চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় রিকশা-ভ্যান শ্রমিকলীগের সভাপতি মুসলেম মিয়াকে (৪৯) আটক করেছে পুলিশ। তিনি আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় মাদক ব্যবসার জড়িয়ে সাধারণ ভ্যানচালক থেকে কয়েক বছরে বিপুল অর্থ বিত্তের মালিক বনে যান।
৫ অক্টোবর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরশহরের উপজেলা কমপ্লেক্স সংলগ্ন নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করেন। মারামারি, অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরক আইনের ধারায় আখাউড়া থানার একটি মামলার আসামী তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩০/৩৫ বছর আগে বাবার সাথে আখাউড়ায় আসেন মুসলেম মিয়া। তার বাবা ভাঙ্গারী কুরিয়ে বিক্রি করতেন। মুসলেম মিয়া ভ্যানগাড়ির ঠেলা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ধীরে ধীরে নিজেই ভ্যানগাড়ি চালানো শুরু করেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে পেশা পরিবর্তন করে রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় মাদক বিক্রি শুরু করেন মুসলেম মিয়া। এরপর তার ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে। রিকশা-ভ্যান শ্রমীক লীগ নামে ভুঁইফোড় সংগঠনের সভাপতি হয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিছিল সমাবেশে শ্রমিক নিয়ে যোগদান করে করে মুসলেম ভুঁইয়া আলোচনায় ছিলেন। আওয়ামী লীগের এক নেতার আর্শীবাদে তিনি সাধারণ শ্রমিক থেকে নেতা বনে যান। রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় রিকশা-ভ্যান শ্রমীক লীগের অফিস করেন। ওই অফিসে অপরাধমূলক কর্মকান্ড করতেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে তিনি কিছু দিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সাধারণ ভ্যান শ্রমিক থেকে কয়েক বছরে পৌরশহরের কলেজ পাড়া এবং উপজেলা কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকায় ৪টি জায়গার মালিক হয়েছেন তিনি। ২টি পাকা বাড়ি করেছেন। একটিতে তিনি থাকেন। আরেকটি ভাড়া দেওয়া। বাকী ২টি প্লট খালি রয়েছে। এছাড়াও নগদ টাকার মালিক হয়েছেন তিনি।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল হাসিম বলেন, আটক মুসলেম মিয়া মারামারি, অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরক আইনের মামার আসামী।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় স্বাধীন হত্যার ৮ ঘন্টার মধ্যে মূল হোতা স্বপন চৌধুরীসহ এজাহারভূক্ত দুই আসামিকে আটক করেছে পুলিশ। আখাউড়া থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত মোঃ ছমি উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নারুই গ্রাম থেকে শনিবার ভোরে তাদেরকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের রামধননগর গ্রামের রোকন উদ্দিনের ছেলে স্বপন চৌধুরী (৪০) ও শরীফ চৌধুরী (৫০)। এ ঘটনায় স্বপন চৌধুরীর স্ত্রী ইতি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে নিয়েছে পুলিশ। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আমোদাবাদ গ্রামের ফজল মিয়ার ছেলে স্বাধীন মিয়া (২৫) কে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে স্বপন। রাতেই নিহত স্বাধীন মিয়ার পিতা ফজল মিয়া বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে আজমপুর রেলওয়ে কলোনী মসজিদের সামনেস্বাধীন মিয়াকে ছুরিকাঘাত করে স্বাধীন চৌধুরী। স্থানীয়রা স্বাধীন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই এলাকার লুৎফল আমিন চৌধুরী বলেন আমি মাছের প্রজেক্ট দেখতে যাচ্ছিলাম। আজমপুর রেলওয়ে কলোনী মসজিদের সামনে দুইজনকে ধস্তাধস্তি করতে দেখে শান্ত করে দেওয়ার চেষ্টা করি। কিছুক্ষণ পর আরো ৪/৫ জন যুবক এসে স্বাধীনকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে স্বপন চৌধুরী স্বাধীনকে লম্বা ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত করে। তাৎক্ষনিক আমি থানায় অবগত করি এবং লোকজন স্বাধীনকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, স্বাধীন একজন মাদক সেবী ও মাদক কারবারি।
নিহত স্বাধীনের মা জরিনা বেগম হাসপাতালে বিলাপ করতে করতে বলে স্বপন আমার ছেলেরে মাইরা লাইছে।
জানতে চাইলে ডাঃ ফয়জুন্নেছা আমিন বলেন ৭ টা ২৩ মি মৃত অবস্থায় ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। পেটে ছুরিকাঘাত রয়েছে। অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে। বিস্তারিত ময়না তদন্ত শেষে জানা যাবে।
আখাউড়া থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত মোঃ ছমি উদ্দিন বলেন নিহত স্বাধীন মিয়ার বাবা ফজল মিয়া রাতে ৫ জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। তথ্য প্রযুক্তি এবং আমাদের সোর্সের মাধ্যমে রাত ৩ টার দিকে নবীনগর উপজেলার নারুই গ্রাম থেকে এজহার নামীয় দুই আসামীকে আটক করেছি। স্বপনের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদেরকে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় হৃদয় মিয়া (১৫) নামে মোটরসাইকেল চালক এক কিশোর নিহত হয়েছে। আজ ২০ জানুয়ারি সোমবার সকালে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের আখাউড়া উপজেলার ছতুরাশরীফ নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত হৃদয় মিয়া স্থানীয় কসবা উপজেলার সৈয়দাবাদ গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ধরখার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জাকির বলেন, ‘সোমবার সকাল ১০টায় হৃদয় মিয়া তার দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের আখাউড়া ছতুরাশরীফ নামক এলাকায় মোটরসাইকেলের গতি বাড়িয়ে একটি লরিকে অতিক্রম করতে গিয়ে পেছনের চাকায় ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।’ তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনার সময় ভাগ্যক্রমে মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা দুই বন্ধু বেঁচে গেলেও ঘটনাস্থলেই হৃদয় মিয়ার মৃত্যু হয়। চালকসহ লরিটি আটক করা হয়েছে। কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের কাছে লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মী রানী দাস। তিনি ভারত থেকে স্বামী ও সন্তান নিয়ে আগরতলা স্থলবন্দর দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে আসেন।
যাত্রাকালে আগরতলা ইমিগ্রেশনে সুষ্ঠু ও স্বাচ্ছন্দ্যে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে এলেও আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে এসে রীতিমত অবাক হক তিনি। বসারও সুব্যবস্থা নেই এখানে।
ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করতে গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়ালেও ছোট কক্ষটিতে নেই কোনো ফ্যান। হঠাৎ ১২ বছর বয়সী ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়লে সেবা করার জন্য কোনো স্থান না পেয়ে ইমিগ্রেশন ভবনের এক কোনায় বসে তার সেবা যত্ন করেন। আশেপাশে ছিল না কোনো টিউবওয়েল। যাও বা ট্যাংকের পানি জুটেছে, তাও তীব্র তাপদাহে তপ্ত। তা দিয়েই ছেলেকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যান।
লক্ষ্মী রানী দাসের বলেন, আগরতলা ইমিগ্রেশনে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ও সুন্দর পরিবেশে আরামে সব কাজ করে এসেছি। বন্দর থেকে গাড়িতে আমাদের ফ্রি চেকপোস্ট পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। অথচ আখাউড়া স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনে এসে নাজেহাল হতে হলো। এখানে কোনো কিছুরই সুব্যবস্থা নেই। একতলা পুরোনো ভবনের ছোট্ট কক্ষে শত শত লোক ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে। এখানকার ইমিগ্রেশনের অব্যবস্থাপনা দেখে খুবই খারাপ লেগেছে। এখানে যাত্রীদের জন্য পরিষেবা বাড়ানো উচিত। আশা করব, বাংলাদেশ সরকার দুই দেশের যাত্রীদের কথা বিবেচনায় এনে ইমিগ্রেশন উন্নত করবে।
আগরতলা থেকে আসা আরেক যাত্রী খোকন মিয়া বলেন, আমি গত ছয় বছর ধরে এ চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াত করছি। ইমিগ্রেশনটি যে হালতে দেখেছিলাম, সে হালতেই আছে। একজন রোগী এলে যে বসবে, সে উপায় নেই। এখানে যে পরিমাণ জায়গা দরকার, সে তুলনায় খুবই কম আছে।
বন্দরটি ঘুরে দেখা গেছে, মূলফটক পার হলেই একতলা বিশিষ্ট তিন রুমের একটি ভবন। এর মধ্যে দুটি ছোট রুম ও একটি মাঝারি রুম। একটিতে ইমিগ্রেশন ইনচার্জ বসেন, আরেকটি হচ্ছে ব্যারাক। মাঝারি কক্ষটিতে চলে অফিসের কার্যক্রম। পুরোনো ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরে গেছে। প্রতিদিন যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে, তাই গাদাগাদি করেই চলে কার্যক্রম। যাত্রীদের মালপত্র বারান্দায় রেখে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বসার জন্য ইমিগ্রেশন কক্ষে কোনো জায়গা নেই। আর বাইরে টিনের একটি ছাউনি আছে, যেখানে ১৫/২০টি চেয়ার থাকলেও কোনো টেবিল নেই। অথচ ফরম পূরণ করতে টেবিল প্রয়োজন। ফরম পূরনের জন্য দেখা গেছে কেউ বারান্দার মেঝেতে বসে, আবার কেউ কেউ বিদ্যুৎতের জেনারেটরের ওপরে ফরম রেখে পূরণ করছেন। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্যও জায়গা নেই। কক্ষটিতে এসির ব্যবস্থা থাকলেও ভিড় থাকায় যাত্রীদের লাইন কক্ষের বাইরে বারান্দায় চলে যায়। ফলে এসিগুলো চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তীব্র গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক ফ্যানের ব্যবস্থা না থাকায় গরমে কষ্ট সহ্য করে ইমিগেশনের কাজ শেষ করতে হয়।
তবে বিড়ম্বনা এখানেই শেষ নয়। কাস্টমসের কাজ করতে পাড়ি দিতে হচ্ছে অন্তত দুইশ গজ দূরবর্তী অন্য আরেকটি ভবনে। মূলত এক ভবন ও এক ছাদের নিচে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাজ করতে না পারায় তাদের দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে চালু হয় আখাউড়া স্থলবন্দরের কার্যক্রম। সুবিধাজনক ভৌগলিক অবস্থান হওয়ায় এ বন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট থেকে অনেকেই আখাউড়া ইমিগ্রেশন ব্যবহার কররে ভারতে যাতায়াত করছেন।
কাস্টমস সূত্র জানায়, এ ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে প্রতিদিন অত্যন্ত এক হাজার যাত্রী দুই দেশে যাতায়াত করছেন। এর মধ্যে পাঁচ শতাধিক যাত্রী ভারতে যান। যা থেকে প্রতি মাসে ৭৫ লাখ টাকা আয় হয়ে থাকে সরকারের। বিগত ছয় মাসে চার কোটি ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
এদিকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে আখাউড়া চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন আধুনিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলেও ২০১৭ ও ২০১৯ সালে সীমান্ত আইনের অজুহাতে বিএসএফ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।
মৌলভীবাজার জেলা থেকে ভারতগামী বাংলাদেশি যাত্রী সুমন আহমেদ বলেন, আমি ইমিগ্রেশনের পরিবেশ দেখে হতবাক হয়ে গেছি। এখানে লাইনের কোনো শৃঙ্খলা নেই। কোনো ধরনের আধুনিকায়ন নেই। অথচ আগরতলা ইমিগ্রেশনের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ফারহানা মিলি নামে এক নারী চিকিৎসক তার বাবার চিকিৎসা জন্য ভারতে যাওয়া সময় আক্ষেপ করে বলেন, আগরতলা ইমিগ্রেশন ও আখাউড়া ইমিগ্রেশনের মধ্যে অনেক পার্থক্য। আমাদের এখানে ভালো ব্যবস্থা নেই। মালপত্র রাখার জায়গা পাই না। আরেকজনের কাছে পাহারা দিয়ে রাখতে হয়। বছরের কয়েকবার যেতে হয়। তবে এর উন্নতি দেখছি না। এখানে দ্রুত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগুক সেই কামনা করি।
মুক্তি খান নামে এক যাত্রী বলেন, বর্তমানে আখাউড়া ইমিগ্রেশন ভবন নামেমাত্র টিকে আছে। জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করে কোনোমতে ঝুঁকি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হচ্ছে। স্থায়ী ভবন তৈরির পর এক ছাদের নিচে সব পরিষেবা পাওয়া গেলে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি বিদেশিদের আসা যাওয়া আরও বেড়ে যাবে। যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগও লাঘব হবে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ইমিগ্রেশন দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে। প্রতিদিন এক হাজারেরও বেশি যাত্রী পারাপার হচ্ছেন। তবে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালানোর জন্য যে ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে, তা খুবই অপ্রতুল। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে সেবার মান বাড়বে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, এ ইমিগ্রেশন দিয়ে দুই দেশের বিপুল সংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করলেও ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের পর্যাপ্ত সুবিধার কমতি রয়েছে। আমাদের নতুন একটি ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণ কাজ চলছিল, তা বিএসএফের বাধায় বন্ধ রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কথা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পেলে আমরা ভবনটির কাজ আবার শুরু করতে পারব। এছাড়া বলে রাখি, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখানে একটি আধুনিক বন্দর নিমার্ণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ৩.৫৭ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ হাতে নিয়েছি। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। তখন স্থলবন্দর, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। যাত্রীসেবার মানও উন্নত হবে।
তিনি আরো বলেন, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চারলেন সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হলে এবং আধুনিক স্থলবন্দরটি তৈরি হলে আখাউড়াই হবে বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য স্থলবন্দর।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া উপজেলার তন্তর এলাকায় মো. হেবজু মিয়া (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে উঠেছে তার প্রতিবেশি পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে।
২৭ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটানোর পর ওই প্রতিবেশি পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানার ওসি মোহাম্মদ সোহেল জানান, প্রতিবেশি শাহ আলম মিয়ার বাড়ির একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়।
অভিযোগ তোলা হয়, হেবজু মিয়ার স্ত্রীর বিরদ্ধে। বিষয়টি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানতে চাইলে প্রতিবেশি বাড়ির লোকজনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় কাঠের বস্তু দিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বৃদ্ধের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ দিলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পারিবারিক কলহের জের ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বামীর হাতে জান্নাতুল ফেরদৌসী (৩৫) খুনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর থেকে স্বামী কাউসার মোল্লা (৫০) পলাতক রয়েছেন।
আজ ১৯ এপ্রিল বুধবার সকালে জেলা পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জান্নাতুল একই জেলার আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগর দিঘীরপাড় এলাকার মৃত আরু মিয়ার মেয়ে। আর কাউসার মোল্লা জেলা সদর উপজেলার ঘাটিয়ারা গ্রামের মৃত মো. আউয়াল মিয়ার ছেলে। কাউসার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য বলে জানা গেছে।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, কাউসার ও জান্নাতুল জেলা শহরের কলেজপাড়ায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতো। তবে কাউসার দীর্ঘদিন ধরে জুয়া খেলা ও পরকীয়ায় লিপ্ত। এসব নিয়ে প্রায়ই জান্নাতুলের সঙ্গে স্বামীর কলহ চলতো। এরই জের ধরে বুধবার সকালে কাউসার ধারালো ছুরিকাঘাতে জান্নাতুলকে হত্যা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে তাদের সন্তানরা কক্ষে যাওয়া মাত্রই তিনি (কাউসার) তাদের ঘরে আটকিয়ে পালিয়ে যান।
এ ব্যাপারে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠিয়েছে। ঘাতক স্বামীকে আটকের চেষ্টা চলছে।