চলারপথে রিপোর্ট :
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিদের পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলীয় সভানেত্রীর বরাত দিয়ে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পত্রিকায় বিবৃতি দিচ্ছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার আমলে না নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সায়েদুর রহমান স্বপন।
তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী অ্যাড. আনিসুল হকের আপন ফুফাতো ভাই। গতকাল রবিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। স্বপন ছাড়াও কসবা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আরও দুইজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
তারা হলেন, কসবা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান চেয়ারম্যান ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক এপিএস এড. রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন ভূইয়া। নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ২১ এপ্রিল রবিবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সায়েদুর রহমান স্বপন কসবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে অনেকদিন ধরেই প্রচার-প্রচারণা করে আসছেন। তিনি কুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি ছিলেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন। তিনি মন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব।
এড. রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, সায়েদুর রহমান স্বপন আইনমন্ত্রীর আপন ফুফাতো ভাই। তিনি মন্ত্রীর ভাই পরিচয় দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী এমপিদের আত্মীয়দের প্রার্থী না হতে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তা মানছেন না।
এ বিষয়ে সায়েদুর রহমান স্বপন সাংবাদিকদের বলেন, আমি মন্ত্রীর ফুফাতো ভাই। মন্ত্রীর পরিবারের আত্মীয় নই। আমি দলীয় প্রতীক নিয়েও নির্বাচন করছি না। আমি ৩০ বছর ধরে কুটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। কুটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। আমি আমার অবস্থান থেকেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। তাছাড়া নির্বাচন না করার ব্যপারে দলীয় কোন লিখিত নির্দেশনা পাইনি। তাই নির্বাচন করতে আমার কোন বাঁধা নেই।
এ ব্যাপারে কসবা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অমিত কুমার দাস বলেন, চেয়ারম্যান পদে তিন জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ২ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই ছাইদুর রহমান (স্বপন) এবং আখাউড়া উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মনির হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন। আজ ২১ মে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কসবা ও আখাউড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
কসবা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ছাইদুর রহমান স্বপন (কাপ-পিরিচ প্রতীক) ৮৬ হাজার ৬৯৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন ( আনারস প্রতীক) পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৫৯ ভোট।
বিজয়ী চেয়ারম্যান ছাইদুর রহমান স্বপন (কাপ-পিরিচ প্রতীক) আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলার কুটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতেই তিনি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাউসার ভূইয়া জীবন (আনারস প্রতীক) আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব। তিনি কসবা উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক।
অপরদিকে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোঃ মনির হোসেন (ঘোড়া প্রতীক) ২৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি, উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান (আনারস প্রতীক) মোঃ মুরাদ হোসেন ভ‚ইয়া পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫৬৩ ভোট।
বিজয়ী চেয়ারম্যান মোঃ মনির হোসেন (ঘোড়া প্রতীক) আখাউড়া উপজেলা উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ও মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান। অপরদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব মোঃ মুরাদ হোসেন ভূইয়া (আনারস প্রতীক) উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান।
ভোট গননা শেষে জেলা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় কৃষি জমির পত্তনের পাওনা ১ হাজার টাকা দিতে না পারায় মুসা মিয়া (৩৪) নামে এক কৃষককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে জমির মালিকের ছেলে রুহুল আমিন। আজ ৩০ মার্চ শনিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার কুটি ইউনিয়নের দক্ষিনখার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মুসা মিয়া দক্ষিনখার গ্রামের মৃত জজু মিয়ার ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠিয়েছে। ওই প্রান্তিক কৃষকের মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। হত্যাকারী রুহুল আমিন একই গ্রামের মৃত তৌহিদ মিয়া পুত্র । ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত রুহুল আমিন।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘ বছর ধরে দরিদ্র পরিবারের সন্তান প্রান্তিক কৃষক মুসা মিয়া একই গ্রামের তৌহিদ মিয়ার জমি পত্তন নিয়ে চাষাবাদ করে আসছিলো। প্রতি বছরই জমি পত্তনের টাকা যথাসময়ে পরিশোধ করে আসছিলো। এ বছর পত্তনের তিন হাজার টাকার মধ্যে ২ হাজার টাকা কিছুদিন আগে পরিশোধ করেছিলো মুসা মিয়া। অবশিষ্ট পাওনা ছিলো ১ হাজার টাকা। ওই ১ হাজার টাকা শনিবার পরিশোধ করার কথা ছিলো।
সকালে ঘটনার সময় রুহুল আমিনদের কাছ থেকে পত্তন নেয়া জমিতেই কাজ করছিলো মুসা মিয়া। সকালে টাকা আনতে গিয়ে বাড়িতে না পেয়ে জমিতে যায় রুহুল আমিন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে রুহুল আমিনের সাথে থাকা একটি ছুরি দিয়ে কৃষক মুসা মিয়াকে উপুর্যপরি ছুরিকাঘাত করে। এসময় মুসা মিয়ার আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা ও বাড়ির লোকজন উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কসবা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাজু আহমেদ জানান, জমির টাকা নিয়ে ছুরিকাঘাতে কৃষক নিহতের ঘটনায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় রেলপথ ধরে হাঁটার সময় মালবাহী একটি ট্রেনের ধাক্কায় মো. আলী আশরাফ (৩২) নামের এক প্রকৌশলীর মৃত্যু হয়েছে। ২৯ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের চকচন্দ্রপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আলী আশরাফ কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার সুন্দরপুর এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে। তিনি একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কসবায় কর্মরত ছিলেন। কসবা রেলস্টেশন-সংলগ্ন এলাকায় ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবাসিক ভবনে থাকতেন তিনি।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন খন্দকার বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের কাছে খবর পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
স্থানীয় লোকজন জানান, চকচন্দ্রপুর এলাকায় রেলপথ দিয়ে হাঁটার সময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মালবাহী একটি ট্রেন ধাক্কা দিলে রাস্তার পশ্চিম পাশে পড়ে যান আলী আশরাফ। এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় স্বজন সমাবেশের আয়োজনে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার একটি রেস্টুরেন্টে স্বজনের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
ইফতার মাহফিলে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামসহ সব শহিদের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিমুল এহসান খান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে স্বজনদের শুভকামনা জানান। স্বজনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বজন সমাবেশ কসবা শাখার সভাপতি মো. আব্দুল হান্নান।
বিশেষ অতিথির হিসেবে আলোচনা সভায় বক্তব্যে রাখেন সাংবাদিক সোহরাব হোসেন, কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডা. অরুপ পাল, ডা. জামাল চৌধুরী, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রওনক ফারজানা রুবা, স্বজনের উপদেষ্টা যুগান্তর প্রতিনিধি বোরহান মো. ইনামুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- স্বজনের সহ-সভাপতি ডা. বিল্লাল হোসেন চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নওশের আলম, অর্থ সম্পাদক কেএম বিল্লাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, কল্যাণ সম্পাদক মো. মেহেদী, তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক বায়েজিদ মিয়া, সদস্য মো. লোকমান হোসেন, সদস্য মো. হৃদয় মিয়া, সদস্য ইমা আক্তার, উপদেষ্টা সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. শাহনেওয়াজ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জুঁই আক্তার, রাখসান্দা রওনক, মো. খোরশেদ আলম, মো. শামিম, সাকিবুল ইসলাম।