চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া মুক্ত দিবস। দিবসটি উপলক্ষে আজ ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল পুষ্পস্তবক অর্পণ, শোভাযাত্রা, জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও আলোচনা সভা। এর আগে মোমবাতি জ্বালিয়ে শহীদদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানো হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। পরে উপজেলা পরিষদ থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে পোস্ট অফিসের সামনে শেষ হয়। সেখানে জাতীয় সঙ্গীতের সুরে পতাকা উঠানো হয়। আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিএনপি, জামায়াত, সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন।
১৯৭১ সালের এই দিনে পোস্ট অফিসের সামনেই জাতীয় পতাকা উঠানো হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন খান স্বাধীনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আখউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সজিব মিয়া, আখাউড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন আব্দু, আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সৈয়দ জমশেদ শাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহার মালদার, প্রেস ক্লাব সভাপতি মো. মানিক মিয়া, জামায়াত ইসলামের আমির মো. ইকবাল হোসেন, মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ডা. এনামুল হক মামুন। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো. জালাল হোসেন মামুনের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের প্রধান উপদেষ্টা দীপংকর ঘোষ নয়ন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা থেকে পাঠ করা হয়। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে আখাউড়া মুক্ত হয়। গত কয়েক বছর ধরে দিবসটি সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে পালিত হয়ে আসছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কোনো রকমে ঠেলা ধাক্কায় ওপরে ওঠা। এরপর শুরু একের পর ঝাঁকি। মোট ৩৬টা। ততক্ষণ পর্যন্ত ‘ইস’ আর ‘উফ’ আওয়াজ।
বেশি বেকায়দায় পড়লে শোনা যায় হায় হায় শব্দ। পড়ে গেলাম পড়ে গেলাম বলে চিৎকার। দৌড়ে এসে রক্ষার চেষ্টা। রেললাইন ১২টা, ডুয়াল গেজের।
একেকটায় তিনটি করে রেলপাত। সেই হিসাবে মোট ৩৬টি পাত পার হওয়ার সময় প্রতিবারই বেশ ঝাঁকি লাগে। এতে যানবাহনে চলাচলকারী যাত্রীরা প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। রেল ওভারপাসটি ওঠার সময়ও দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর এলাকার লাল বাজারের একটি লেভেলক্রসিংয়ে প্রতিনিয়ত এভাবেই দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এ লেভেলক্রসিং পার হয়েই যেতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। লেভেলক্রসিংয়ের পরেই রয়েছে বড় বাজার নামে একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। এ ছাড়া জেলা সদর ও উপজেলা সদরের বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এ লেভেলক্রসিং পার হয়ে এলাকায় যান।
সরজমিনে ঘুরে ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লালবাজার নামে এলাকার শেষ হতেই লেভেলক্রসিং শুরু।
এক থেকে দেড় শ গজ পার হয়ে ওপারে বড় বাজার। আখাউড়া-লাকসাম ডুয়াল গেজ প্রকল্প নির্মাণের আগে তিনটি রেললাইন পার হয়ে এপার-ওপার যাওয়া যেত। আর এখন মোট ১২টি রেললাইন বসানোয় এটি পার হতে বেগ পেতে হয়। প্রতিটি রেললাইনের পরের জায়গা বেশ উঁচু-নিচু। এ ছাড়া নতুন রেললাইন অনেক উঁচুতে নির্মাণ হওয়ার সেটি সড়ক থেকে বেশ উঁচুতে। যে কারণে ঠেলা-ধাক্কায় যানবাহন ওঠাতে হয়। বাধ্য হয়ে অনেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছেন। কখনো মালবাহী অনেক যান এখানে প্রায়ই দুর্ঘটনার মধ্যে পড়ছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, ২৪ ঘণ্টায় অর্ধশতের বেশি ট্রেন এ পথ দিয়ে চলাচল করে। যে কারণে একটু পর পর বেরিয়ার ফেলে রাখা হয় এ লেভেলক্রসিংয়ে। এতে হাসপাতালে জরুরি সেবা নিতে যাওয়া রোগীরা অনেক সময় আটকা পড়ে যান। লেভেলক্রসিং পার হতে গিয়ে বেশ ঝাঁকি লাগে বলে রোগীরা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে যানবাহন চালকরা এ পথ দিয়ে যেতেও চান না।
দুর্ভোগের বিষয়টি এ প্রতিবেদক একাধিবার নিজেই দেখেন। যানবাহন চড়তে দুর্ভোগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে গত ১৫ জানুয়ারি এ প্রতিবেদক একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চড়ে। রাধানগর চৌরাস্তা মোড় থেকে ওই লেভেলক্রসিংয়ে হয়ে স্টেশনে যাওয়ার পথে ঠিকই দুর্ভোগে পড়তে হয়। লেভেরক্রসিংয়ে ওঠার সময় এ প্রতিবেদকের অটোরিকশা আটকে যায়। একপর্যায়ে অটোরিকশাটি পেছন দিকে নামতে থাকলে অস্থায়ী বেরিয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক যুবক টেনে ধরেন।
লেভেলক্রসিং সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা আখাউড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শেখ বোরহান উদ্দিন আহমেদ এখানে একটি আন্ডারপাস বা ওভারপাস নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘উপজেলার একমাত্র হাসপাতাল, একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার এবং জেলা সদর ও আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে যেতে এ সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু সড়ক থেকে রেললাইন অনেক উঁচু হওয়া ও অনেকগুলো রেললাইন পার হতে হয় বলে দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগের শিকার এলাকার মানুষ এখানে একটি আন্ডারপাস বা ওভারপাস করার দাবিতে মানববন্ধনও করেছে। আশা করছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত বিবেচনায় নেবেন।’
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. হিমেল খান বলেন, ‘হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা এ বিষয়ে প্রতিনিয়তই অভিযোগ করেন। নতুন রেলপথ নির্মাণ হওয়ার পর থেকে চলতে গিয়ে তাদের খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে হাড়ভাঙা রোগী, গর্ভবতী নারীদের বেলায় সমস্যা হচ্ছে বেশি। এ পথ ছাড়া হাসপাতালে আসার কোনো বিকল্প রাস্তাও নেই। জনগণের সমস্যার কথা চিন্তা করে এখানে একটি আন্ডারপাস বা ওভারপাস নির্মাণের জন্য এলাকার সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।’
এ বিষয়ে লাকসাম-আখাউড়া ডুয়াল গেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘রেললাইন পার হতে গিয়ে দুর্ভোগের বিষয়টি এলাকাবাসী বলেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও বিষয়টি অবগত আছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে কিছু করার নেই। তবে যত দূর জানি পরবর্তীতে আখাউড়া-সিলেট ডুয়াল গেজ রেললাইন নির্মাণ কিংবা অন্য প্রকল্পে চলাচলের সুবিধার্থে একটি ওভারপাস কিংবা একটি আন্ডারপাসের পরিকল্পনা থাকতে পারে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর এলাকা থেকে মঙ্গলবার দুই ভারতীয় নাগরিককে আটক করে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়।
জানা যায়, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পণ্য এনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর হাতে আটক হয়েছে দুই ভারতীয় নাগরিক। ওই দুই ভারতীয় নাগরিকের কাছ থেকে থ্রিপিস, ক্রিম, মদসহ প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকার পণ্য জব্দ করে বিজিবি। এছাড়া তাদের কাছ থেকে পাসপোর্টও জব্দ করা হয়। দুই ভারতীয় নাগরিক হলো ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রামনগর এলাকার রাহুল মিয়া (২৮) ও একই এলাকার সেলিনা বেগম (৪৫)।
আজ ২৯ জানুয়ারি বুধবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
বিজিবির হাবিলদার মো. জাকির হোসেন বাদী হয়ে দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয় ওই দুই ভারতীয় নাগরিক মঙ্গলবার দুপুরে স্থলবন্দর এলাকা পার হয়ে একটি অটোরিক্সা যোগে যাওয়ার সময় তল্লাশি করা হয়। এসময় তাদের কাছে ৫২টি থ্রিপিস, ১৭০০ পিস ক্রিম, পাঁচটি মদের বোতল পাওয়া যায়। তবে এর বিপরীতে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি তারা। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে তারা এসব পণ্য আনেন বলে বিজিবির কাছে স্বীকার করেন।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন জানান, রাতে দুই ভারতীয় নাগরিককে থানায় সোপর্দ করেছে বিজিবি।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭০ জন।
আজ ১২ মে রবিবার সারাদেশের ন্যায় আখাউড়ায় এসএসসি সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়। পাশের হারের দিক থেকে সবচেয়ে ভালো করেছে ছয়গড়িয়া আলহাজ¦ শাহ আলম উচ্চস বিদ্যালয়। ২৯ জন পরীক্ষা দিয়ে ৯৬.৫৫ গড়ে ২৮ জন পাশ করেছে। তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়ের শতকরা পাশের হার ৯২.৫২।
আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১ হাজার ৬২৮ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এরমধ্যে পাশ করেছে ১ হাজার ১৯৫ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৪৩৩ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৪ জন। শতকরা পাশের হার ৭৩.৪০।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আখাউড়া নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয়। এ প্রতিষ্ঠেোনর ৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। ৭ জন জিপিএ-৫ পেয়ে ৩য় স্থানে আখাউড়া রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়।
এদিকে দাখিল পরীক্ষায় উপজেলার ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩০০ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ২৬৯ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৩১ জন। শতকরা পাশের হার ৮৯.৬৭। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১জন। এরমধ্যে আখাউড়া টেকনিক্যাল ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা সবচেয়ে বেশি ১২টি জিপিএ-৫ পেয়েছে। শতকরা শতভাগ পাশসহ মাদরাসাতু ছালেহা খাতুন দাখিল মাদরাসার ৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
কারগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৭০ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে পাশ করেছে ৬৪জন। অকৃতকার্য হয়েছে ৬ জন। শতকরা পাশের হার ৯১.৪৩। এরমধ্যে সরকারী ভোকেশনাল টেক্সটাইল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩জন এবং নুরপুর রুটি আব্দুল হক ভূঞা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন।
এদিকে, উপজেলার দুটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবছর তুলনামূলক খারাপ ফল করেছে। ২০৩ জন পরীক্ষা দিয়ে ১২৭ জন পাশ করেছে। শতকরা পাশের হার ৬২.৬৫। অপরদিকে দেবগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১০৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৭৪ জন পাশ করেছে। শতকরা পাশের হার ৭১.৮৪। এছাড়াও হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়্যালয় উচ্চ বিদ্যালয়, মনিয়ন্দ উচ্চ বিদ্যালয় ও শাহপীর কল্লা শহীদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শতকরা পাশের হার ৫০ এর কিছু বেশি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় অগ্নিবীণা রেলওয়ে মুক্ত স্কাউট গ্রুপের ৩০ বছর পূর্তি ও ৩১ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে আলোচনা সভা, লগো উন্মোচন ও কেক কেটে আনন্দ উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ১৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার সন্ধ্যায় আখাউড়া রেলওয়ে কুমার পাড়া কলোনীস্থ গ্রুপ কার্যালয় বর্ণিল সাজে সাজানো হয়।
কার্যালয় চত্বরে শিক্ষক, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও স্কাউটদের অংশগ্রহণে আনন্দঘন পরিবেশে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীয় পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আসাদুজ্জমান খান। প্রধান অতিথি ছিলেন রেলওয়ে জেলা স্কাউটস এর সহ-সভাপতি ও রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোঃ রাকিব উদ্দিন খান খাদেম, বিশেষ অথিথি ছিলেন আখাউড়া পৌরসভার কাউন্সিলর মোঃ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ইমরান, রেলওয়ে জেলা স্কাউট সম্পাদক এস. কে. খাদেম সেলিম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে গ্রুপের প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৩০ বছরের কার্যক্রম তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গ্রুপের সম্পাদক মোহাম্মদ হালিম। তিনি জানান, ১৯৯৪ সালে মোস্তাক আহমেদ খাদেম টিটু অগ্নিবীণা রেলওয়ে মুক্ত স্কাউট গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। গ্রুপটি রেলওয়ে অঞ্চলে সুনামের সাথে স্কাউটিং কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এ গ্রুপের সদস্যরা বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় পুরস্কার অর্জন করেছে। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গ্রুপের সহ সভাপতি সাংবাদিক হান্নান খাদেম, শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের প্রভাষক সামসুল আরেফিন, রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ সেলিম, সাংবাদিক জুটন বনিক, সুর্য সৈনিক স্কাউটের সহ সভাপতি সমীর চক্রবর্তী, রেলওয়ে জেলা স্কাউট সাবেক সম্পাদক আহসান কবির লিটন, সাংবাদিক নাজমুল আহমেদ রনি, যুবলীগ নেতা তারেক আহমেদ সজল, অভিভাবক জামাল আহমেদ প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আব্দুল করিম চৌধুরী রাসেল।
বক্তারা বলেন, যে কোন একটি সংগঠনের জন্য ৩০ বছর পূর্ণ করা অত্যন্ত দূরুহ কাজ। অগ্নিবীণা রেলওয়ে মুক্ত স্কাউট গ্রুপ সুনাম ও দক্ষতার সাথে তাদের সাফল্য অর্জন করেছে। বক্তারা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা লন্ডন প্রবাসী উডব্যাজার মোস্তাক আহমেদ খাদেম টিটুসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রশংসা করেন। আগামী দিনে স্কাউটিং কার্যক্রম আরও বেগবান করে ছাত্রছাত্রীকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলে সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
আলোচনা শেষে গ্রুপের নতুন লগো উন্মোচন করা হয় এবং কেক কাটা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘ প্রায় ২৩ বছর পর নিজ জন্মভূমিতে ফিরলেন হারিয়ে যাওয়া ফজিলা খাতুন নেছা (৫৫)। শুক্রবার দুপুরে ভারতের ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন আগরতলা থেকে আখাউড়া চেকপোষ্ট দিয়ে তাকে দেশে পাঠায়।
এর আগে তিনি ২০০০ সালে ঝিনাইদহ জেলার নিজ বাড়ি থেকে হারিয়ে যান। ফজিলা খাতুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালি গ্রামের খয়বার আলীর মেয়ে। এদিকে হারিয়ে যাওয়া ফজিলা খাতুনকে গ্রহণ করতে সীমান্তের শূণ্য রেখায় উপস্থিত ছিলেন তার মেয়েসহ স্বজনরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মাকে ফিরে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গেন পরেন মেয়ে পিঞ্জিরা আক্তার। মেয়ের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকেন অসুস্থ ফজিলা খাতুন। সীমান্তের শূণ্য রেখায় এসময় হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ দিন পর স্বজনকে ফিরে পেয়ে আনন্দে উচ্ছ্বাসিত হয়ে পড়েন স্বজনরা। তবে অসুস্থতার কারণে ফজিলা কথা বলতে পারেননি। তিনি কিভাবে ভারতে গিয়েছিলেন তাও জানা যায়নি।
সীমান্তের শূন্য রেখায় ফজিল খাতুনের ভাইপো মোঃ শাহজালাল বলেন, ২০২২ সালের আগস্ট মাসে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পারি আমার ফুফু ভারতের আগরতায় মানসিক হাসপাতালে আছে। তারপর সরকারের সাথে যোগাযোগ করে ত্রিপুরার হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদের সহযোগিতায় আজকে ফুফুকে দেশে আনতে পেরেছি।
মাকে ফিরে পেয়ে পিঞ্জিরা আক্তার বলেন, মা যখন হারিয়ে যায় তখন আমার বয়স ১২। শুনেছি মা হারিয়ে গেছে। মাকে অনেক খোঁজাখুজি করেও পাইনি। মা এতদিন আমাদের কাছে মৃত ছিল। আজ জীবিত ফিরে পেয়ে খুব আনন্দ লাগছে।
ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদ বলেন, দীর্ঘ ২৩ বছর পরে হারিয়ে যাওয়া এক মাকে তার সন্তানের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তিনি নিজ বাড়ি থেকে হারিয়ে যান। তার পরিবারের লোকজন তাকে অনেক খোজাখুজি করেও পায়নি। পরবর্তীতে কোন এক সময় তাকে ত্রিপুরায় পাওয়া যায়। পরে ত্রিপুরার মর্ডাণ সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে ত্রিপুরা পুলিশ আমাকে তার কথা বলে। আমি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তার তথ্য প্রেরণ করে তার নাগরিকত্ব যাচাই করে ভারত সরকারকে অবহিত করি। ভারত সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে আজকে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। তিনি ত্রিপুরা রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, একদিকে যেমন আনন্দের। একই সাথে আমাদেরকে আরও সচেতন হতে হবে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় হাই কমিশনের প্রথম সচিব মোঃ রেজাউল হক চৌধুরী, মোঃ আল আমিন, ৪২ বিএসএফ আগরতলা আইসিপির কোম্পানী কোমান্ডার ধিবেকান দিমান, আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ হাসান আহমেদ ভূইয়া, বিজিবি আখাউড়া আইসিপির ইনচার্জ মোঃ শাহআলম, ইমিগ্রেশন পুলিশের এএসআই দেওয়ান মুর্শেদুল হক প্রমুখ।