অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এম.পি ব্যক্তিগত সফরে কানাডা এবং জাপানের উদ্দেশে এক রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন।
আজ ১৮ মে শনিবার সকালে তিনি কানাডার ভ্যানকুভারের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। ভ্যানকুভার যাওয়ার পথে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে তার যাত্রাবিরতি করার কথা রয়েছে।
গণপূর্তমন্ত্রী আগামী ২৫ মে টোকিওর উদ্দেশে ভ্যানকুভার ত্যাগ করবেন এবং ২৬ মে টোকিও পৌঁছাবেন। ২৭ মে তিনি টোকিও থেকে নাগাসাকি পৌঁছাবেন।
২৮ মে নাগাসাকিতে অবস্থিত পিস মেমোরিয়াল প্রাঙ্গণে তার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাপানের প্রতি উপহারস্বরপ প্রদত্ত পিস মনুমেন্ট উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
সফর শেষে আগামী ৩১ মে শুক্রবার র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকীর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
চলারপথে ডেস্ক :
ভরিতে ১ হাজার ১৬৭ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। এতে ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম কমে হয়েছে ৯২ হাজার ২৬২ টাকা। এতদিন ছিল ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা। দেশের বাজারে এটিই ছিল সোনার সর্বোচ্চ দাম।
আজ ৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আগামীকাল ৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার থেকে সোনার এ নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাজুস।
নতুন দাম অনুযায়ী, রবিবার থেকে ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি সোনা কিনতে লাগবে ৯২ হাজার ২৬২ টাকা, ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি সোনার দাম ১১০৮ টাকা কমিয়ে করা হয়েছে ৮৮ হাজার ৬৩ টাকা, ১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি সোনার দাম কমানো হয়েছে ৯৯২ টাকা এখন কিনতে লাগবে ৭৫ হাজার ৪৬৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৪৬৭ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২ হাজার ৮৬৯ টাকা।
সবশেষ গত ১৪ জানুয়ারি বাজুস সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। যা ১৫ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়। ওই দাম অনুযায়ী আজ পর্যন্ত সোনা কেনাবেচা হয়েছে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা, ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি সোনা ৮৯ হাজার ১৭১ টাকা, ১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি ৭৬ হাজার ৪৫৮ টাকা, এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ৬৩ হাজার ৩৩৬ টাকা।
এদিকে সোনার দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রূপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের রুপার দাম প্রতি ভরি ১ হাজার ৭১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, ২১ ক্যারেটের রুপার দাম ১ হাজার ৬৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের রুপার দাম ১৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১০৫০ টাকায় অপরিবর্তিত আছে।
চলারপথে ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য জন্য তার দলের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যাতে কেউ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে।
একইসঙ্গে তিনি উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য তাঁর দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’য় দেশবাসীর ভোট প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন, “আপনারা আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য এমনভাবে কাজ করবেন যাতে নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে না পারে।”
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আজ নির্বাচনী জনসভায় দেওয়া এক ভার্চুয়াল ভাষণে একথা বলেন।
তিনি আজ বিকেলে আওয়ামী লীগের তেঁজগাও কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই নির্বাচনী জনসভায় যুক্ত হন। যার সাথে পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, নাটোর, পাবনা ও খাগড়াছড়ি সহ ৫টি জেলা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিল। পরে এসব জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মতবিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি তাঁর দলের নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বলেছেন যাতে তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।
তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে জনগণ ও ভোটারদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। কোন দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বা নিচ্ছে না, তাতে কিছু যায় আসে না।”
তিনি বলেন, ভোট কারচুপির কোনো নিশ্চয়তা না থাকায় বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি আর বিএনপির কাজটা কি? জ্বালাও পোড়াও অগ্নি সন্ত্রাস, এটাই তারা ভালো বোঝে এটাই তারা করে।
তিনি বলেন, এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। কেননা সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিবাদি সংগঠন হচ্ছে বিএনপি।
শেখ হাসিনা বলেন, ভোট চুরির অপরাধে দুই দুবার এদেশের মানুষ খালেদা জিয়াকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল সেটা নিশ্চয়ই সকলের মনে আছে। ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়েছিল। আর মার্চে খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ঠিক একইভাবে তারা আবার ভোট চুরি করার চেষ্টা করেছিল ২০০৬ সালে। এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার লিস্ট করে সে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। পারে নাই। কাজেই দু’ দুবার যারা ভোট চুরির অপরাধে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত তাদের মুখে এখন গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়,ভোটের কথাও শুনতে হয় -এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য।
তিনি বলেন, ভোটের অধিকার জনগণকে আওয়ামী লীগই দিয়েছে এবং সেটা অব্যাহত থাকবে। এবারে নির্বাচনে আপনাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এ ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ করে কোন মানুষের ক্ষতি যেন কেউ না করতে পারে। সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন এবং সে নির্বাচনে জনগণ অবাধে ভোট দেবে। ভোটের মালিক জনগণ তাদের সাংবিধানিক অধিকার।
“হ্যাঁ আমরা এটা উন্মুক্ত করেছি আমাদের নৌকার প্রার্থীও আছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছে এবং অন্যান্য দলের প্রার্থীও রয়েছে,” বলেন তিনি।
তিনি দলের প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা জনগণের কাছে যাবেন, জনগণ যাকে ভোট দেবে তিনি নির্বাচিত হবেন। কেউ কারো অধিকারে হস্তক্ষেপ করবেন না। এখানে কিন্তু কোন রকমের সংঘাত বা মারামারি, কোন কিছুই আমি দেখতে চাই না।
তিনি বলেন, কোন সংঘাত হলে সংঘাত যদি আমার দলেরও কেউ করে তাদের কিন্তু রেহাই নেই। তাদের বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। সেটা মনে রাখবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটাধিকার নির্বিঘেœ প্রয়োগ করবেন। যাকে খুশি বা যাকে পছন্দ তাকে ভোট দেবেন এবং সে জয়ী হয়ে আসবে। কেননা গণতন্ত্রকে আরো সুদৃঢ় করতে হবে। এর যেন কোন ব্যতয় না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহবান জানিয়ে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্যও এটা জরুরী বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার ওপর নির্মিত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান তেজগাঁও দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ, প্রার্থী, স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীবৃন্দ সংযুক্ত পাঁচ জেলার ভেন্যুতে উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ:) ও শাহ পরাণ (রহ:) এর মাজার জিয়ারত করে দলের নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
এরপর দুপুর ২টায় নগরীর চৌহাট্টা এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগের সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন তিনি।
তিনি ২৯ ডিসেম্বর বরিশাল সফর করবেন এবং ওই দিন বিকেল ৩টায় জেলা শহরে একটি নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এরপর ৩০ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ সফর করবেন এবং গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া) আসনের জনসভায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা। একই দিন মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলাম সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি, এখন লক্ষ্য হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সে স্মার্ট বাংলাদেশে প্রত্যেকটি ছেলে-মেয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। আজকে আমাদের ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ছয় লাখের অধিক। যারা ঘরে বসে আয় উপার্জন করতে পারে। তারা কোভিড- ১৯ এর সময়ও এটা করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়নটা ‘সাসটেইনেবল’ হবে অর্থাৎ যে উন্নয়নটা স্থায়ী হবে এবং যার মাধ্যমে জনগণ সুযোগ পাবে নিজেদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটানোর। উন্নয়নবান্ধব ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের কর্মসূচি আমরা বাস্তবায়ন করব।
তিনি বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েদের অনেক মেধা আছে। যে মেধা অন্বেষণ করে তাকে কাজে লাগিয়ে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং তাদেরকে প্রযুক্তি জ্ঞান দিয়ে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে আমরা গড়ে তুলবো। আমাদের অর্থনীতিও উন্নত হবে, স্মার্ট হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন আমরা করে যাচ্ছি সেটা যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য আমরা উন্নত, উদার, অগ্রসরমান, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। যেখানে উন্নয়নটা হবে সুষম। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই যেন সুন্দরভাবে সেখানে বাঁচতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা দুর্নীতি মুক্ত এবং সুষম উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। কারণ এই দুর্নীতি সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিছু লোক হঠাৎ আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়। আর সৎভাবে যারা জীবনযাপন করে তাদের জীবনটা দুর্বিসহ হয়। সেজন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ‘জিরো টলারেন্স’ আমরা ঘোষণা দেবো। ন্যায় ও সমতা ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা এবং অর্থনীতিকে সমতা ভিত্তিক করা এবং মানুষের জীবনমান উন্নত করাটাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, “আমরা সর্বস্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই,” শেখ হাসিনা বলেন, কাজেই স্মার্ট বাংলাদেশ শুধু একটি শব্দ নয়। এর অন্তর্নিহিত অর্থ হচ্ছে সার্বিকভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নটাকে স্থায়ী বন্দোবস্ত করা যাতে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম এর সুফলটা ভোগ করতে পারে সে ব্যবস্থা করা। সেজন্য তাঁর সরকার প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছে। যেমন ২০৪১ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে তার রূপরেখা এখনই প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, শতবর্ষ পরে বাংলাদেশের অবস্থান কিরকম হবে? তা বিবেচনা করে ‘ডেলটা মহাপরিকল্পনা – ২১০০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিয়েছি। জলবায়ুর অভিঘাত থেকে বাংলাদেশ কিভাবে মুক্ত থাকবে, তারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী পাঁচ জেলার উন্নয়নের বিভিন্ন খতিয়ান, এগুলোকে আরো সমৃদ্ধ জনপদ হিসেবে গড়ে তোলার নানা পরিকল্পনা তুলে ধরার পাশাপাশি তাঁর সরকারের গৃহীত ১০ কোটির বেশি উপকারভোগীর সামাজিক নিরাপত্তা বলয় কর্মসূচি, দেশের সকল গৃহহীণকে ঘর নির্মান ও তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করা, ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আরো জ¦ালা, গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি-উপবৃত্তি, মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত বছরের প্রথম দিন বিনামূল্যে নতুন বই প্রদান এবং চিকিৎসা সেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য সারাদেশে গড়ে তোলা কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাসহ ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদানের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন।
তিনি বর্গা চাষীদের জন্য বিনা জামানতে কৃষিঋণ এবং উদ্যোক্তা তৈরি হবার জন্য ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনা জামানতে ঋণ প্রদানের পাশাপাশি কৃষকদের দোরগোড়ায় সার পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁর সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন। বিএনপি এই সারের দাবিতে আন্দোলনরত কৃষকদের উপর গুলি চালিয়ে কৃষক হত্যা করেছিল সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি নির্বাচনে আসবে কিভাবে সে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কারো কোন প্রশ্ন ছিল না। সেই নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ৩০টি আসন পেয়েছিল। আর সেখানে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩ টি আসনে বিজয়ী হয়। এটা সকলকে মনে রাখতে হবে। এখন বড় বড় কথা বলে, তারা ভোটের কথা বলে।
তিনি বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী, সংবিধান লঙ্ঘনকারী, সেনা আইন লঙ্ঘনকারী এক জেনারেলের পকেট থেকে যাদের জন্ম সেই বিএনপি ভোটের কি বোঝে, সে প্রশ্নও তিনি তোলেন। ক্ষমতায় বসে থেকে একদিকে সেনাপ্রধান এবং অপরদিকে রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে ‘হ্যাঁ’ ‘না’ ভোটের আয়োজন এর মাধ্যমে তার সময়ে বিভিন্ন প্রহসনের নির্বাচনের প্রসঙ্গও তিনি তুলে ধরেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর পকেট থেকে যাদের জন্ম তাদের সকল কাজই অবৈধ, কারণ তারা মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করে না।
তিনি সাম্প্রতিক রেলে অগ্নিসংযোগের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, কিভাবে রেলে আগুন দিয়ে তারা মানুষ পোড়ালো। মাতা শিশু সন্তানকে বাঁচানোর জন্য বুকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে সে অবস্থায় জ্বলে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গিয়েছে। হেলপার ঘুমিয়ে আছে আগুন দিয়েছে, হেলপার পুড়ে শেষ। ২০১৩ ও ১৪ সালে একই ঘটনা তারা ঘটিয়েছে। ছেলেকে ট্রাকে বসিয়ে রেখে বাবা গেছে মনে হয় পানি আনতে, সেই ট্রাকে আগুন দিয়েছে, ছেলে পুড়ে শেষ। সন্তান আগুনে ঝলসে যাচ্ছে বাবা কিছুই করতে পারছে না। এভাবেই সারা বাংলাদেশে তারা তান্ডব করেছে। সেই ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর নামে ৫৮২টি স্কুল, ৭০টি সরকারি অফিস, ছয়টি ভূমি অফিস এবং ৩২৫২টি গাড়ি, ২৯টি রেল, নয়টি লঞ্চ তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়েছিল। এমনকি জজের এজলাসেও তারা আগুন দেয়। ঝালকাঠিতে বোমা মেরে জজ হত্যা করল। গাজীপুরে আইনজীবীদের উপর বোমা হামলা চালালো, সেখানো আইনজীবীদেরকে তারা আহত করল। এটাই বিএনপির চরিত্র, আর এখন আবার শুরু করেছে অগ্নি সন্ত্রাস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাসে আগুন দিচ্ছে, গাড়িতে আগুন দিচ্ছে, রেলে আগুন দিচ্ছে। মানুষ যেন শান্তিতে চলাচল করতে পারে এজন্য সরকার নতুন রেলের কোচ ক্রয় করেছে, সেখানে আগুন দিচ্ছে। কারণ মানুষের শান্তি দেখলে ওদের মনে অশান্তি জাগে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘কুলাঙ্গার’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এই কুলাঙ্গার ২০০১ সালে হাওয়া ভবন খুলে খাওয়া শুরু করেছিল। তাকে খাওয়া না দিয়ে কেউ ব্যবসা পেতো না। তার খাওয়ার কোন শেষ ছিল না। খেতে খেতে সে সবই খেয়ে ফেলেছে। মানি লন্ডারিং, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার পলাতক আসামি এই তারেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আর রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল। আর সেখানে বসে এখন নির্বাচন বানচাল করা সহ মানুষ হত্যার হুকুম দিচ্ছে।
তিনি বলেন, তারা বলে তারা নাকি গণতন্ত্র দেবে যাদের জন্মই গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি তারা কিভাবে গণতন্ত্র দিতে পারে সে প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বাংলাদেশে দারিদ্রের হার আমরা ৪১ ভাগ থেকে ১৮ দশমিক ৭ ভাগে নামিয়ে এনেছি। মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৯৮ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছি, প্রবৃদ্ধি বাড়িয়েছি এমনকি কোভিড-১৯ এর সময় যখন বিশে^র অনেক উন্নত দেশের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়ে পড়েছিল তখনও আমরা ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। দেশের মানুষের উন্নয়নে দিন-রাত পরিশ্রম করেই আমরা একাজগুলো করে যাচ্ছি। রাস্তা-ঘাট, পুল, ব্রীজ সহ দেশের যে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নটা আমরা করেছি সেটা জনগণের মাথায় রাখতে হবে। সেটা মাথায় রেখেই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে হবে এবং জনগণের তথা ভোটারের অংশগ্রহণ থাকতে হবে।
তিনি বলেন,“আর উন্নয়নের ধারাটাকে যদি অব্যাহত রাখতে হয় তাহলে আওয়ামী লীগকেই সরকার গঠন করে জনগণের কল্যাণ সাধন করতে হবে।” বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মীপুর সদরে আম পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. রাকিব হোসেন নামে এক মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ৯ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মান্দারি ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গন্ধ্যব্যপুর আতর আলি ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদ মাদরাসার ছাদে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি ওই মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। কুশাখালি ইউনিয়নের মিডাইর খিল গ্রামের ইলিয়াস মৌলভি সাহেবের বাড়ির নুর আলমের ছেলে তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, শিক্ষক রাকিব হোসেন গাছ থেকে আম পাড়ার জন্য মাদ্রাসার চাদের উপর উঠেন। চাদের উপর দিয়ে একটি হাই ভোল্টেজের বিদ্যুতের লাইন ছিল। আম পাড়তে গিয়ে অসাবধানতাবসত তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এতে সেখানেই মারা যান তিনি। মান্দারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ফরিদপুরের সদরপুরে শ্বশুরবাড়ি থেকে বিদ্যুৎ বিল দিতে গিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন হাসি বেগম নামে এক গৃহবধূ। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গা উপজেলায় পাওয়া যায় এক নারীর অর্ধগলিত লাশ। লাশটি হাসি বেগমের বলে শনাক্ত করেন তার মা। পরে ওই লাশ দাফন করে হাসি বেগমের পরিবার। এদিকে দাফনের পাঁচ দিন পর হাসি বেগমকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
সোমবার সদরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে হাসি বেগমকে আটক করে সদরপুর নিয়ে আসেন। হাসি উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শৌলডুবী গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৮ বছর আগে উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বড় বাড়ির মৃত শাহ আলম শেখের ছেলে মোতালেব শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় হাসি বেগমের। তাদের সাত বছর বয়সি একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার জন্য শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
এ ঘটনায় হাসি বেগমের বাবা শেখ হাবিবুর রহমান গত ১১ সেপ্টেম্বর সদরপুর থানায় একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তার মেয়ে হাসি বেগমকে হত্যা করে লাশ গুম করেছেন জামাতা মোতালেব শেখ। এর দুই দিন পর গত ১৪ সেপ্টেম্বর মোতালেব সদরপুর থানায় পালটা একটি অভিযোগ দেন। ওই অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, হাসি বেগম নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়ি পালিয়ে গেছেন।
এরপর বুধবার সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার কচুরিপানার ভেতর থেকে এক নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে হাসি বেগমের মা সালমা বেগম ওই লাশটি হাসির বলে শনাক্ত করেন। এরপর ময়নাতদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়ার পর শৌলডুবী কবরস্থানে ওই লাশ দাফন করা হয়।
এদিকে পালটাপালটি অভিযোগের তদন্ত চলা অবস্থায় শনিবার হাসি বেগম ফোন করে তার বাবা-মাকে জানান তিনি জীবিত আছেন। এরপর সোমবার সদরপুর থানার পুলিশ হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. খবির মোল্যা বলেন, এ রকম খবর শুনেছি। তবে বিস্তারিত তেমন কিছু জানি না।
এ বিষয়ে সদরপুর থানার ওসি মো. মামুন আল রশিদ বলেন, হাসিকে নান্দাইল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনই এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো সম্ভব নয়। ঘটনাটি ভাঙ্গা ও সদরপুর থানার। ফলে সব তথ্য পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।