ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাত থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করে। ফলে নতুন করে আর কোনো গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়নি।
এছাড়া হাওড়া নদীর পানিও কমতে শুরু করেছে। তবে এখনও পর্যন্ত পানিবন্দী অবস্থায় আছে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ। চুলা ডু্বে যাওয়ায় রান্না করতে না পেরে শুকনো খাবার খেয়ে দিন কাটছে তাদের।
ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি ও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে গত ২১ আগস্ট আখাউড়া উপজেলার বঙ্গেচর, আব্দুল্লাহপুর, খলাপাড়া, বাউতলা, আড়িয়ল ও কালিকাপুরসহ প্রায় ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। পর দিন ২২ আগস্ট পরিস্থিতির অবনতি হলে নতুন করে আরও অন্তত পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
এছাড়া আখাউড়া উপজেলার কর্ণেল বাজার ও খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর দু’টি বাঁধ ঢলের পানির তোড়ে ভেঙে যায়। এতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়।
তবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে পাহাড়ি ঢলের পানির বেগ কমায় এবং বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে। দুর্গত এলাকাগুলো থেকে সরতে শুরু করেছে পানি। তবে পানি পুরোপুরি না সরায় মানুষজনের দুর্ভোগ কমেনি।
আখাউড়ার মোগড়া ইউনিয়নের খলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা নারগিস আক্তার জানান, গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে পানির তোড়ে তাদের বসতঘর ভেসে যায়। কোনো জিনিসপত্রই রক্ষা করতে পারেননি। বর্তমানে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। পানিতে ঘরের জায়গার মাটি সরে যাওয়ায় নতুন করে ঘরও বানাতে পারবেন না।
আবুল কাশেম নামে ব্যক্তি বলেন, ‘ঘর থেকে পানি নেমে গেলেও বাড়ির উঠানে পানি জমে আছে। এর ফলে বাড়ি থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। বাড়ির শিশুদের নিয়ে দুশ্চিন্তা বেশি, কখন পানিতে পড়ে বিপদ ঘটে।’
এদিকে হাওড়া নদীর পানিও কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর আহমেদ জানান, গতকাল রাত থেকে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত হাওড়া নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার কমেছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। দুর্গত এলাকায় প্রশাসন থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে। এছাড়া পানি কমে গেলে ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামত করে যান চলাচলের উপযুক্ত করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
১৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসটি বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে গাঁথা থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন।
আজ ১৭ মে শুক্রবার সকালে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া রেলওয়ে জংশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তিনি সকালে মহানগর প্রভাতী ট্রেনে করে ঢাকা থেকে নিজ সংসদীয় এলাকায় আসেন।
এদিকে দুপুরে আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামে বনগজ-কৃষ্ণনগর সড়কের তিতাস নদীর উপর নির্মাণাধীন ব্রীজের কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘বিএনপি তাদের শাসনামলে যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার আলবদরদের সাথে নিয়ে পাকিস্তানের দালাল হয়ে বাংলাদেশের জনগণকে শোষণ ও অত্যাচার করত। এখন যে সময়ে জনগণের উন্নয়ন হচ্ছে তা মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির সহ্য হচ্ছে না। সেজন্য এখন তাদের মাথা খারাপ হয়েছে।’ বিএনপির আমলে ঋণ খেলাপির তালিকা সবচেয়ে বেশি ছিলো বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ বোরহান উদ্দিন, উপজেলার আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন বাবুল, সেলিম ভূইয়া, গোলাম সামদানি ফেরদৌস, আব্দুল মমিন বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে আটকা পরে কারাভোগ শেষে ১১ জন বাংলাদেশী নাগরিক দেশে ফিরে এসেছে। আজ ১৫ মে বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। ভারতের ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় দেশে ফিরে আসে বাংলাদেশী নাগরিকরা। দালালের মাধ্যমে ভারতে পাচারের শিকার হয়ে সে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ৮/৯ মাস কারাভোগ করেছেন তারা।
বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনকৃতরা হলেন কুমিল্লার ফারজানা আহমেদ নিপা, ফেনীর মো: ইব্রাহিম, বাগেরহাটের হেলাল জমদ্দার, রাজশাহীর মো: আকরামুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের কবীর শেখ, রাহুল শেখ, মোঃ আশরাফুল হক, সুমন রানা, বদরুল ইসলাম, মোঃ আব্দুল মান্নান, মোঃ রুহুল আমিন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার আগরতলাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনের প্রথম সচিব আলমাস হোসেন, কনসুলার এসিস্টেন্ট ওমর শরীফ , আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জি এম রাশেদুল ইসলাম, ইমিগ্রেশন ওসি আব্দুস সাত্তার, আখাউড়া থানার ওসি মোঃ ছমিউদ্দিন, আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার মোঃ মুখলেছুর রহমান, ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সিনিয়র অফিসার মোঃ শিহাবুল হোসেন প্রমুখ।
ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনের প্রথম সচিব আলমাস হোসেন, কনসুলার এসিস্টেন্ট ওমর শরীফ বলেন, বাংলাদেশী নাগরিক ৭/৮ মাস আগে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়। আদালতের মাধ্যমে কারাভোগ শেষে তাদেরকে ত্রিপুরায় অস্থায়ী ডিটেনশন সেন্টারে রাখায় হয়। পরে আমরা জানতে পেরে বাংলাদেশ সরকারকে তাদের নাম ঠিকানাই পাঠাই। তাদের নাগরিকত্ব যাচাই শেষে ১১ জন বাংলাদেশী নাগরিগকে আমরা প্রত্যাবশনের ব্যবস্থা করি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে অভিযান চালিয়ে বিদেশি মদসহ শেখ আবুল হায়াত নামে এক ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে পুলিশ।
আজ ২২ নভেম্বর শুক্রবার সকালে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা করাগারে পাঠানো হয়। এর আগে, বৃহস্পতিবার বিকেলে স্টেশনে অভিযান চালিয়ে চার বোতল বিদেশি মদসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ব্যাগে একটি ভারতীয় পাসপোর্ট পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত শেখ আবুল হায়াত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার খড়গ্রাম থানার হাজেরাবাটি (মসজিদপাড়া) গ্রামের শেখ মনিরুলের ছেলে।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন খন্দকার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিকেলে ভারতীয় ওই যুবক রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসময় তার গতিবিধি দেখে টহল পুলিশের সন্দেহ হয়। একপর্যায় পুলিশ তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে চার বোতল বিদেশি মদ উদ্ধারসহ তাকে গ্রেফতার করে। ওসি আরো জানান, এ বিষয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও চোরাচালানের অভিযোগ একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সকালে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা করাগারে পাঠানো হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যেকোনো মূল্যে অপরাধ নির্মূল করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
৪ বছর আগে আখাউড়ায় ছাত্র অধিকার পরিষদের শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে হামলার অভিযোগে আখাউড়া থানায় মামলা হয়েছে। আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাদী হয়ে ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে শনিবার সন্ধ্যায় আখাউড়া থানায় মামলা করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের মেড্ডা এলাকার বাসিন্দা তিনি। এ ঘটনায় রাতেই এজহারারভূক্ত আসামী জালাল সরকারকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি উপজেলার মনিয়ন্দ গ্রামের বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগের সমর্থক।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল হাসিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর ছাত্র অধিকার পরিষদ জেলা শাখার নেতাকর্মীরা আখাউড়ায় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করার সময় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা করে মারধর করে কম্বল ছিনিয়ে নেয়। হামলাকারীরা আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় ওই সময় মামলা করা সম্ভব হয়নি। মামলার বাদী তৎকালীন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, শনিবার মামলা করেছি। আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল হাসিম বলেন, মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলসহ ২৫ জনকে আসামি করেছে। অজ্ঞাত নামা ৬০-৭০ জনের নাম রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা ও আখাউড়ায় সাবেক আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হকের গ্রেপ্তারে আনন্দ মিছিল ও কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন উপজেলা বিএনপি ও অংগ সংগঠন।
আজ ১৪ আগস্ট বুধবার দুপুরে কসবা পৌরশহরে এসব কর্মসুচি পালন করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। দুপুরে কসবা উপজেলা সদরের সুপার মার্কেট থেকে আনন্দ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি কসবা পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় উপজেলা সুপার মার্কেট চত্বরে এসে শেষ হয়।
উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক এডভোকেট ফখর উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শরীফুল হক স্বপন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ ইলিয়াছ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ইকলিল আজম, উপজেলা বিএনপি’র কার্যনির্বাহী সদস্য ও যুবদলের সাবেক আহবায়ক মো. কামাল উদ্দিন, উপজেলা যুবদল আহবায়ক মো. মাসুদুল হক ভুইয়া দীপু, সদস্য সচিব মো. জিয়াউল হুদা শিপন, পৌর বিএনপির আহবায়ক মো. শরীফুল ইসলাম ভূইয়া, সদস্য সচিব মো. আইয়ুম খান, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান রুবেলসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের গ্রেপ্তারের খবরে তার নিজ এলাকা কসবায় তাৎক্ষণিকভাবে বিএনপির উদ্যোগে আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ এবং কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে।
এসময় তারা আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ফাঁসি দাবি করেন। এদিকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের গ্রেপ্তারের সংবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আনন্দ মিছিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটায় পৌরশহরের সড়ক বাজার তিন রাস্তার মোড় থেকে মিছিলটি বের হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রেলওয়ে স্টেশন রোডে পথসভা করে।
বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ জয়নাল আবেদীন আব্দু, সদস্য সচিব ডাঃ খোরশেদ আলম ভূইয়া, পৌর বিএনপির আহবায়ক মেঃ সেলিম ভূইয়া, সদস্য সচিব মোঃ আক্তার খান, যুবদলের আহবায়ক মো: জাকির হোসেন, সদস্য সচিব মো: মহসিন ভূইয়া, পৌর যুবদলের আহবায়ক মেঃ জাবেদ আহমেদ, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসান সানী প্রমুখ। বক্তারা আনিসুল হকের ফাঁসির দাবি জানান। সভা শেষে আনিসুল হকের কুশপুত্তলিকায় আগুন দেয়া হয়।