চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন ও নারী মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। গতকাল সোমবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রার্থীরা রির্টানিং কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা মো: শহীদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এটিএম মনিরুজ্জামান সরকার,উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুমা আক্তার,বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ ফজলে ইয়াজ আল হোসাইন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কুমার রায়,উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো: ওমরাও খান ও শ্রী প্রমোদ রঞ্জন সূত্রধর। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নেতা আবু আহাম্মদ কামরুল হুদা, হুমায়ুন কবীর, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ভানু চন্দ্র দেব, সৈয়দ সাজ্জাদ মোর্শেদ ,গুনিয়াউক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম ছামদানী, মোহাম্মদ ইয়াছিন মিয়া পাঠান ও শাহজাহান চকদার। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুবিনা আক্তার,সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা হামিদা লতিফ পান্না, সাবেক মহিলা মেম্বার রিটা আক্তার ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী নাহিদা আক্তার।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা মো: শহীদুল ইসলাম জানান,এবার প্রথমবারের মত অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার বিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।সব প্রার্থী নিবার্চনী নিয়মনীতি মেনে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে মনোনয়নপত্র অনলাইনে দাখিল শেষে হার্ড কপি জমা দিয়েছেন। সকল প্রার্থীকে নিজ নিজ জায়গায় থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি রক্ষার অনুরোধ জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৭ এপ্রিল, বাছাই আপিল ১৮ এপ্রিল,আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল,প্রার্থিতা প্রত্যাহার ২২ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৮ মে। নাসিরনগর উপজেলায় ৯৩টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ভোটার ২ লক্ষ ৫২ হাজার ৫৪৭জন। পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ১‘শ ৯ জন ও মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৪‘শ ৩৬ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ ২ জন।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতীয় পতাকা অবমাননা, মসজিদ ভাংচুর ও চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলায় মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এ সময় ইসকনের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি করেন বক্তারা। এতে অংশ নেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে উপজেলা শাখার নেতাকর্মীরা। আজ ২ ডিসেম্বর সোমবার সকালে ইসকনের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে মিলিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এ ঘটনাকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। একটি গোষ্ঠী বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে সনাতনীদের উসকানি দিচ্ছে। বক্তারা আরও বলেন, আইনজীবী সাইফুলের হত্যাকারী যারাই হোক না কেন, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তা না হলে দেশব্যাপী আরও বৃহৎ কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। মানববন্ধন থেকে আইনজীবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও দাবি জানানো হয়। হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে দ্রুত নিষিদ্ধ ও বাংলাদেশে ইসকনের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করারও দাবি করেন বক্তারা।
সমাবেশে উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা শামসুদ্দিন সাহেবের সভাপতিত্বে বক্তব্য প্রদান করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ নাসিরনগর উপজেলা শাখার আহবায়ক ও ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা মুখলেছুর রহমান, মাওলানা গিয়াসউদ্দিন, চাতলপাড় উলামা পরিষদের সভাপতি কামরুজ্জামান তুরাব আলী প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার নাসিরপুর সাহেব বাড়ির কৃতি সন্তান সৈয়দ শাহ আবদুল্লাহ কল্যাণ ট্রাস্টের সভাপতি দানবীর মরহুম আলহাজ্ব সৈয়দ আবু এমাদের মাগফিরাত কামনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৫ মার্চ মঙ্গলবার বিকালে স্থানীয় এলাকাবাসীর আয়োজনে সুচীউড়া গাউছিয়া আজিজিয়া আবদুল্লাহ (রহ:) দাখিল মাদ্রাসা মাঠে সৈয়দ আবু এমাদের জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
পীরজাদা সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম কনা মিয়ার সভাপতিত্বে মো: মিছির উদ্দিন মাষ্টারের পরিচালনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন গাউছিয়া আজিজিয়া আবদুল্লাহ (রহ:) দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্টাতা সভাপতি পীরে তরিকত আলহাজ্ব মাওলানা সৈয়দ আবুল মোজাররদ আশিক বিল্লাহ।
বিশেষ অতিথি‘র বক্তব্য রাখেন বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সৈয়দ ছগির আহমেদ, প্রভাষক মাওলানা এখলাছুর রহমান, গাউছিয়া আজিজিয়া আবদুল্লাহ (রহ:) দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো: শাহ আলম, সাবেক প্রধান শিক্ষক সৈয়দ শওকতুল ইসলাম,গোর্কণ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মো: আমিনুল ইসলাম বেলায়েত,গাউছিয়া আজিজিয়া আবদুল্লাহ (রহ:) দাখিল মাদ্রাসার সহ-সভাপতি মো: আতিকুর রহমান খসরু,সমাজসেবক হুমায়ুন রেজা চৌধুরী, মো: আকতার হোসেন,শিক্ষক হোসাইন আহমেদ ও হাবিবুর রহমান মাষ্ঠার।
আলোচনা সভা শেষে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পীরে তরিকত আলহাজ্ব মাওলানা সৈয়দ আবুল মোজাররদ আশিক বিল্লাহ ।
দোয়া মাহফিলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৪শত ৫০ কেজি অবৈধ নকল সার জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় অবৈধ নকল সার রাখার দায়ে বিক্রেতাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আজ ২২ জানুয়ারি বুধবার বিকালে নাসিরনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার প্রসিকিউশন ও নাসিরনগর থানা পুলিশের সহায়তায় উপজেলা সদরের দাতঁমন্ডল গ্রামের সার ও কিটনাশকের দোকানে এ অভিযান পরিচালনা করেন সহকারি কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কাজী রবিউস সারোয়ার।
অভিযানে মেসার্স কাদরিয়া ট্রেডার্স এর দোকান থেকে ৪৯ বস্তা নকল ডিএপি ও টিএসপি সার জব্দ করা হয়। মেসার্স কাদরিয়া ট্রেডার্স এর ডিলার আল-কাউসারকে উপস্থিত না পেয়ে নকল সার মজুত ও বিক্রি করার দায়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ৪১ ধারা লঙ্গণে দোকানের সার ও কীটনাশক বিক্রেতা কানন (৩২) কে ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়। পরে জব্দকৃত নকল ৪৯ বস্তা সার মাটিতে গর্ত করে পানি মিশিয়ে বিনষ্ট করা হয়।
অভিযানকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: ইমরান শাকিল, নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পুতুল রানী দাস, ইউপি সদস্য আক্কল আলীসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট কাজী রবিউস সারোয়ার ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দাঁতমন্ডল গ্রামে একটি দোকানে অবৈধ নকল সার মজুদ করে বিক্রি করা হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘রাইতে ঘর থাইক্যা বাইর হইতে পারি না। সাদা সাদা কাপড় পইর্যা জিন বাড়িতে আইয়া ডর দেখায়। ঘরের চুলা ভাঙছে, দরজায়ও তালা দিছে।’ এক দমে কথাগুলো বলছিলেন হাবিবা আক্তার। তাঁর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার আতুকুড়া গ্রামে। কিছুদিন আগেই এ গ্রামের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী জাজু আক্তার (১০) হত্যায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেফতার হয় শিউলি আক্তার নামের এক নারী। এর পর থেকেই হাবিবার বাড়িতে জিনের উপদ্রব আর নেই। তবে আতঙ্ক কাটেনি তাঁর মতো গ্রামের অন্য বাসিন্দাদের।
আতুকুড়া গ্রামটি পড়েছে ফান্দাউক ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। আতুকুড়া গ্রামেরই শাহ আলম মিয়ার মেয়ে জাজু আক্তার পড়ত আতুকুড়া মাস্টার কিন্ডারগার্টেনে। ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে হঠাৎ নিখোঁজ হয় শিশুটি। সারাদিন খোঁজাখুঁজির পরও খোঁজ মেলেনি তার। আশপাশের এলাকার মসজিদের মাইকে জাজুর নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করা হয়। দিন শেষে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে জাজুকে জিনে নিয়ে গেছে। ওই দিন সন্ধ্যার পর বাড়ির পাশের খালে পাওয়া যায় শিশুটির লাশ। তার পরিবারের লোকজনও বিশ্বাস করতে শুরু করেন, জিনই হয়তো হত্যা করেছে তাদের মেয়েকে। কিন্তু নাসিরনগর থানা পুলিশ এ কুসংস্কারে বিশ্বাস করেনি। তারা তদন্ত শুরু করে সেই রাতেই।
পুলিশের পরামর্শে পরদিন থানায় মামলা করেন জাজুর বাবা শাহ আলম মিয়া। তিন দিন পর পুলিশ প্রতিবেশী কাজী মিয়ার স্ত্রী শিউলি (২৫) ও তার শ্বশুর দুধ মিয়াকে গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই চম্পক চক্রবর্তী আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ৭ অক্টোবর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে জাজু হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসে। ৯ অক্টোবর বুধবার রাতে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কাদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। জবানবন্দির সূত্র ধরে তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে শিউলি নিজেকে জিনের মা হিসেবে পরিচয় দেয়। দাবি করে, তার ওপর জিনের আসর আছে। কিন্তু জাজুর বাবা শাহ আলম এসব বিশ্বাস করতেন না। হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ আগে শিউলির বাড়িতে জিন নামানো হয়। সেখানে দাবি করা হয়, পাঁচ মণ মিষ্টি ও পাঁচটি গরু দিলে এলাকার সব সমস্যার সমাধান হবে। তবে এসব কুসংস্কারের প্রতিবাদ করেন শাহ আলম। এ কারণেই তাঁর মেয়ে জাজুকে শিউলির নেতৃত্বে হত্যা করা হয়।
গতকাল ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে জাজুদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সুনসান নীরবতা। তার বই-খাতা ও ব্যাগ পড়ে আছে ঘরে। মেয়ের মৃত্যুতে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে গেছেন মা জুনু বেগম। মেয়ের কথা বলতে গিয়ে তাঁর চোখ ভিজে যায়। আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘আমি বিচার চাই না, আমার ছোড মাইয়াডারে ফিরত চাই।’ জুনু-শাহ আলম দম্পতির বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামীর বাড়িতে থাকেন। আর দুই ছেলে রয়েছে। তারাও বোন হত্যার পর আতঙ্কিত। একই এলাকার মরহম আলী বলেন, ‘বক্তব্য দিলে আমার বাড়ির ছোট ছোট বাচ্চাদের মাইরা ফেলতে পারে। জাজুরে মারনের পর খাইরুল নামে আরেকটা ছোড ছেলেরে মারতে চাইছিল।’
আরেক ভুক্তভোগী বিলকিস বলেন, ‘আমার ঘরে তিনজন জিন সাদা কাপড় পইরা ৯টা তালা দিয়া গেছে। চাবি সঙ্গে নিয়া গেছে। আমরা জানালা দিয়া সব দেখছি। কিন্তু ভয়ে ঘর থাইকা বের হই নাই।’
জাজু হত্যা মামলার তদন্তে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, জিনের ভয়ে দীর্ঘদিন গ্রামের অনেকে রাতে ঘর থেকে বের হতে পারেন না। এমনকি চক্রটি জিনের ভয় দেখিয়ে বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা এবং গবাদি পশু হাতিয়ে নিয়েছে। ওসি আব্দুল কাদের বলেন, কয়েক বছর ধরে আতুকুড়া গ্রামের সাধারণ মানুষ বিকেলের পর ঘর থেকে বের হতেও পারতেন না। সন্ধ্যার পরপরই কারও ঘরের দরজায় তালা দেওয়া হতো। আবার কারও ঘরের দরজায় সাদা সুতা দিয়ে বাঁধা; কারও বাড়ির রান্না করার চুলা ভেঙে রাখত। এ ছাড়া কারও ঘরের টিনের চালায় ইট ছোড়া হতো।
এ পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য, মূলত স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতেই শিউলির কিছু লোক এসব অপকর্ম করে আসছিল। এসব কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ করেন জাজুর বাবা শাহ আলম। এর জের ধরে তাঁর মেয়েকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা. মাসুক আল মারজান বলেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র জিন-ভূতের কল্পকাহিনি বানিয়ে তাবিজ ও পানি বিক্রি করে আসছে। এর ফলে মানুষ হত্যা থেকে শুরু করে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটছে। বিষয়টিকে সামাজিক অবক্ষয় হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর মতে, এ থেকে মুক্তি পেতে হলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মাঝে সুশিক্ষা পৌঁছে দিতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে লায়নস ক্লাব অব ঢাকা নর্দানের উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গোর্কণ ইউনিয়নে দিনব্যাপী বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৩ আগস্ট শনিবার সকালে লায়নস ক্লাব অব ঢাকা নর্দানের লায়নস ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল জেলা-৩১৫ এ-৩ বাংলাদেশের উদ্যোগে ও লায়ন্স চক্ষু ইনিস্টিটিউট এন্ড হাসপাতালের সহযোগিতায় এই ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি হিসেবে এই চক্ষু চিকিৎসা শিবিরের উদ্বোধন করেন লায়নস ক্লাব অব ঢাকা নর্দানের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ শরীফ। এ সময় লায়নস ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল জেলা-৩১৫ এ-৩ এর গেট এরিয়া লিডার পিডিজি কাজী সাইফুল ইসলাম, মাল্টিপোল জেলা-৩১৫ এ-৩ এর বাংলাদেশের কাউন্সিল চেয়ারপার্সন লায়ন ফারহানা বক্স, জেলা গর্ভনর লায়ন সামসুল ইসলাম, লায়ন এস.কে কামরুল, লায়ন মোঃ জাকির হোসেন, লায়ন রিয়াজ বশির, আহমেদ কাজল, গোকর্ণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ শাহিন, গোকর্ণ সৈয়দ ওয়াল্লী উল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) সনজিৎ কুমার দেব, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা সৈয়দ সালাউদ্দিন মুকুল, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিজ মিয়া, প্রাছাসের সভাপতি অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন চৌধুরী শরীফ, বিশিষ্ট সমাজসেবক হুমায়ুন রেজা চৌধুরীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
লায়ন্স চক্ষু ইনিস্টিটিউট এন্ড হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাক্তার মোঃ আহসানুল কবিরের নেতৃত্বে দিনব্যাপী ৪ জন দক্ষ চক্ষু চিকিৎসক বিনামূল্যে চক্ষু শিবিরে প্রায় দুইশতাধিক নারী-পুরুষকে চক্ষু চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। এর মধ্যে ৪৪ জন রোগীকে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য বাছাই করা হয়।