চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস থেকে ৬ কেজি গাঁজাসহ দুই নারী মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ। আজ ১৫ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরের দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর আশুগঞ্জ টোলপ্লাজা এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটক নারী মাদক ব্যবসায়ীরা হলেন কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার জগনাথপুর গ্রামের মৃত মিজানুর রহমানের স্ত্রী কুলসুম বেগম (৩৪) ও একই গ্রামের সুরুজ মিয়ার মেয়ে ময়না বেগম(২৬)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিউল কবির সাংবাদিকদের জানান, বাসে তল্লাশী চালিয়ে ৬ কেজি গাজাসহ দুই নারীকে আটক করা হয়। তারা পেশাদার মাদক কারবারি বলে জানা যায়। আটককৃত মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বহুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু। শপথও নিয়েছেন তিনি। কিন্তু এর আগেই সংসদ অধিবেশন শেষ হয়ে যায়। জীবনে প্রথমবার সংসদ সদস্য হয়েও অধিবেশনে যোগদান না করার আক্ষেপ তার। তাই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনেছেন অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু।
১৯ নভেম্বর রবিবার দুপুরে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় থেকে তিনি দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) নির্বাচনী আসনে স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ থেকে জয়লাভ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর খুনি তাহের উদ্দিন ঠাকুর। এরপর গত ৫০ বছরে আর কেউ এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে জয়লাভ করতে পারেনি। এরমধ্যে ২২ বছর নৌকা প্রতীকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি এ আসনে। সর্বশেষ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দাবির মুখে উপ-নির্বাচনে নিজ দলীয় প্রার্থীকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
গত ৫ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে অনুষ্ঠিত হওয়া উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম সাজু জয়লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা।
এদিকে গণমাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠে আসে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে আশুগঞ্জে দুটি ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের সত্যতা পায় কমিটি। এ দুই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি অভিযুক্ত দুই কেন্দ্র ছাড়া জয়ী হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহ আলম সাজুকে জয়যুক্ত করে গেজেট প্রকাশিত করে নির্বাচন কমিশন।
১৫ নভেম্বর জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী শাহজাহান আলম সাজুকে শপথবাক্য পাঠ করান। কিন্তু এর আগেই ২ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশন শেষ হয়েছে। ফলে শপথ নিলেও জাতীয় সংসদের কোনো অধিবেশনে যোগদান করতে পারেননি তিনি।
এ নিয়ে আক্ষেপের কথা জানালেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু। তিনি বলেন, একজন সংসদ সদস্য হয়ে অধিবেশনে যোগ দিতে না পারা অবশ্যই কষ্টের ব্যাপার। এরপরও বাস্তবতা মানতে হবে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য দুমাসের মধ্যে এ নির্বাচন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, শপথ নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমি সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। অধিবেশনে না বসতে পারলেও ৫০ বছর পর আসনটি উদ্ধার হয়েছে তাতে প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছেন। পরবর্তী নির্বাচন ৭ জানুয়ারি হবে। ইনশাআল্লাহ জনগণ আমাকে আবারও বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে। তখন সংসদ অধিবেশনে গিয়ে আমি সাধারণ মানুষের কথা হয়তো বলতে পারবো।
চলারপথে রিপোর্ট :
চাকরির প্রলোভনে রুশ সেনাবাহিনীর হয়ে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে অংশ করে প্রাণ হারিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জের যুবক মোহাম্মদ আকরাম হোসেন (২৫)। ১৮ এপ্রিল শুক্রবার এক সহযোদ্ধার ফোনে মৃত্যুর খবর পৌঁছালে তার বাড়িতে নেমে আসে শোকের ছায়া।
মোহাম্মদ আকরাম হোসেন আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর হোসেনপুর গ্রামের মোরশেদ মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, ওয়েল্ডিং-এর কাজ শেখার পর সংসারের সচ্ছলতা ও নিজের ভবিষ্যতের আশায় প্রায় ১১ মাস আগে তিনি রাশিয়ায় যান। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আকরাম ছিলেন সবার বড়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তার পিতা, যিনি দিনমজুর হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এক মেয়ের বিয়েতে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় পরিবারে আর্থিক চাপ আরও বাড়ে। সেই চাপ কমাতেই স্বজনদের সহায়তায় রাশিয়ায় পাঠানো হয় আকরামকে।
রাশিয়ায় গিয়ে প্রথম ৮ মাস একটি চায়না কোম্পানিতে ওয়েল্ডার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। যদিও বেতন বেশি ছিল না, তবে তার উপার্জনে পরিবারে কিছুটা স্বস্তি ফিরতে শুরু করে। আকরামের আয়ে তার দরিদ্র পরিবার একটু একটু করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।
তবে প্রায় আড়াই মাস আগে আকরাম এক দালালের প্রলোভনে পড়ে চুক্তিভিত্তিকভাবে রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। শর্ত ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের সম্মুখসারিতে অংশ নিতে হবে। পরিবার থেকে নিষেধ করা হলেও আকরাম জানিয়েছিলেন, ফিরে আসার আর কোনো উপায় নেই। তিনি তার বাবাকে জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ইতোমধ্যে চার লাখ টাকা জমা হয়েছে।
আকরামের মা মোবিনা বেগম জানান, যুদ্ধ চলাকালীন ছেলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। তবে গত ১৩ এপ্রিল থেকে তার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাশিয়ায় অবস্থানরত পরিচিতরাও তার খোঁজ পাচ্ছেন না। শুক্রবার এক সহযোদ্ধা ফোন করে জানান, ইউক্রেন সেনাবাহিনীর মিসাইল হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। তার ইউনিটের আরও কয়েকজন ওই হামলায় মারা যান। এরপর থেকেই আকরামের ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
ছেলের মৃত্যুর খবরে আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর হোসেনপুর গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া। আকরামের মা বারবার ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন, অন্যরাও শোকে হতবিহ্বল।
নিহতের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা ও ক্ষতিপূরণ পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন আকরামের পরিবার।
স্টাফ রিপোর্টার : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া এই আসনের ৫ বারের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া (কলারছড়ি প্রতীক) বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৮১৭ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ ভাসানী (লাঙ্গল প্রতীক) পেয়েছেন ৯ হাজার ৫৮৩। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ (মোটর গাড়ি প্রতীক) পেয়েছেন ৩ হাজার ২৩৮ ভোট। আবু আসিফ আহমেদ গত শুক্রবার রাত থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
তবে, পুলিশের দাবি আবু আসিফ নিজেই আত্মগোপন করেছেন। ভোট গণনা শেষে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন একটি সূত্র এই ফলাফল নিশ্চিত করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯৮ কেজি গাঁজা এবং ৯০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ৬ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় মাদকদ্রব্য বহনকারী ২টি প্রাইভেটকার ও ১টি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়।
আজ ৩ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল ১০টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ উপজেলার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজা এবং শনিবার বিকেলে সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ ও সরাইল থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার আলাবক্সপুর গ্রামের মাজহারুল ইসলাম ইমন (২৩), একই উপজেলার আহম্মদপুর গ্রামের মোঃ মশিউর আলম (২২), একই উপজেলার খরশপুর গ্রামের মাজহারুল ইসলাম রাব্বি (২০), স্বপন মিয়া (২৭), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার কালিশিমুল গ্রামের মোঃ সাকিব মিয়া (২১) ও একই উপজেলার জালালপুর গ্রামের রিপন (২২)।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহামেদ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার সকালে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে অভিযান চালিয়ে একটি প্রাইভেটকার ও মোটর সাইকেল তাদের আটক করা হয়। পরে প্রাইভেটকার ও মোটর সাইকেলে তল্লাশী চালিয়ে ৯৮ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী মাজহারুল ইসলাম ইমন, মশিউর আলম, মাজহারুল ইসলাম রাব্বি ও স্বপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার দুপুরে সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া বাজারে অভিযান চালিয়ে একটি প্রাইভেটকার আটক করা হয়। পরে প্রাইভেটকারে তল্লাশী চালিয়ে ৯০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ী সাকিব মিয়া ও রিপনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় সরাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।