চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গণমানুষের নেতা, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতাচ্যুত বা পড়ে যাওয়ার কোন শঙ্কা নেই। আমরা বেশ মজবুতভাবেই আছি। তবে দেশি বিদেশি চক্রান্ত আছে। তিনি বলেন, আমরা আগে দেখতাম বিএনপি তিন বেলা সরকার পতন করতো। এখন এক বেলা সরকার পতনের কথা বলে।
আজ ১ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, আমাদের (সরকারের) ট্যাকনিক্যাল ভুল থাকতে পারে। তবে জ্ঞানত কোনো অন্যায় করিনি। আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। আন্দোলনটা কোটায় নেই। সেটা কোন দিকে গেছে সবাই দেখেছে। ইংরেজিতে আন্দোলনের ভাষা কেন? টোটাল সাটডাউন, কমপ্লিট সাটডাউন নামে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। তার মানে বুঝতে হবে বিদেশিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এটা করা হচ্ছে। এতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রয়েছে।
তিনি বলেন, এক ভদ্রলোক ভারতে বসে বলেছেন আপনারা হস্তক্ষেপ করেন এবং নির্বাচন দেয়ার ব্যবস্থা করেন। তখন সেখানে ভারতীয় সাংবাদিকরা বলেছেন, আপনার এ কথাটা ভারতে বসে বলা ঠিক হয়নি। নিজের দেশের সমস্যা বাইরের দুনিয়াকে বলি না আমরা।
তিনি বিদেশী শক্তির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ইসরাইল আমাদের বলেছিল, যে আমরা যদি শুধু অনুরোধ করি তাহলে শেখ মুজিবের হত্যাকারীরা কে কোথায় আছে তাদেরকে একদিনে সাবার করে দিবো। তখন আমরা বলেছি যে আমরা আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে কোথাও যাব না।
বিএনপির সরকার উৎখাত প্রসঙ্গ টেনে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, তারা তো সরকার প্রতিদিনই উৎখাত করেন। গত ২০১৪ সালের পর থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ তার বন্ধুরা প্রতিদিন একবার করে সরকার উৎখাত করেন। মাঝে মাঝে তিন বেলা সরকার উৎখাত করেন তারা। একবার ফখরুল ইসলাম আলমগীর, একবার আমির খসরু আরেকবার রিজভি সাহেব। তারা প্রতিদিনই সরকার পতন করছেন। এটা চলতেই থাকবে।
এবার আন্দোলনের সময় বলা হয়েছে, হাসিনাকে নিয়ে হেলিকপ্টার চলে গেছে। এখন আপনারাই দেখেন হাসিনা কোথায় আছে। এত দরদী মানুষ বাংলাদেশে আছে তারা তো কেউ হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের দেখেনি। শেখ হাসিনা হাসপাতালে যাচ্ছেন রোগীদের দেখছেন। এখানে পুলিশের গুলিতে কেউ আহত হলে তো মির্জা ফখরুল ইসলাম হাসপাতালে গিয়ে দেখার তার দায়িত্ব ছিল। যারা বিবৃতি দিয়েছিলো তাদেরও দায়িত্ব ছিল।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের কিছুই হবেনা, সরকার থাকবে। আমরা যথেষ্ট মজবুত ভাবেই আছি। আমরা আমাদের স্বাভাবিক কাজ করে যাচ্ছি, শেখ হাসিনাও স্বাভাবিক কাজ করে যাচ্ছেন। কোটা আন্দোলন নিয়ে তার নিজ জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোন ধরনের সহিংসতা না হওয়ায় তিনি জেলাবাসীকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় মন্ত্রীর সাথে ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি হাজী মোঃ হেলাল উদ্দিন, পৌর সভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন শোভন প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী উপহার দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের (৬০ বিজিবি) আয়োজনে মঙ্গলবার বিকালে আখাউড়া ও কসবার সীমান্তবর্তী চন্ডিদ্বার বিওপি’র এলাকার ঝাঠুয়ামোড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ১০০ জন অসহায়-দুস্থ পরিবারের মাঝে শুকনা খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
প্রত্যেককে পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি ডাল, এক কেজি তেল, এক কেজি চিনি ও দুই কেজি আলু দেওয়া হয়। এসময় সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মুহাম্মদ আশিক হাসান উল্লাহ, পিএসসি বলেন, আমরা খুবই ভাগ্যবান যে আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এঁর মত একজন নেতা পেয়েছিলাম। যার কারণে আজ আমরা একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্ববাসীর নিকট মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছি। এ রকম মহান নেতা একশ বছরে অথবা হজার বছরে একজন জন্ম গ্রহণ করে থাকেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি কথা আমাদের জন্য অনুকরণীয় এবং অনুস্বরণীয়। আমরা সীমান্ত রক্ষার মহান দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছি। সীমান্ত রক্ষী বাহিনী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া উপদেশ ও নির্দেশ আমরা যথাযথভাবে পালন করেতে পারলে আজকের অনুষ্ঠানের সার্থকতা।
তিনি জানান, সীমানা ঘেঁষা মানুষদের অনেকেই বেশ গরীব। এ কারণেই আমরা শহর থেকে দূরের এলাকা বেছে নিয়েছি। আমাদের এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
খাদ্য সামগ্রী বিতরণের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের উপ অধিনায়ক মেজর এ. এম. জাবের বিন জব্বার, পিএসসি, চন্ডিদার বিওপি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার হারুনুর রশিদ প্রমুখ।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি) এ বাদ ফজর হতে কোরআন খতম করা হয়। মসজিদে জোহর নামাজের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ শাহাদাত বরণকারী পরিবারবর্গের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রিভিলি হতে রিট্রিট পর্যন্ত ব্যাটালিয়নের সকল স্থাপনায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় এবং কর্মরত সকল সদস্য কালো ব্যাজ পরিধান করে। এসব খাদ্যসামগ্রী পেয়ে খুশি আব্দুল ক্দ্দুুস নামে বৃদ্ধ বলেন, বিজিবির এ সহযোগিতা আমাদের খুব উপকারে আসবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন জাহানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিভিন্ন সময়ে মাদকসহ বিভিন্ন আলামতের নিস্পত্তিকৃত মামলার পৌনে ৪কোটি টাকার মাদক ও বিভিন্ন আলামত কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
৮ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় কুরুলিয়ার পাড়ে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সম্মুখে আধুনিক চুল্লি এবং ভারী যান (ভোল্ডোজার) ব্যবহার করে বিভিন্ন মাদক ও আলামত ধ্বংস করা হয়।
এসময় আলামত ধ্বংস কমিটির চেয়ারম্যান অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া আক্তার, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট স্বাগত স্বাম্য, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আলম, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাখাওয়াত হোসেন, আদালতের পুলিশ পরিদর্শক হাবিবুল্লাহ, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও নাজির সুমনময় চৌধুরী এবং মালাখানার দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ উপ-পরিদর্শক যোবাইদুল হাসান ভূইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ধ্বংসকৃত মাদক ও আলামতের মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ১শত ৪ কেজি ১৩০ গ্রাম গাঁজা, ৫২ হাজার ৮শত ৪৮৯ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২শত ৯২ বোতল ফেন্সিডিল, ২হাজার ৩শত ১৯ বোতল স্কফ সিরাজ, ৪শত ৯৮ বোতল বিদেশী মদ, ৩১ লিটার চোলাইমদ, ৪টি বিয়ার ক্যানসহ অন্যান্য ১০৪পিস।
চলারপথে রিরেপার্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা রেস্তরা মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ শাহআলম (৫৫) এবং পৌর ছাত্রলীগের সদস্য শাকিবুল চৌধুরী অন্তর (২০) কে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
আজ ২ অক্টোবর বুধবার দুপুরে পৃথক অভিযানে শহরের কাউতলী এলাকা থেকে মোঃ শাহআলম এবং মধ্যপাড়া বর্ডার বাজার এলাকা থেকে শাকিবুল চৌধুরী অন্তরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত শাহ আলম পৌর এলাকার কাউতলী গ্রামের মরহুম আবদুল মালেক সর্দারের ছেলে এবং শাকিবুল চৌধুরী অন্তর মধ্যপাড়া (বর্ডার বাজার) এলাকার শফিকুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে। মোঃ শাহআলম বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বুধবার বিকেলে জেলা পুলিশ মিডিয়া উইংস থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গ্রেফতারকৃত দুজন গত ৪ ও ৫ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত ছিলেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেন বলেন, গ্রেফতারকৃত শাহ আলম ও অন্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার এজাহারনামীয় আসামি। বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রম্য লেখক, নাট্যব্যক্তিত্ব ও ঔপন্যাসিক পরিমল ভৌমিকের নতুন বই ‘রাক্ষুসে বিলাপ’ উপন্যাসের মোড়ক উন্মোচন ও পাঠচক্র অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকালে চেতনায় স্বদেশ গণগ্রন্থাগারের আয়োজনে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের হল রুমে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
চেতনায় স্বদেশ গণগ্রন্থাগারের সভাপতি ও কথা সাহিত্যিক আমির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার মোঃ আবদুল কুদ্দূস।
সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন সাহিত্য একাডেমির সভাপতি, কবি ও গবেষক জয়দুল হোসেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম লিমন, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট অঞ্চল) সাংবাদিক মোঃ মনির হোসেন।
সভায় ‘রাক্ষুসে বিলাপ’ উপন্যাসের উপর বিষয় ভিত্তিক আলোচনা করেন সাহিত্য একাডেমির সহ-সভাপতি কবি ও কথাসাহিত্যিক অ্যাডভোকেট মানিক রতন শর্মা, তিতাস সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের উপদেষ্টা মোঃ আব্দুর রহিম, আশুগঞ্জ ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক এম.এ হানিফ, জেলা পাবলিক লাইব্রেরির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল আলম বাবু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কবি পরিষদের সভাপতি, কবি ও গল্পকার শৌমিক ছাত্তার।
ঝিলমিল একাডেমির পরিচালক মনিরুল ইসলাম শ্রাবণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের চিকিৎসক মোঃ আব্দুল মতিন (সেলিম)।
সভায় বক্তারা বলেন, পরিমল ভৌমিক একজন নির্ভেজাল মানুষ। তিনি একজন সজ্জন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। পেশায় শিক্ষক হয়ে পড়ন্ত বয়সেও পরিমল ভৌমিকের গীতিশীল লেখালেখি তরুণ লেখকদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা যোগাবে।
উল্লেখ্য ‘রাক্ষুসে বিলাপ’ পরিমল ভৌমিক ভৌমিকের প্রকাশিত সপ্তম বই (দ্বিতীয় উপন্যাস)। তাঁর বেশ প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থ সমূহ হলো- বহু রূপি ভূত (২০০৮) দৈত্য দানব ভূত (২০০৯), ১০টি রম্য রচনা (২০১০), ‘নাম ফাটুক-মনে কিছু কইরেন না’ (রম্য রচনা-২০২০), ভৌতিক গল্প ‘ভূত গবেষণা ইনস্টিটিউট’ (২০২১) ‘কাহিনির শেষ পাতায়’ (উপন্যাস-২০২২) ‘রাক্ষুসে বিলাপ’ (উপন্যাস-২০২৩) বইগুলো প্রকাশ করেছে জ্ঞানজ্যোতি প্রকাশনী, ঢাকা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি গঠন নিয়ে দুই-গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল হাসান ও সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। দুই মামলায় ৮২জন নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়।
এস.আই রাকিবুল হাসানের দায়েরকৃত মামলায় জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদ, জেলা কৃষকদলের আহবায়ক আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফ ওরফে ভিপি শামীম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েল, সাবেক সদস্য সচিব মহসীন মিয়া, যুবদল কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তাজুল ইসলাম (ভিপি তাজু), জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শাহীনুর রহমান শাহীন, সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক ও পৌর কাউন্সিলর কাউছার মিয়া, যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রুমেল উদ্দিন, আশুগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আলমগীর খাঁ, সদস্য সচিব সেলিম পারভেজ, সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শেখ জামাল হোসেন লস্কর ও যুগ্ম আহবায়ক শেখ জুনায়েদ আহমেদ উল্লেখযোগ্য। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ১৩০ থেকে ১৫০জনকে আসামী করা হয়েছে।
এস.আই সাইফুল ইসলামের দায়েরকৃত মামলায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েল, সাবেক সদস্য সচিব মহসীন মিয়া, বর্তমান আহবায়ক শাহীনুর রহমান শাহীন, সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী, যুবদল নেতা তাজুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদ, পৌর বিএনপির সভাপতি নজির আহাম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, জেলা কৃষকদলের আহবায়ক আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফ, আশুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মারুফ আহম্মেদ ও যুগ্ম আহবায়ক মোঃ নাঈম, আশুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আল আরাফাত উল্লেখযোগ্য। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ৫০-৬০জন নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদ মর্যাদা) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে শাহীনুর রহমান শাহীনকে আহবায়ক ও সমীর চক্রবর্তীকে সদস্য সচিব করা হয়। ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে ৫জনকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে। এরা হলেন এলভিন লস্কর, সাজিদ আহমেদ, রেজাউল হক শীষ, আবদুল গাফফার রিমন ও সাইফুল ইসলাম ফাহিম।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ৭ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেন। কমিটিকে আগামী ১ মাসের মধ্যে আহবায়ক কমিটিকে পূর্নাঙ্গ কমিটি করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেয়া নির্দেশ দেয়া হয়।
আহবায়ক কমিটিতে পদ পাওয়া ছাত্রদলের নেতারা সবাই লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী আবদুর রহমান ওরফে সানির বড় ভাই কবির আহমেদ ভূঁইয়ার অনুসারী। কবির আহমেদ ভূইয়া সদর উপজেলার বরিশল গ্রামের বাসিন্দা।
গত রবিবার রাতে প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সোমবার সকাল ১০টা শহরের লোকনাথ উদ্যানের সামনে (টেংকেরপাড়) সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রদলের কমিটি আনন্দ মিছিল ও সদ্য বিদায়ী কমিটি সীমাহীন লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
পাল্টা-পাল্টি কমিটির ঘোষনা হওয়ায় সোমবার সকালে বিপুল সংখ্যক পুলিশ লোকনাথ উদ্যান (টেংকেরপাড়) মোতায়েন থাকায় সদ্য ঘোষিত কমিটির নেতৃবৃন্দ ও তাদের অনুসারীরা সোমবার সকাল ১০টার দিকে বিরাসার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ছাত্রদলের নেতা কর্মীরাও সেখানে এসে জড়ো হয়।
পরে সেখান থেকে একটি আনন্দ মিছিল বের করার প্রস্তুতি নেয়ার সময় বেলা ১১ টার দিকে জেলা ছাত্রদলের সদ্য বিদায়ী কমিটির আহবায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েলের নেতৃত্বে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সেখানে গিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ শুরু করে। তখন সদ্য ঘোষিত কমিটির নেতৃবৃন্দ ও তাদের অনুসারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় প্রায় ২০ মিনিট কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সদ্য ঘোষিত কমিটির অনুসারীরা পুনরায় জড়ো হয়ে বিক্ষুব্ধদের ধাওয়া করে। সেখান থেকে দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা পুনরায় খৈয়াসার-বিরাসার সড়কে আসার পর আবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় উভয় গ্রুপের নেতা-কর্মীরা পুনরায় ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটাতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
পরে জেলা ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটি, জেলা কৃষক দল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা শহরের মধ্যপাড়ার শান্তিবাগ এলাকায় একটি আনন্দ মিছিল বের করে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি নিয়ে সোমবার নতুন কমিটি ও আগের কমিটির নেতাকর্মীদের মধ্যে হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। সোমবারের ঘটনায় নতুন করে আরো দুটি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট তিনটি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত মামলার ৭ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।