চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার পর স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিলেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহর ও আশেপাশের এলাকায়ও শুরু হয় বৃষ্টিপাত। বৃষ্টির বর্ষণে প্রকৃতিতে নেমে আসে স্বস্তির হাওয়া। এ সময় দফা দফায় বজ্রপাতে প্রকম্পিত হয় আকাশ। এদিকে বৃষ্টির ফোটা শুরু হবার সাথে সাথেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লোকজন পোষ্ট করতে শুরু করে বৃষ্টি পড়ার খবর। আর এটা দেখেই বোঝা যায় মানুষ কতটা প্রতীক্ষা করেছে এই বৃষ্টির জন্য।
এদিকে বৃষ্টি নামায় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে শহরবাসীর মধ্যে। বৃষ্টিপাতে কিছুটা কমে আসে তাপমাত্রা। সারাদেশের ন্যায় গত বেশকিছু দিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও দাবদাহ চলছিল। দাবদাহের কারণে জনজীবনে নেমে অস্বস্তি, বন্ধ রাখা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিদিনই কোনো কোনো স্থানে বৃষ্টির জন্য হয় বিশেষ দোয়া মোনাজাত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার অষ্টগ্রামের বাসিন্দা মো: আব্দুল আলিম বলেন, এ বৃষ্টি সস্তির ও শান্তির বৃষ্টি। এ জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। সৃষ্টিকর্তা আমাদের দিকে ফিরে তাকিয়েছেন। এই কয়েক দিনের গরমে আমরা অতিষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম। গত কয়েকদিনের তীব্র তাপদাহে মানুষ খুব কষ্ট করেছে। বিশেষ করে খেটেখাওয়া মানুষের কষ্ট আমি নিজের চোখে দেখেছি। এই বৃষ্টির ফলে গরমের তীব্রতা কিছুটা কমেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক অভিযানে ৪৭৩ বোতল ফেনসিডিল ও ৪ কেজি গাঁজাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
আজ ২৯ মার্চ শুক্রবার ভোরে ও দুপুরে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে গাঁজা ও ফেনসিডিলসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত জাহিদুল ইসলাম জাফর জেলার সদর উপজেলার কোড্ডা মধ্য পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও কোড্ডা উত্তর পাড়া গ্রামের নিশাদ, মো. নুর জামাল সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ঢালার পাড় গ্রামের বাসিন্দা, একই উপজেলার সৈকত নগর গ্রামের শান্ত ও নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের মো. রাজু আহম্মেদ।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-৯, সিলেট ক্যাম্পের মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার মো. মশিহুর রহমান সোহেলের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, শুক্রবার জেলার বিভিন্ন জায়গায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয়। ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলার সদর উপজেলার কোড্ডা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জাহিদুল ও নিশাদকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে ২৭৫ বোতল ফেনসিডিল ও ৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
পৃথক অভিযানে জেলার বিজয়নগর অভিযান পরিচালনা করে নুর জামাল, শাহিন মিয়া ও রাজু আহম্মেদকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের সঙ্গে থাকা ১৯৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে সদর ও বিজয়নগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দু’পক্ষের মারামারির দুই মাস পর আহত হারুন মিয়া (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তিনি তার নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে হারুন মিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সে মারা যায়। গত অক্টোবর মাসে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুত্বর ভাবে আহত হয়েছিলেন হারুন মিয়া। হারুন মিয়ার মৃত্যুর পর উপজেলার পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হারুন মিয়া উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষীমুড়া গ্রামে মৃত কিতাব আলীর ছেলে। হাসপাতাল ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত লক্ষীমুড়া গ্রামের মৃত কিতাব আলীর ছেলে হারুন মিয়ার পরিবার ও মৃত সোবহান মিয়ার ছেলে করিম মিয়ার পরিবারের জমিতে গরুর ঘাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে করিম মিয়ার পক্ষের লোকেরা হারুন মিয়াসহ তার পরিবারের ৪-৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। তারপর বিজয়নগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর করিম মিয়ার লোকজন হারুন মিয়াকে হত্যা করার হুমকি দেন? পরবর্তীতে স্থানীয় চেয়ারম্যান দু’পক্ষের লোকদেরকে ডেকে তা আপস করার চেষ্টা করেন। পরে হারুন মিয়া তার ছেলে-ভাতিজাকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথিমধ্যে শেখ হাসিনা সড়কের উত্তর পাশে করিম মিয়ার লোকজন অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা করেন। তাতে হারুন মিয়ার একটি হাত ও একটি পা ভেঙ্গে যায়। পরে তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হারুন মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে এক মাস হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়। পরবর্তীতে বাড়িতে তার চিকিৎসা চলে।
এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়- এই হামলার ইন্দনদাতা পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়া।
নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়ার উপর হামলা হয়েছে। আমার চাচার হত্যা সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানায়।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একজন মারা গেছেন বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যু রহস্য উন্মোচন হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সারাদেশে কয়েক দিন ধরে চলছে তীব্র গরম। এ অবস্থায় গতকাল চার বিভাগে হিট অ্যালার্ট জারি করে আবহাওয়া অধিদফতর। তবে এরই মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৃষ্টি নেমেছে। বাতাস, মেঘ ও বৃষ্টির ফলে জনজীবনে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে।
আজ ১৮ মে শনিবার সকালের দিকে এই বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে দেখা যায়। শুক্রবার সারাদিন ছিলো তীব্র আকারের তাপপ্রবাহ। এরফলে প্রচণ্ড গরমে প্যান চালিয়েও ঘুমানো ছিলো বেশ কষ্টকর। এরই মাঝে সকালের বৃষ্টি সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমত বলে মনে করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী। বৃষ্টির সাথে হালকা হিমেল বাতাস ছিলো দেহমন জুড়ানোর বিষয়টি ছিলো এক অপার্থিব আনন্দ।
এদিকে, শুক্রবার সন্ধ্যায় দেওয়া আবহাওয়া বার্তায় জানানো হয়েছিল, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। পূর্বাভাসে আরো বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগসহ মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর ও ফেনী জেলাগুলোর উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এদিকে শুক্রবার বিকেলে দেশে চার বিভাগে ২ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, ঢাকা বিভাগের পশ্চিমাঞ্চলসহ রংপুর, রাজশাহী এবং খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে চলমান তাপ প্রবাহ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। এর আগে, গত বুধবার সন্ধ্যায় রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ৪৮ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়। এছাড়া গত এপ্রিলে বেশ কয়েকবার তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল।
দাফন সম্পন্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের লক্ষীমুড়া গ্রামের নিহত হারুন মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় মনিপুর বন্দরবাজার বালুর মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্থানীয় হারুন মিয়ার আত্মীয় স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। এর আগে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে হারুন মিয়া নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরদিন দুপুরে ময়নাতদন্তের পর হারুন মিয়ার মরদেহে এসে পৌঁছায় তার নিজ এলাকায়। মরদেহ পৌঁছার পর থেকেই স্থানীদের ভিড় বাড়ে তার বাড়িতে। এরপর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজু আহমেদ, পত্তন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা হৃদয় আহমেদ জালাল, সাবেক মেম্বার সেলিম মিয়া, হোসেন মিয়া, মাওলানা সিরাজ আকরামসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা। নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়া হত্যার শিকার হয়েছে। আমার চাচার হত্যার সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানাই।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ জানান, শান্তিপূর্ণ ভাবে হারুন মিয়ার জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। এলাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অভিযুক্ত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে তিনি জানান।
স্টাফ রিপোর্টার:
এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের (ইপিএস) আওতায় আরও ২৬৩ জন বাংলাদেশি কর্মী দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছেন। এসব কর্মীরা মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিউলের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে। ঢাকার কোরিয়ান দূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বলেন, মঙ্গলবার ইপিএস সিস্টেমের মাধ্যমে আরও ২৬৩ জন বাংলাদেশি কর্মী দক্ষিণ কোরিয়া যাবেন।
এদিকে, প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এসব কর্মীদের বিমানবন্দরে বিদায় জানাবেন।
ঢাকার কোরিয়া দূতাবাসের তথ্য বলছে, ২০০৮ সাল থেকে এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম বা ইপিএস সিস্টেমের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী পাঠানো সংক্রান্ত চুক্তি হলো ইপিএস। এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার ৫৬১ জন কর্মী এই পদ্ধতিতে কোরিয়া গেছে। বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) তথ্য বলছে, ২০১০ সালে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৬৯১ জন ইপিএসের আওতায় কর্মী নিয়েছিল কোরিয়া। ইপিএসের প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশ থেকে অদক্ষ বিদেশী কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে কোরিয়া। করোনা মহামারির কারণে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বিদেশি ইপিএস কর্মী নেওয়া স্থগিত রেখেছিল। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে কোরিয়া সরকার আবার বিদেশি কর্মী নেওয়া শুরু করে।