চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা এমন একটি সমাজ গঠন করতে চাই যেখানে বিচারপ্রার্থীকে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি শিকার হতে হবে না। কোনো বিচারক তার আসনে বসে আল্লাহকে ছাড়া কোনো রাষ্ট্রশক্তিকে পরোয়া করবে না। রাষ্ট্রের আইন এবং বিবেক শক্তি দিয়ে বিচার কাজ পরিচালনা করবে। আমরা শুনতে চাই না বিচারকের আসনে বসে বিচারকরা ঘুস খায়।
আজ ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ট্যাংকেরপাড় পৌর মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সভায় তিনি এ কথা বলেন। ডা. শফিকুর বলেন, মিডিয়া বের করে নিয়ে আসে উনি অমুক জেলার ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন, তার পাঁচটি গাড়ি রয়েছে, ১০টি বাড়ি রয়েছে। এসব কলঙ্কজনক কথা বিচারকদের ব্যাপারে শুনতে চাই না। আমরা এমন একটি বিচার ব্যবস্থা চাই, যে ব্যবস্থা উঁচু-নিচু কাউকে ভাববে না। বিচারপ্রার্থীকে বিচার প্রার্থী হিসেবে দেখবে। কোনো বিচারপ্রার্থী যদি মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে হাজির হয়, তাহলে মিথ্যার অভিযোগের দণ্ডও তাকে পেতে হবে। আবার যদি কেউ সঠিক অভিযোগ নিয়ে আসে তাহলে ন্যায় বিচার থেকে যেন বঞ্চিত না হয়। তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্য ১০টি দেশ যেমন মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে বিশ্বের বুকে দাঁড়ায়, বাংলাদেশও ইনশাআল্লাহ তার শির উঁচু করে দাঁড়াবে। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে কিন্তু কোনো প্রভু মেনে নেব না। কেউ আমাদের সঙ্গে প্রভুত্ব দেখাতে আসলে জাতির কাছে তার সঠিক জবাব বুঝিয়ে দেবেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতের আমির মোহাম্মদ গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাসুম।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাম্মদ মুবারক হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে সূরা সদস্য ও কুমিল্লা নোয়াখালী অঞ্চল অঞ্চল টিম সদস্য মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাবেক আমির কাজী নজরুল ইসলাম খাদেম, সৈয়দ গোলাম সারোয়ার, সাবেক নায়েবে আমির কাজী মো. ইয়াকুব আলী, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম প্রমুখ।
অনলাইন ডেস্ক :
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় এক সন্তানের জননী ডলি রানী দেবনাথ (২৬) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ফেসবুক চ্যাটিংয়ের জের ধরে ডলির স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওই গৃহবধূকে হত্যা করেছে বলে স্থানীয়রা জানায়।
১৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাতেই এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর ভাই পিন্টু দেবনাথ বাদী হয়ে স্বামী ঝন্টুসহ চার জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লার বাঙ্গরা থানায় মামলা করেছেন।
আজ ২০ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বাঙ্গরা থানার ওসি মাহফুজুর রহমান দুপুরে কাছে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, ইতিমধ্যে ওই গৃহবধূর স্বামী ঝন্টু দেবনাথ (৩২)-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, মামলার এজাহার ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামের অবনী দেবনাথের একমাত্র মেয়ে ডলি রানী দেবনাথের সঙ্গে ২০১৭ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা হাটাশ গ্রামের দুলাল দেব নাথের ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী ঝন্টু দেবনাথের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ছয় বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বিয়ের পর ডলি ও ঝন্টুর মথ্যে সুন্দর দাম্পত্য জীবন চললেও, ডলির সাথে অন্য কারো ফেসবুকে চ্যাট করাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ফেসবুকের চ্যাটিংযের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে।
ডলির শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, ঘরের জানালার শিকে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ডলি।
গৃহবধূ ডলির বড় ভাই ও মামলার বাদী ব্যবসায়ী পিন্টু দেবনাথ অভিযোগ করে বলেন, ‘ফেসবুকে চ্যাটিং হলো একটি অপপ্রচার। এটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারণ, পারিবারিক কলহ নিয়ে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রায়ই আমার বোনকে মারধর করত। আমার বোন প্রায়ই আমাকে টেলিফোনে বলত, তার স্বামী ঝন্টু ও শ্বশুর দুলাল নাকি তাকে ছোটখাটো ভুলের জন্যও প্রচণ্ড মারধর করে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, শেষ পর্যন্ত আমার আদরের একমাত্র বোনটাকে সত্যি সত্যিই পাষণ্ড ঝন্টুসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেরেই ফেলল।
কুমিল্লার বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মো. মাহফুজুর রহমান আজ দুপুরে গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা বাড়িতে গিয়ে গৃহবধূর মরদেহ ঝুলন্ত নয়, মাটিতে শোয়ানো অবস্থায় পেয়েছি।
তবে মরদেহের গলায় আঘাতের কালো চিহ্ন রয়েছে। গৃহবধূর ভাই বাদী হয়ে স্বামী ঝন্টুসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। ওই গৃহবধূর স্বামী ঝন্টুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটি ময়নাতদন্তের পর বোঝা যাবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
দিনাজপুরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই ফার্মেসিকে জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আজ ২৬ আগস্ট শনিবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে চিকিৎসকদের জন্য দেওয়া ট্রায়াল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখায় ১০ হাজার করে মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেন দিনাজপুর জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা সহকারী পরিচালক মমতাজ বেগম রুনী।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলা সহকারী পরিচালক মমতাজ রুনী বলেন, ভোক্তার অভিযোগ ও তদারকির অংশ হিসেবে নিয়মিত অভিযান চলছে। অনিয়ম পেলে তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার বিভিন্ন পূজামন্ডপে গিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা বিনিময় ও মন্ডপ পরিদর্শন করছেন।
আজ ২২ অক্টোবর রবিবার রাতে আনন্দময়ী কালিবাড়ি পূজামন্ডপসহ বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার পূজা চলাকালীন সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে কেউ যাতে কোন বিভেদ সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ সেলিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোছাইন, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক সুনীল চন্দ্র দেব, আনন্দময়ী কালিবাড়ি পূজা মন্ডপের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আশীষ পাল, উত্তম রায়, সাবেক উপজেলা শিক্ষা অফিসার প্রবীর চন্দ্র দেব, সাংবাদিক নেতা পীযুষ কান্তি আচার্য্য, এড. রাখেশ রায়সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
পরিদর্শনকালে পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সনাতনী ধর্মলম্বীদের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় ও শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন
চলারপথে রিপোর্ট :
এ সময়ের সোনালী আঁশ হিসেবে পরিচিত পাটের জৌলুস আগের মতো আর নেই। পাটের ভালো ফলন হলেও চাষিরা আশানুরূপ লাভবান হতে পারছেন না। এছাড়াও পাট জাক (পঁচানো) দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি ও জায়গা না থাকায় চাষীরা বিপাকে পড়েন। তবু ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য বংশ পরস্পরায় অনেক চাষি এখনো পাটের চাষ করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের তথ্য মতে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলতি মৌসুমে পাটের ভালো ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হয়েছে। এ বছর জেলায় উৎপাদিত পাট প্রায় ৬০ কোটি বিক্রির আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের তথ্য মতে চলতি বছর পাটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিলো ৪ হাজার ১শ ৮৯ হেক্টর জমি। চাষ হয়েছে ৪ হাজার ১শ ৯১ হেক্টর জমি। ২ হেক্টর জমি বেশী চাষ হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা, সরাইল উপজেলা, বিজয়নগর উপজেলা, নবীনগর উপজেলা বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় পাটের ভালো ফলন হয়েছে। জেলায় চাষীরা এবার তাদের জমিতে দেশী কেনাফ, মেছতা এবং তোষা জাতের পাটের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারনে পাটের আকার কিছুটা ছোট হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামাঞ্চলে এখন চলছে পাটকাটা, পাট জাক দেয়া ও পাট শুকনোর কাজ। তবে বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমান পানি না হওয়ায় ও পাট জাক দেয়ার (পঁঁচানো) পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বিপাকে পরেছেন পাট চাষীরা।
পাট চাষিদের অভিযোগ পাটের উৎপাদন খরচ বাড়লেও পাটের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না তারা। এজন্য কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। তবে কৃষি বিভাগের দাবি ভালো ফলন ও লাভবান হওয়ায় প্রতিবছরই বাড়ছে পাটের আবাদ।
চাষিরা জানান, এক সময় পাটকে বলা হতো সোনালী আঁশ। পাট বিদেশে রপ্তানী হতো অর্জিত হতো বৈদেশিক মুদ্রা। ওই সময়ে সোনালী আঁশ পাট চাষে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন উপজেলায় গড়ে উঠেছিলো বড়-বড় হাট বাজার। এখন পাটের সোনালী দিন আর নেই। ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য বংশ পরস্পরায় অনেকে এখনো পাটের চাষ করছেন।
নাসিরনগরের দুলাল মিয়া নামে এক পাট চাষী জানান, আমরা যে আশা করে পাট চাষ করেছিলাম বৃষ্টি না থাকার কারনে আমাদের পাটগুলো আকারে ছোট হয়েছে। আগে পানির মধ্যে পাট কাটতে খরচ কম হতো কিন্তু এবার খরচ বেশি হয়েছে। পানি না থাকার কারণে পাট এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতেও খরচ হয়। আর যদি পানি থাকতো তাহলে এখানেই সবকিছু করা যেতো। তিনি বলেন, বর্তমানে ২ হাজার টাকা মন দরে পাট বিক্রি হচ্ছে। এই দামে পাট বিক্রি করলে আমাদের লোকসান গুনতে হবে। সরকার যদি পাটের দামটা ৩ হাজার টাকা করে দিতো তাহলে আমরা লাভবান হতাম।
বিজয়নগর উপজেলার ফরিদ মিয়া নামে আরেক পাট চাষী বলেন, এবার আমরা পাট নিয়ে খুবই চিন্তিত। পানি না থাকায় জমি থেকে পাট কেটে অন্য জায়গায় নিতে শ্রমিক খরচও লাগছে। আমরা পাটের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছি না। তিনি বলেন, পাট জাক দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় আমাদেরকে বিপাকে পড়তে হয়েছে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবছর পাটের ভালো ফলন হয়েছে। পাট চাষে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেন, চলতি বছর আমাদের পাট চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৪ হাজার ১শ ৮৯ হেক্টর জমি, চাষ হয়েছে ৪ হাজার ১শ ৯১ হেক্টর জমি। তিনি বলেন, জেলার নাসিরনগর, সরাইল, বিজয়নগর, নবীনগর এবং বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় পাটের আবাদ বেশী হয়েছে। চাষীরা তাদের জমিতে দেশী কেনাফ, মেছতা এবং তোষা জাতের পাটের আবাদ করেছেন। জেলায় কমপক্ষে ৪১ হাজার ১৬১টি বেল পাট উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য কমপক্ষে ৬০কোটি টাকা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মঞ্চ নাটক ”সাজন মেঘ” মঞ্চায়িত হয়েছে। সারা দেশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মঞ্চ নাটক প্রচারের অংশ হিসেবে ৫ জুলাই শুক্রবার রাতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। নাটকটি রচনা করেন বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক শান্তুনু কায়সার। নিদর্শনায় ছিলেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন রেজা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
উপস্থিত ছিলেন, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির, অতিরিক্ত পুলিশ মোঃ ইকবাল হোসাইন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এস.এম শফিকুল্লাহ, উপাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান শিশির, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও নাটকের নির্দেশক চন্দন রেজা, জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার সৈয়দ মুহাম্মদ আয়াজ মাবুদ, সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কবি আবদুল মান্নান, সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের পীঠস্থান, সংস্কৃতির রাজধানী। এই সংস্কৃতির রাজধানীতে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড চলমান থাকবে। জেলা প্রশাসন সব সময় সংস্কৃতির পক্ষে, শিল্প সাহিত্যের পক্ষে। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সবাইকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংস্কৃতি কর্মকান্ডকে এগিয়ে নিতে যেতে হবে।
নাটকটির মূল সার সংক্ষেপ ছিল শান্ত-স্নিগ্ধ ছায়া সুনিবিড় গ্রাম “সাজন মেঘ”। একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর অযাচিত বর্বরতায় তাদের শান্ত জীবনে নেমে আসে আতংক, ভয়। আক্রান্ত হয় গ্রাম-হাট-ঘাট, প্রান্তর, লোকালয়। সম্ভ্রম হারায় কিশোরী-তরুণী-গৃহবধূ। রুখে দাঁড়ায় গ্রামের তরুণ, তরুণী, কৃষক, কামার-কুমার, আপামর জনতা। ধর্ম আর সমাজের সংস্কার ভেঙ্গে দেশের জন্য একাট্টা হয়ে লড়ে যায় প্রাণপনে।
নাটকটি নির্মাণ সম্পর্কে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও নাটকের নির্দেশক চন্দন রেজা বলেন, “সাজন মেঘ” নাটকটি মহান মুক্তিযুদ্ধের একটি খন্ডচিত্র। এই নাটকের মাধমে নাট্যকার সারাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতার একটি চিত্র তুলে ধরেছেন। সংলাপে গেঁথেছেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। সময়ের বাস্তবতা ও নাট্য নির্মাণের প্রয়োজনে মূল নাটকে কিছু সংযোজন বিয়োজন করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, সমাজের গোড়ামী, কুসংস্কার, কূপমন্ডকতা, ধর্মান্ধতা আর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যখন শকুনেরা জেঁকে বসেছে, ঠিক তখনই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি নাটকের মাধ্যমে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মানুষের মনে জাগ্রত করার প্রয়াসে দেশের সকল জেলায় নাট্যযজ্ঞ শুরু করেছে। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে ২৩ জন শিল্পী অভিনয় করেন।