চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদুল আযহা সামনে আখাউড়ায় পশু পালনে ব্যস্ত রয়েছেন কৃষক ও খামারিরা। ছোট বড় খামারি ও কৃষকরা গরু, ছাগল, মহিষ, পালন করছেন তারা। তবে এবছর চাহিদার চেয়ে অনেক কম পশু পালন হচ্ছে। গো-খাদ্যসহ অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল্য ভালো পেলে কোরবানির পশু বিক্রি করে লাভবান হবার আশা করছেন খামারিরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৪ হাজার ৭০৩টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এরমধ্যে গরু-মহিষ ৩ হাজার ৬৬০, ছাগল-ভেড়া ১ হাজার ৪৩টি।
আখাউড়া উপজেলায় নিয়মিত খামারী আছে ৭০৪ জন। এছাড়াও অনিয়মিত খামারী স্বল্প সময়ে বিক্রির জন্য পশু প্রস্তুত করছে বলে জানা যায়। পশু পালন লাভজনক হওয়ায় অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে গরু পালন করছেন। এবছর আখাউড়া উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১১ হাজারের বেশি। এরমধ্যে গরু-মহিষ ৮ হাজার ৯০০টি এবং ছাগল-ভেড়া ২ হাজার ৫০০টি । বাইরের জেলা-উপজেলা থেকে আনীত পশুর মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করা হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকায় সদর উপজেলাসহ অন্যান্য স্থান থেকে পশু আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সরেজমিনে কয়েকটি খামার ঘুরে খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঈদকে উপলক্ষে গরু লালন পালন করছেন। ঘাস, খড়, খৈল ভুষিসহ পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে দেশীয় জাতের গরুই বেশী লালন পালন করছেন বেশি। আশা করছেন লাভবান হবেন।উত্তর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের প্রবাস ফেরত খামার মালিক রবিউল্লাহ বলেন, তার প্রবাসী বড় ভাই মো. হাবিব বিগত ৫ বছর আগে শখ করে কয়েকটি গরু দিয়ে খামার শুরু করেন। দেশে ফিরে রবিউল্লাহ এখন খামারটি পরিচালনা করছেন। বর্তমানে ২৫টি বড় গরু রয়েছে। দেড় বছর আগে পাবনা থেকে গরুগুলো কিনে এনেছিলেন। দেড় বছর লালন পালন করেছেন। গরু কেনা, শ্রমিকের বেতন, লালান পালন, খাবারসহ অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। আশা করছেন খরচ বাদ দিয়ে ৭/৮ লাখ টাকা লাভ হবে।
দক্ষিণ ইউনিয়নের বঙ্গের চর গ্রামের মো. ইছহাক মিয়া জানান, তিনি বিগত ৫ বছর ধরে গরু লালন পালন করেন। কোরবানিকে সামনে রেখে তার খামারে ২২টি ছোট বড় গরু রয়েছে। দেশী জাতের পাশাপাশি, শাহিওয়াল, ফ্রিজিয়াম জাতের। ঘাষ, খের, ভূষি ইত্যাদি খাবার খাওয়ান তিনি। ভালো দাম পেলে লাভবান হবার আশা করছেন তিনি।
আব্দুল্লাহপুর গ্রামের খামার মালিক সোহাগ ভূঁইয়া বলেন, প্রতিবছরই কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে গরু লালন পালন করি। তবে এবার ছোট বড় ১২টি গরু লালন পালন করছেন। আশা করছেন তিনি লাভবান হবেন।
আখাউড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জুয়েল মজুমদার বলেন, এপ্রিল/২৪ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে আখাউড়া উপজেলায় ৪ হাজার ৭০৩টি পশু লালন পালন হয়েছে। উপজেলায় গরু-মহিষের চাহিদা প্রায় সাড়ে ১১ হাজার। খামারিদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি খামারিদের সচেতন ও তদারকি করছি। মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার না করে দেশীয় খাবার খাইয়ে পশু পালনের জন্য কৃষক ও খামারীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
আখাউড়ায় তিতাস নদীর চরে গরু চড়াতে গিয়ে পশুর গুতোয় ইয়াদ মোল্লা খাদেম (৬৫) নামে এক কৃষকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ ২৮ মার্চ শুক্রবার বেলা ৩ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ইয়াদ মোল্লা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরশহরের খড়মপুরের বাসিন্দা। তবে মৃত্যুর ঘটনায় দুরকম তথ্য পাওয়া গেছে। পরিবারের দাবি মহিষ গুঁতো দিয়েছে, কেউ বলছে নিজ ষাঁড়ের গুতোতে মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে গেছে।
জানা গেছে, ইয়াদ মোল্লা খাদেম দীর্ঘদিন ধরে গরু লালন পালন করতেন। সকালে গরু চড়াতে নিয়ে যান। আড়াইটা থেকে ৩ টার মধ্যে পশুর গুতোয় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। এসময় কেউ পাশে ছিল না।
নিহতের ছেলে অপূর্ব মোল্লা খাদেম বলেন বাবা সকালে আব্বা গরু চড়াতে যায়। দুপুরের পরে খবর পাই পশুর গুতোয়া আব্বা মারা গেছেন। ঘটনাস্থলে মহিষ ছিল। মহিষে গুতো দিয়েছে বলে ধারনা করছি।
আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহনূর ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। তবে ঘটনাটি সদর থানা এলাকায় হওয়ায় সেখানকার পুলিশকে অবগত করতে বলেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন জানান, তাকে কেউ এখনও বিষয়টি জানায়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের ফাঁসি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের বিচার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে নির্যাতিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলাবাসীর আয়োজন রেলওয়ে স্টেশনের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আখাউড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ জয়নাল আবেদীন আবদুর সভাপতিত্বে ও পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ আক্তার হোসেন খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ডাঃ খোরশেদ আলম, পৌর বিএনপির আহবায়ক মোঃ সেলিম ভূইয়া, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসান সানী, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি বাহার মিয়া, বিএনপি নেতা শেখ জীবন, মহিলা দলের নেত্রী অন্তুরা বেগম, আবু বকর প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বিগত ১৫ বছর স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে মানুষের বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার ছিলোনা। সারা দেশের মতো কসবা-আখাউড়ায় বিএনপি অসংখ্য নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। গুম, খুন করেছে। সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের নির্দেশে ২০১৪ সালে উপজেলা নির্বাচনের দিন তারাগন ভোটকেন্দ্রে পৌর যুবদলের সহ-সভাপতি হাদিস মিয়াকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
আওয়ামীলীগ আমলে আখাউড়ায় ক্রস ফায়ার দিয়ে মানুষকে হত্যা করেছে।
তারা লুটপাট ও জনগনের জায়গা জমি দখল করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছে। মানববন্ধনে উপজেলার মনিয়ন্দ গ্রামের নিহত রহিজ মিয়ার স্ত্রী খাদিজা ও তার ছেলে অভিযোগ করেন আনিসুল হকের নির্দেশে সাদা পোষাকে রহিজ মিয়াকে ধরে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে ক্রয় ফায়ার দিয়ে হত্যা করা হয়। তারা রহিজ হত্যার বিচার চান।
মানববন্ধনে হত্যা, মামলা-হামলায় নির্যাতিত পরিবারের সদস্য, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় মেয়ের সঙ্গে অভিমান করে জালাল মিয়া (৪৫) নামে এক ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন।
আজ ১৬ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকাল ৫টার দিকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় জালাল মিয়ার মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের মনিয়ন্দ গ্রামে বিষপানের এ ঘটনা ঘটে। নিহত জালাল মিয়া একই গ্রামের তুফানী বাড়ির মৃত সারু মিয়ার ছেলে।
নিহত জালাল মিয়ার ছেলে তানভীর জানান, শনিবার সন্ধ্যার দিকে তারা বাবা জালাল মিয়া তার মেয়ে জিন্নাতকে কলা ও রুটি কিনে খাওয়ার জন্য ২০ টাকা দিয়েছিল। পরে জিন্নাতের ছোটবোনকে দিয়ে ২টি কলা ও ২টি রুটি কিনেন। কলাটি পঁচা হওয়ায় জিন্নাত তার বাবা জালাল মিয়ার সামনে ঢিল দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এতে জালাল মিয়া খুব কষ্ট পায়। পরে ঘরে রাখা গাছের পোকামাকড় মারার বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে জালাল মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে বিকাল ৫টার দিকে সে মারা যায়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসলাম হোসাইন জানান, হাসপাতাল থেকে জেনেছি এক লোক বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে। আখাউড়া থানাকে জানানো হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে রাখা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ১৫০জন শীতার্তের গায়ে শীতবস্ত্র কম্বল জড়িয়ে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা। তিনি গত সোমবার রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে উপজেলার মোগড়া বাজার, আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন, খড়মপুর মাজার, আজমপুর রেলওয়ে স্টেশনে থাকা অসহায় ও ছিন্নমূল ১৫০ জন শীতার্তের শরীরে কম্বল জড়িয়ে দেন। এ সময় শীতার্তরা কম্বল পেয়ে সরকার ও ইউএনও’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। কম্বল বিতরণকালে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাপস চক্রবর্তী জানান, গত ৪-৫ দিন ধরে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট বেড়ে যায়। তাই স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে আসা কম্বল রাতের বেলা বিতরণ করা হয়। তিনি বলেন, সোমবার রাত পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায় তিন হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, আখাউড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজলসহ চারজনের নামে মামলা হয়েছে। ২০১৮ সালে হওয়া আমীর খা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আখাউড়া) আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের শিকার উপজেলার চানপুর গ্রামের আমীর খার স্ত্রী লাকী বেগম বাদী হয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অন্য দু’জন আসামী হলেন আখাউড়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন তরফদার ও এস. আই আব্দুল হালিম। আদালত এক আদেশে এ সংক্রান্ত কোনো মামলা থানায় আছে কিনা এর নথি তলব করেছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, তাকজিল খলিফা কাজল চানপুর এলাকার তার মালিকাধীন একটি বাড়িতে প্রায়ই অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হতেন। এ ঘটনায় বাঁধা দেন আমীর খা। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হন। ২০১৮ সালের ২১ মে আনিসুল হক ও তাকজিল খলিফার নির্দেশে দুই পুলিশ কর্মকর্তা এসে আমীর খানকে নিয়ে যান। ২৫ মে উপজেলার বনগজ এলাকায় আমীর খার লাশ পাওয়া যায়। দুই পুলিশ কর্মকর্তা গুলি করে এ হত্যাকান্ড ঘটায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।