়েছে। সেজন্য সবাই হুমড়ি খেয়ে কেনাকাটা করছে। ক্রেতা যেহেতু বেশি তাই দোকানিরা দাম একটু বেশি চাইছে। তবে নিউমার্কেটের ফুটপাতে সাশ্রয়ী মূল্যে শীতের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। আর মার্কেটগুলোতে দাম কিছুটা বেশি। দেখেশুনে কেনাকাটা করতে হচ্ছে।

কম্বল-লেপের বিকল্প হিসেবে চাহিদা বেড়েছে কম্ফোর্টারের

শীতে আরামদায়ক ঘুমের জন্য উঞ্চতা বৃদ্ধিতে বর্তমানে সবার কাছে পরিচিতি লাভ করেছে কম্ফোর্টার। লেপ কিংবা কম্বলের তুলনায় দ্রুত উষ্ণতা পেতে এর জুড়ি নেই। তাইতো কম্বল ও লেপের তুলনায় এখন চাহিদা বেড়েছে কম্ফোর্টারের। আবার বিদেশি কম্ফোর্টারের পাশাপাশি দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কম্ফোর্টার তৈরি করে স্থানীয়ভাবে বাজারজাত করার কারণে দামও হাতের নাগালে রয়েছে। কম্ফোর্টার তৈরিতে এগিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানিও। তাই স্বল্প দামে ভালো মানের কম্ফোর্টারের দিকে ঝুঁকেছেন মানুষজন।

বিক্রেতারা জানান, অনলাইনে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার কারণে মানুষ এখন দোকানে এসেই কম্ফোর্টার খুঁজেন। স্থানীয়ভাবে তৈরি ফাইবারের এসব কম্ফোর্টার সিঙ্গেল, সেমি ডাবল ও ডাবল হিসেবে দাম ঠিক করা হয়। আবার কম্ফোর্টারের পুরুত্বের ওপরও নির্ভর করে গুণগত মান।

নীলক্ষেত সিটি কর্পোরেশন মার্কেটের বেডশিট ব্যবসায়ী ইলিয়াস খান বলেন, কম্বল ও লেপের তুলনায় কম্ফোর্টারের ওজন একেবারেই হালকা। তবে এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো দ্রুততম সময়ে উষ্ণতা পাওয়া যায়। আমাদের দেশীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ড যেমন কমফি, বেক্সি ফেব্রিকসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কম্ফোর্টার তৈরি করছে। এসব কম্ফোর্টার আকারভেদে এগারোশ টাকা থেকে আড়াইহাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও কোরিয়ান, চায়নাসহ অন্যান্য বিদেশি কম্ফোর্টার সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইসঙ্গে কম্বলের বেচাকেনা আহামরি না হলেও অন্যান্য বছরের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান তিনি।