চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে ড্রেজার দিয়ে অতিরিক্ত বালু উত্তোলন ও অবৈধভাবে নদীর পাড় থেকে মাটি কাটার দায়ে ৫ লাখ টাকা জরিমানা ও তিনজনকে ৬ মাস করে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার দুপুরে উপজেলার জাফরাবাদ ও চর মানিকনগর এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে সাজা ও জরিমানা প্রদান করেন নবীনগর ইউএনও তানভীর ফরহাদ শামীম।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকারী নবীনগর ইউএনও তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ এলাকায় সরকার নির্ধারিত ড্রেজার মেশিনের চেয়ে অধিক ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় নিয়ম বহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলন করায় দায়ে একজনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমান আদালত বালু উত্তোলন করার দায়ে ইজারাদারের প্রতিনিধি সাদেক মিয়াকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি আরো জানান, আরেক অভিযানে উপজেলার চর মানিকনগর এলাকার মেঘনা নদীর পাড়ে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর পাড় থেকে মাটি কাটার সময় বাদশা মিয়া, জসিম উদ্দিন ও ইকবাল হোসেনকে আটক করা হয়। পরে তাদের তিনজনকে ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে অবৈধভাবে ডোবা ভরাটের দায়ে একজনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের জালশুকা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নবীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা জাহান। তিনি জানান, উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় একটি চক্র অবৈধভাবে ফসলি জমি খননযন্ত্র দিয়ে কেটে বালু উত্তোলন করছেন ও খাল-ডোবা ভরাট করছেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ সময় বড়াইল ইউনিয়নের জালশুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে সরকারি খালের অংশ ও মালিকানাধীন ডোবা অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে ভরাট করার সময় শফিক মিয়া নামে একজনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে শফিক মিয়াকে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি ড্রেজার মেশিনের পাইপসমূহ জনস্মুখে বিনষ্ট করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, পৃথক আরেক অভিযানে উপজেলার গোসাইপুর ইউনিয়নের গোসাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে ড্রেজার দিয়ে বালু এনে ফসলি জমি ভরাট করতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলে কাউকে না পাওয়ায় জনসম্মূখে পাইপসমূহ বিনষ্ট করা হয়। ভবিষ্যতে আর যদি কেউ ভরাট কাজ করে তবে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে মামলা করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। জনস্বার্থে ভ্রাম্যমাণ আদালদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। অভিযান পরিচালনার সময় ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা এস এম রাসেল মাহমুদ ও নবীনগর থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে ব্রাহ্মণহাতা (নারুই) গ্রামে মাটি কাটার ভেকু দিয়ে মাটি ভরাটের সময় তার ছিড়ে একজনের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সকালে ব্রাহ্মণহাতা (নারুই) গ্রামের পশ্চিম পাড়ার কবরস্থানে মাটি কাটার সময় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাফাল মিয়া ব্রাহ্মণহাতা (নারুই) পশ্চিম পাড়ার মৃতু ফয়েজ মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, বেশ কয়েকদিন যাবত ভেকু দিয়ে কবরস্থানের মাটি ভরাটের কাজ করা হচ্ছিল।
আজ ১৮ মে শনিবার সকালে কবরস্থানের মাটির কাজ করার সময় ভেকুতে লেগে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটির সার্ভিস তার ছিড়ে মাটিতে পরে যায়। কিছুক্ষণ পর সাফাল মিয়া কবরস্থানে গেলে ঐ তারে লেগে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুব আলম বলেন, বৈদ্যুতিক তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজন মারা গেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
গ্রামবাংলায় গ্রীষ্মকালে যে বনফুলটি বেশি চোখে পড়ে, সেটি হল- বরুণ গাছের ফুল। গাছ ভরা অফুরন্ত প্রস্ফুটিত এ ফুল প্রকৃতিতে এক অনাবিল উচ্ছ্বাস এনে দেয়। বরুণকে নবীনগরের আঞ্চলিক ভাষায় বলে বন্না ফুল। গ্রামের শিশুরা বরুণ ফুল ও ফল খেলার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে। এখন বরুণ ফুল ফোটার সময়, এ সময় গ্রামে গেলে নয়নাভিরাম বরুণ ফুলের নান্দনিক সৌন্দর্যে বিমোহিত না হয়ে উপায় নাই। বরুণের বৈজ্ঞানিক নাম-Crateva religiosa. ইংরেজি-sacred garlic pear এবং temple plant . এটি Crateva গণের একটি ফুল। এদের অন্য নাম হল- বালাই লামক, অবিয়ুচ, বন্না, এবং বিদাসি। এটি জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং কতিপয় প্রজাতি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের স্থানীয় গাছ। বাংলাদেশের মানুষ অতীতকালে ফল পাকাতে এই গাছের পাতা ব্যবহার করতেন। বর্তমানে ফল পাকাতে ক্ষতিকারক ক্যালসিয়াম কার্বাইডের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এই গাছের কদর এখন নেই। বর্ষায় বরুণের ফল ঝুলে থাকতে দেখা যায়, ফল দেখতে কদবেলের মত। গাছ মাঝারি ধরনের এবং প্রচুর ডালপালা যুক্ত। বাকল ছাই রঙের মধ্যে সাদা সাদা ফোঁটা যুক্ত। পাতা যৌগিক, তিনটি পত্রক একক বোঁটায় জন্মে। ফুল চৈত্র-বৈশাখ মাসে ফুটে। ফুলের পাপড়ি ঘিয়ে রঙের, পুংকেশর দেখতে অনেকটা বিড়ালের গোঁফের মতো। মাঘ ফাগুনে পাতা ঝরে যায়, পূর্ণ প্রস্ফুটিত বরুণ গাছ বড়ই দৃষ্টিনন্দন। হাজারো ফুলের মাঝে নিচু জলাভূমিতে বসন্তে স্নিগ্ধতা ছড়ায় বরুণ ফুল। বরুণ ভাটি এলাকায় বেশি জন্মায়, নবীনগরের যে গ্রাম গুলো পানিতে তলিয়ে যায় সে গ্রাম গুলিতে অনেকটা অনাদর অবহেলায় আজ ও টিকে আছে বরুণ গাছ।
বরুণের ভেষজ গুণ :- অর্শরোগীরা রোগে খুব কষ্ট পেলে তিলের তেলে মাখানো বরুণ পাতা জলে সিদ্ধ করে ওই জলে গোসল করলে অর্শ রোগের ব্যথা-বেদনা দূর হয়। এর পাতা চর্মরোগ, ব্যথা, বাত নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। শিকড়ের বাকলের নির্যাস গ্যাস্ট্রিক রোগে ব্যবহার করা হয়। কাঁচা ফল রান্না করে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। শ্রীলঙ্কায় বাতের রোগে বরুণ পাতা ব্যবহৃত হয়। খাওয়ার আগে বরুণের মুকুল একটু লবণের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ক্ষুধা বাড়ে। পিত্তপাথরের রোগে ১০ গ্রাম বরুণের বাকল কেটে ৪ কাপ জলে সিদ্ধ করে অর্ধেক অবস্থায় নামিয়ে সকাল-বিকাল সেবন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। মেয়েদের মুখের মেছতা দূর করতেও বরুণ বেশ উপকারী। এ ক্ষেত্রে বরুণ বাকল ছাগলের দুধে মিশিয়ে দৈনিক একবার করে মুখের কাল দাগে লাগালে দাগ ধীরে ধীরে দূর হয়ে যায়। যাদের শরীরের গাঁটে গাঁটে বাতের ব্যথা, এমনকি পায়ের তলাতেও ব্যথা ও ফোলা, তারা শুষ্ক বরুণ পাতা (৫-৭ গ্রাম) ৩ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে আনুমানিক ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে পানিটা আধা গ্রাম শুষ্ক আদাচূর্ণের সঙ্গে মিশিয়ে সকালে ও বিকালে খেলে ব্যথা ও ফোলা দুটোই কমে যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ১১ মামলার আসামী ইব্রাহিম মিয়াকে যৌথ বাহিনীর সহায়তায় গ্রেফতার করেছে নবীনগর থানা পুলিশ। গতকাল ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর পৌর এলাকার নারায়ণপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ইব্রাহিম নবীনগর পৌর এলাকার খোরশেদ মিয়ার ছেলে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর জানান, গোপান সংবাদের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করে নবীনগর পৌর এলাকার নারায়নপুর নিজ বাড়ী থেকে ১১ মামলার আসামী ও শীর্ষ সস্ত্রাসী ইব্রাহিম মিয়াকে গ্রেফতার করেন। আজ ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে পুকুর থেকে শিশু হাজেরার মরদেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টায় রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। শিশুটির মা রুমা বেগম নিজেই তার সন্তানকে মধ্যরাতে পুকুরে ফেলে দেন। পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে এ কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
আজ ২২ অক্টোবর রবিবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পরই পারিপার্শ্বিক অবস্থায় নিহত শিশুর মা রুমা বেগমকে সন্দেহ হচ্ছিল। তাই আমরা তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রুমা তার সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
সিরাজুল ইসলাম আরো বলেন, শিশু হাজেরার মরদেহ উদ্ধারের পর রুমা জানান শুক্রবার সন্ধ্যায় দুই সন্তান নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত ২টায় ঘুম থেকে উঠে টয়লেটে যান রুমা। ঘরে ফিরে আবারো ঘুমিয়ে যান। ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখেন ঘরের দরজা খোলা, পাশে হাজেরা নেই। কীভাবে পুকুরে গেলো জানেন না রুমা। কিন্তু তার এ বক্তব্য ছিল সম্পূর্ণ বানোয়াট।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, তবে জিজ্ঞাসাবাদে রুমা জানান তার স্বামী দেড়বছর আগে আরব আমিরাতের দুবাই গিয়েছেন। তাদের দুটি মেয়ে আছে। বড় মেয়ের বয়স ছয় বছর ও আরেকটির চার মাস বয়স। একান্নবর্তী পরিবারের সব কাজ করতে হয় রুমাকে একাই। এ নিয়ে শাশুড়ি ও নন্দের অনেক কথাও শুনতে হয়। তাই সন্তান হাজেরার সঠিকভাবে যত্নও নিতে পারছিলেন না। এসব নিয়ে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তাই শুক্রবার মধ্যরাতে সন্তান হাজেরাকে বাড়ির কাছাকাছি একটি পুকুরে ফেলে দিয়ে আসেন।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, রুমা বেগমকে রবিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। এর পেছনে যদি অন্য কিছু থেকে থাকে আশা করছি তদন্তে তা বের হয়ে আসবে।