চলারপথে রিপোর্ট :
কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক কে এম মামুন অর রশীদ আজ ২৪ আগস্ট শনিবার নবীনগর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এসময় তিনি দেশে বন্যা কবলিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে সকলকে তাদের পাশে দাঁড়াবার আহবান জানান।
আলোচনা কালে তিনি আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এই ফ্যাসিবাদি দলটি রাষ্টের প্রতিটি স্তম্ভ ও প্রতিটি সেক্টরকে দুর্নীতির আতুড়ঘর বানিয়েছে। তাদের দুঃশাসনে পঙ্গু হওয়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সময় প্রয়োজন।
তিনি অন্তর্বর্তীকালিন সরকার রাষ্ট্রের সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটা যৌক্তিক সময়ের নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন, আমি আমার জন্মভূমি নবীনগরে তৃণমুল রাজনীতি থেকে উঠে এসে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এসেছি। আমি নবীনগরবাসির পাশে থাকতে চাই। আমি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিএনপি বড় দল হিসাবে গ্রুপিং থাকবে, প্রতিযোগিতা থাকবে, গ্রুপিং না থাকলে নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন হয় না ঠিক কিন্তু দলের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমরা ঐক্যবদ্ধ। দল যাকেই মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই আমরা কাজ করব। মতবিনিময়কালে তিনি প্রেসক্লাবের উন্নয়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে দাতা সদস্য হওয়ার ঘোষণা দেন।
প্রেসক্লাবের সভাপতি শ্যামা প্রসাদ চক্রবর্তী শ্যামল মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সাধারণ সম্পাদক সাইদুল আলম সৌরাফের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সাদেকুল হক সাদির, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক জহিরুল হক জুরু মিয়া, কৃষক দলের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন বাবুল, পৌর কৃষক দলের সদস্য সচিব আনোয়ার খান, বিএনপি নেতা রাজন দে, কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রহিম ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার বড়াইল গ্রামের মো. মামুন মিয়া কুরবানীর জন্য তার খামারে ব্রাহামা ও শাহিওয়াল জাতের বিশাল দুটি ষাঁড় প্রস্তত করেছেন। এখন গরু দুটি ওজন হয়েছে প্রায় ৩৯ মন। ষাঁড় দুটি উচ্চতায় ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি এবং দৈর্ঘে ৮ ফুট ৭ ইঞ্চি। ভুষি, খৈল, চিটাগুড়, ঘাস, লতাপাতাসহ দেশীয় নানাজাতের খাবার খাইয়ে লালন-পালন করা হয়েছে তাদেরকে। গায়ের রং অনুযায়ী তাদের নামকরণ করা হয়। আকারে বিশাল বড় এবং গায়ের রং লাল এবং কাল হওয়ার কারণে এদের নাম রাখা হয় লাল বাহাদুর ও কালা বাহাদুর।
খামারি বলেন- লাল বাহাদুরের ওজন প্রায় ১ হাজার কেজি এবং কালা বাহাদুরের ওজন প্রায় ৯শত কেজি এ দুই বাহাদুর কে দেখার জন্য প্রতি দিনই খামারে ক্রেতাসহ লোকজন আসছেন। ন্যায্য মূল্য পেলে গরু দুটি বাড়ি থেকেই বিক্রি করে দিব।
মামুন মিয়ার সাথে কথা বললে জানা যায়- এক বছর আগে বাইশমৌজা গরুর হাট থেকে ব্রাহামা ও শাহিওয়াল জাতের দুটি বাছুর কিনেন তিনি। সে সময় তিনি একটি গরু দুই লাখ দশ হাজার অন্যটি এক লাখ নব্বই হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেন। এরপর থেকে মামুন মিয়া এবং তার স্ত্রী সারাক্ষণ গরু দুটি পালনে ব্যস্ত থাকেন।
তিনি আরো বলেন- বাড়িতে যত ক্রেতা আসছে তাতে মনে হয় ন্যায্য মূল্য পাওয়া সম্ভব নয়। দুটি গরুর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে লালটি ১৮ লক্ষ ও কালটি ২০ লক্ষ টাকা। তবে আলোচনা সাপেক্ষে কিছু কম মূল্য হলেও বিক্রি করবেন তিনি।
খামারীর স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন – “আমি এবং আমার স্বামী দুইজন মিল্লা গরু ডি পালি সংসারের কিছু আয় বাড়ানোর জন্য”। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শামীম আহমেদ বলেন- “এ সব জাতের এক একটি গরু দুই বছরের মধ্যে প্রায় হাজার কেজি হয়ে যায়- তবে তা নির্ভর করে খামারির লালন- পালনের নিয়মের উপর। মামুন মিয়া ও তার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার খুব যত্ন সহকারে গরু দুটি লালন পালন করেছেন”।
নবীনগর প্রতিনিধি :
নবীনগর উপজেলার মেঘনা নদীবাহিত পলির বেলে-দোঁয়াশ মাটিতে ব্যাপক ভাবে সরিষা চাষ হচ্ছে। এ বছর সরিষা চাষে সাফল্যে আশানুরুপ সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে এ এলাকার কৃষকরা রবি মৌসুমে সরিষা চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রত্যাশা করছে। উপজেলার যে সব ইউনিয়নে বেশী সরিষা আবাদ বেশী হয় সে সকল ইউনিয়ন গুলো হল রছুুল্লাবাদ, বীরগাঁও, বড়াইল, সলিমগঞ্জ, কৃষ্ণনগর, বিটঘর, নাটঘর। এ বছর কৃষকরা কৃষি বিভাগের পরামর্শে সরিষা চাষ করেছে প্রায় ১৫০০ হেক্টর জমিতে। মন প্র্রতি সরিষার মুল্য ৩,৫০০-৪,০০০ টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৮-৯ মন সরিষা উৎপাদন হয়। এ বছর বৃষ্টিতে ক্ষতি না হলে প্রায় ২,০০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ হত।
কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর গ্রামের মো. আবু তাহের তার চাষকৃত জমির পরিমান- ৫০ শতক। বিটঘর ইউনিয়নের গুড়িগ্রামের হারেছ ভূঁইয়া তার চাষকৃত জমির পরিমাণ- ১০০ শতক। প্রতিটি জমিতেই তরতাজা সবুজ সরিষা গাছ গুলোতে হলুদ ফুলে ফুলে ভরে ওঠায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটতে শুরু করেছে। সরেজমিনে এ সমস্ত এলাকা পরিদর্শনে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে কোন কোন জমিতে তাজা সরিষা ফুল / কোন জমিতে ফুল ঝড়তে শুরু হয়েছে। কোন জমির গাছ গুলোতে সরিষার দানা ও বাঁধতে শুরু করেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। রতনপুর ইউনিয়নের ভিটি বিশারা গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক মিয়া জানান, এ বছরই তিনি ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। তার জমিতে সরিষার গাছ গুলো যেভাবে লকলকিয়ে উঠেছে এবং হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে তাতে তিনি এ বছর সরিষার ভাল পাবেন বলে আশাবাদি হয়েছেন। রছুল্লাবাদ ইউনিয়নের রছুল্লাবাদ গ্রামের কৃষক খন্দকার ফরিদ মিয়া জানান, এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় জমিতে সরিষার ফলন ভাল হবে বলে তিনি আশা করছেন। গত বছর যে সমস্ত জমিতে অন্য ফসল চাষ করেছিলেন এবার সেই জমিতেই অত্যান্ত কম খরচে সরিষা চাষ করেছেন। সরিষার বাড়ন্ত ফুলে ভরা গাছগুলো দেখে তিনি আশান্বিত হয়েছেন । এবারে সরিষা উৎপাদন করে তিনি যথেষ্টই লাভবান হতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী।
উপজেলা কৃষি অফিসার জগলুল হায়দার জানান,অপেক্ষাকৃত নীচু এলাকার চেয়ে উঁচু এলাকার পলি সমৃদ্ধ বেলে-দোঁয়াশ মাটিতে সরিষা ফসলের আবাদ ভাল হচ্ছে। কারণ এ রুপ জমি গুলো অত্যন্ত উর্বর। এ বছর রবি মৌসুমে কৃষকরা মরিচ, সরিষা, ছিটানো পিঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়া, ডাল, ভুট্টা, ধনিয়া পাতা, গোলআলু – মিষ্টি আলু, বাদামসহ বিভিন্ন জাতের ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হতে চাই, যা গ্রামাঞ্চলের চিরায়ত অভাব নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলায় বজ্রপাতে মো. সোহাগ (২৮) নামে এক সৌদি প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে।
আজ ১০ জুন সোমবার দুপুরের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের বাইশমৌজা বাজারের পাশে আব্দুল্লাহ্ চরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহাগ কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সাতঘর হাটির আব্দুস সালামের ছেলে। তিনি তিনমাস আগে ছুটিতে দেশে এসে বিয়ে করেছিলেন।
পরিবারের লোকজন জানায়, সোহাগ বাইশমৌজা বাজারের পাশে আব্দুল্লাহ্ চরে ১০/১৫টি মহিষকে ঘাস খাওয়াচ্ছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহাবুব আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে শিয়ালের কামড়ে আহত হয়েছে লামিয়া নামের দেড় বছরের এক শিশু।
আজ ১৮ জুন রবিবার দুপুরে নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত লামিয়া কুড়িঘর গ্রামের মধ্য উত্তরপাড়া এলাকার সোহেল মিয়ার মেয়ে।
শিশু লামিয়ার দাদি আমেনা বেগম বলেন, দুপুরে লামিয়া বাড়ির উঠানে রাজহাঁসের সঙ্গে খেলা করছিল। এসময় বাড়ির পাশের পাটক্ষেত থেকে একটি শিয়াল উঠানে এসে লামিয়ার মাথায় ও মুখে কামড় দেয়। এসময় শিশুটির চিৎকারে পরিবারের লোকজন ছুটে এলে শিয়ালটি পালিয়ে যায়। পরে লামিয়াকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে তারা জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেফার করেন।
আমেনা বেগম আরো বলেন, এ এলাকায় শিয়ালের উৎপাত বেশি। শিয়ালগুলো বাড়ির হাঁস-মুরগি খেয়ে ফেলে। মানুষসহ কেউ শিয়াল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিশু বিশেষজ্ঞ তৌকতুল ইসলাম চয়ন বলেন, শিয়ালের কামড়ে একটি শিশু আহত হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বিস্তির্ণ হাওরাঞ্চলের কচুরিপানা দিয়ে তৈরি হচ্ছে জৈবসার। ‘জলকমল’ খ্যাত এ জৈবসার দামে কম ও মান ভালো হওয়ায় এতে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
নবীনগর উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পাইলট প্রকল্প হিসাবে এ প্লান্টটি চালু করা হলেও ল্যাব টেষ্টে গুণগত মানের স্বীকৃতি মিলায় এখন বাণিজ্যিক ভাবে ১০টি প্লান্ট স্থাপন করা হবে যা থেকে প্রতিমাসে ৫০ টন জৈব সার উৎপাদিত হবে যার বাজার মূল্য প্রায় ৬ লাখ টাকা। জেলা সদর ছাড়াও নদী ও হাওরবেষ্টিত নবীনগর উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের সাথে নৌপথে যোগাযেগের ক্ষেত্রে অন্যতম বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় কচুরিপানা।
এতে নৌপথ ক্রমশ সংকুচিত হবার পাশাপাশি ঝুঁকিতে পড়ে বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ। নৌপথ স্বাভাবিক রাখতে কচুরিপানা পরিষ্কার করে তা উৎপাদনশীল কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা উপজেলায় আখের ছোবড়া থেকে বাণিজ্যিকভাবে জৈব সার উৎপাদনের বিষয়টি নজরে আসার পর কচুরিপানা থেকে জৈবসার উৎপাদনের পকিল্পনা নেয় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
সংগৃহীত কচুরিপানরা নিচের কালো অংশটুকু কেটে ফেলে পাতাসহ বাকি অংশটুকুর দেড় টন পরিমাণ স্তূপ করে ১৫ সেন্টিমিটার পর পর ২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ট্রাইকোডার্মা নামক এক ধরণের ছত্রাক এবং ২০০ গ্রাম চুন ছিটিয়ে এ সার তৈরী হচ্ছে। এই সার তৈরি করতে দুই মাস সময় লাগে। পরীক্ষামূলক ব্যবহার করে সুফল পাওয়ায় নবীনগর উপজেলায় বাজারজাত করা হয়েছে। উপজেলার বিসিইসির ২৬টি ডিলার জৈবসার কর্নার স্থাপন করে তা বিক্রি করছেন। এখন পর্যন্ত ৫ টন সারা বিক্রি হয়েছে। ১০ জন কৃষকের সমন্বয়ে তৈরি এই প্লান্টটি থেকে প্রতিমাসে ৫ টন সার উৎপাদনের কথা জানালেন, নবীনগর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু নোমান।
এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি উপজেলায় রাসায়নিক সারের ব্যবহার ২৫ ভাগ কমায় বৈদেশি মুদ্রার সাশ্রয়ের কথা জানালেন, নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম। এ প্রকল্পটি উদ্ভাবনী মেলায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে।