অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া হিসেবে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০ জানুয়ারি সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর ট্রাম্প বেশ কিছু নির্বাহী আদেশে সই করেন। এর মধ্যে ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত আদেশও রয়েছে।
দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে সইয়ের পর বলেন, ওহহ, এটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় এতো দিন অন্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র ‘অন্যায্য পরিমাণে’ অর্থ প্রদান করেছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ট্রাম্পের প্রথম প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে এনেছিল। ওই সময় বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়েছিল।
নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপটি অপ্রত্যাশিত নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প কার্যত ২০২০ সাল থেকেই ডব্লিউএইচও’র বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। সেসময় তিনি করোনভাইরাস মহামারি নিয়ে সংস্থাটিকে আক্রমণ করেছিলেন এবং এই সংস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল বন্ধ করার হুমকিও দিয়েছিলেন।
এরই জেরে ২০২০ সালের জুলাই মাসে বৈশ্বিক এই সংস্থাটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার জন্য আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
অনলাইন ডেস্ক :
যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে গাজায় চলছে বন্দি বিনিময়। ফিলিস্তিনি ২০০ বন্দির বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হলো ৪ ইসরাইলি সেনাকে। আন্তর্জাতিক সংস্থা রেড ক্রসের মাধ্যমে চার নারী জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। মুক্তিপ্রাপ্তদের হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
২৫ জানুয়ারি শনিবার এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানায়, ফেরত আসা চার জিম্মি বর্তমানে আইডিএফের বিশেষ বাহিনীর সঙ্গে ইসরাইলে ফিরছেন। সেখানে প্রথমে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। বিবিসি।
এদিকে জিম্মি ওই চারজন এবং তাদের পরিবারের গোপনীয়তাকে সম্মান জানাতে সবার প্রতি অনুরোধ করেছে আইডিএফের এক মুখপাত্র। সেখানে ইসরাইল প্রতিরক্ষা বাহিনীর কমান্ডার এবং সৈন্যরা ফেরত আসা জিম্মিদের স্বাগত জানায়। তারা এখন ইসরাইলে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাচ্ছেন।
মুক্তি পাওয়া চার নারী সেনা হলেন লিরি আলবাগ (১৯), কারিনা আরিয়েভ (২০), ডেনিয়েলে গিলবোয়া (২০) এবং নামা লেভি (২০)। ইসরাইলের সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম কান জানিয়েছে, তাদের ইসরাইলি আইডিএফের একটি বিশেষ সামরিক ইউনিটের যোদ্ধাদের সঙ্গে রেইমের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার কাছে নাহাল ওজ সামরিক ঘাঁটি থেকে ইসরাইলের একটি সামরিক নজরদারি ইউনিটের এই চার নারী সদস্যকে আটক করে নিয়ে যায় হামাস। এর আগে যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় ইসরাইলি চার নারী সেনাকে মুক্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছিল হামাস।
অন্যদিকে ইসরাইলি দুই কারাগার থেকে ফিলিস্তিনিদের দুই গ্রুপকে মুক্তি দেওয়া হবে। বন্দি বিনিময় সম্পন্ন হলে গাজার নেটজারিম করিডোর থেকে সরে যাবে ইসরাইলি বাহিনী। এর ফলে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের গাজার উত্তরে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পথ সুগম হবে। আল জাজিরা জানিয়েছে, উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনিরা এরই মধ্যে তাদের জিনিসপত্র গুছিয়ে নিচ্ছে এবং নেটজারিমের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে যাত্রার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের কয়েক মাসের মধ্যস্থতায় টানা ১৫ মাসের সংঘাতের পর গত সপ্তাহে গাজায় দ্বিতীয়বারের মতো যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে একমত হয় ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। পাঁচদিন পর স্থানীয় সময় রোববার বেলা সোয়া ১১টায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম দফায় ওইদিন তিন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিপরীতে ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দেয় ইসরাইল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে আক্রমণ করে।
ইসরাইল সরকারের তথ্য মতে, অতর্কিত হামলায় ওইদিন প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।
কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ওই বছরের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে প্রথম যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। সাতদিনের যুদ্ধবিরতিকালে ১১০ জন বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। বিপরীতে ইসরাইল ২৪০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়, যাদের সবাই নারী ও শিশু। প্রায় ১৫ মাস পর গত সপ্তাহে দ্বিতীয় যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুযায়ী ছয় সপ্তাহের মধ্যে হামাসের হাতে থাকা ৩৩ ইসরাইলি জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইল তাদের হাতে আটক কয়েকশত ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে। এই হিসাবে হামাস আগামী পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে আরও ২৬ জন বন্দি মুক্তি দেওয়ার কথা।
অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং’এর সাথে ফোনালাপ করেছেন। এর ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে, চীন ঘোষণা করে যে তারা সোমবার ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেংকে ওয়াশিংটনে পাঠাচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম “ট্রুথ সোশ্যাল” ‘এ এই ফোনালাপকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের জন্য “খুব ভালো” বলে অভিহিত করেন এবং বলেন যে তাঁরা বাণিজ্যিক ভারসাম্য, ফেন্টানিল, টিকটক ও “আরও অনেক বিষয়ে” আলোচনা করেন। ভয়েস অফ আমেরিকার এক প্রতিবেদনে জানানো হয় এ তথ্য।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই পোস্টে লেখেন,“এটি আমার আশা যে আমরা একত্রে বহু সমস্যার সমাধান করতে পারবো এবং তা অবিলম্বে শুরু হবে। এই পৃথিবীকে আরও শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ করার জন্য প্রেসিডেন্ট শি এবং আমি সাধ্যমত সবকিছু করবো”।
আরও পড়ুন
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি: ট্রাম্প ও বাইডেনকে নিয়ে নেতানিয়াহু যা বললেন
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম জানায় ফোনালাপের সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাঁর নির্বাচনী বিজয়ের জন্য শি শুভেচ্ছা জানান এবং আগামি চার বছর যুক্তরাষ্ট্র চীন সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়ে তাঁর এবং নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের গভীর প্রত্যাশা রয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক সিসিটিভিতে প্রকাশিত শি’র বক্তব্যে বলা হয়,“আমরা উভয়ই আমাদের মধ্যে আলাপকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছি, আমরা উভয়ই আশা করছি আমেরিকার প্রেসিডেন্টের এই নতুন মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের সূচনা হবে শুভ এবং আমরা উভয়ই চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে চাই যাতে নতুন করে এই সূচনা পর্ব থেকে আমরা আরও অগ্রগতি সাধন করতে পারি।”
শি বলেন যদিও বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে তবু প্রধান বিষয়টি হচ্ছে, “পরস্পরের মূল স্বার্থ ও প্রধান উদ্বেগগুলির প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং সমস্যার যথার্থ সমাধান খুঁজে বের করা”।
শি তাইওয়ানের বিষয়টি “যত্নসহকারে” দেখার জন্য ট্রাম্পের প্রতি জোর আবেদন জানান। বেইজিং দাবি করে যে গণতান্ত্রিক তাইওয়ান হচ্ছে তাদের এলাকার অংশ এবং ওই দ্বীপটিকে চীনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রয়োজনবোধে শক্তি প্রয়োগের হুমকি দিয়েছে।
চীনের বিবরণ অনুযায়ী, শি ও ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ, ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার সংঘাত আর প্রধান সব আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন।
১৭ জানুয়ারি শুক্রবার দিনে আরো আগের দিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে যে অভিষেক অনুষ্ঠানে শি ‘র প্রতিনিধিত্ব করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং।
আরও পড়ুন
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অনুমোদন ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার
তাঁর অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প, প্রেসিডেন্ট শি ও অন্যান্য বিদেশি নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর এক মাসেরও বেশি সময় পরে এ ঘোষণাটি আসলো। এটি অভূতপূর্ব একটি পদক্ষেপ যা আগের ঐতিহ্য থেকে ভিন্ন কারণ অতীতে বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, হানকে পাঠিয়ে বেইজিং নতুন ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি তাদের “বন্ধুত্বের মনোভাব” প্রদর্শন করছে।
বেইজিং’এ শিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি এন্ড স্ট্র্যাটেজির সিনিয়র ফেলো ঝোও বো ভয়েস অফ আমেরিকাকে ফোনে বলেন, “চীনের এমন কোন প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্য নেই যে অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্টকেই যোগ দিতে হবে। ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে ভাইস প্রেসিডেন্টকে পাঠানো সব চেয়ে ভাল একটা বিকল্প এবং এতে নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি বেইজিং’এর বন্ধুত্বের মনোভাবই ব্যক্ত হয়েছে।”
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই আমন্ত্রণে যদিও বেইজিং ইতিবাচক ভাবে সাড়া দেয়ার চেষ্টা করছে, অন্যান্য বিশেষজ্ঞ বলছেন হানের উপস্থিতি হবে প্রধানত আনুষ্ঠানিক।
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের বাকেল ইউনিভার্সিটির চীনা পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ঝিকুন ঝু বলেন, “হানের ওয়াশিংটন সফর থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু বেরিয়ে আসবে তেমনটি আমি আশা করছি না।”
আরও পড়ুন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকে মাস্ক, বেজোস ও জাকারবার্গ উপস্থিত থাকবেন
ঝু বলেন অভিষেক অনুষ্ঠানে হানের উপস্থিতি আনুষ্ঠানিক হলেও বেইজিং’এর এই পদক্ষেপ ট্রাম্পের এই দ্বিতীয় আমলের প্রশাসনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের “একটি ভাল ভিত্তি রচনা” হতে পারে।
তিনি টেলিফোনে ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “আশা করি, একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হবে এবং সামনের সপ্তাহগুলিতে, মাসগুলিতে তা টিকে থাকবে যখন দু পক্ষই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনায় বসবে এবং সম্ভবত একটা চুক্তি স্বাক্ষর করা হতে পারে”।
হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন চীনের জন্য অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে। চীন সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ক্রমশই পিছিয়ে পড়ছে।
তাঁর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিয়ানে ট্রাম্প চীনে উৎপাদিত পণ্যের উপর ৬০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সংকল্প ব্যক্ত করেছিলেন। ঝু বলেন উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের সম্ভাবনায় ট্রাম্পের এই দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের বিষয়ে বেইজিং সতর্ক বোধ করছে।
তিনি বলেন, “আমরা জানিনা ট্রাম্প কি খেলা খেলবেন, কাজেই আমি মনে করি চীনের প্রতি তাঁর কি নীতি হবে সেটা দেখার জন্য চীন অপেক্ষা করবে”।
চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করার হুমকি সত্ত্বেও, ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন দু’টি দেশের সম্পর্ক ভাল হতে পারে এবং তিনি তাঁর প্রতিনিধিদের মাধ্যমে চীনের নেতাদের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে চলছেন।
৬ জানুয়ারি টক শো’ এর একজন রক্ষনশীল উপস্থাপক হিউ হিউইটকে এক সাক্ষাত্কারে বলেন, “আর আমার মনে হচ্ছে আমরা সম্ভবত ভালো ভাবেই চলবো, আমার ভবিষ্যদ্বাণী”। তিনি আরো বলেন যে সম্পর্কটা হওয়া উচিত, “দেয়া-নেয়ার”।
তা ছাড়া ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কিছু রাজনীতিককে নিয়োগ দিচ্ছেন যারা চীনের প্রতি তাদের যুদ্ধংদেহী মনোভাবের জন্য পরিচিত, তাদের মধ্যে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে সেনেটার মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য মাইক ওয়াল্টজ।
বুধবার সিনেটে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিতকরণের শুনানীতে রুবিও চীনকে, “এ জাতির সামনে সব চাইতে শক্তিসম্পন্ন ও বিপদজনক নিকটতম প্রতিপক্ষ” বলে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, “তাদের কাছে এমন উপাদান আছে যা কখনই সোভিয়েট ইউনিয়নের কাছে ছিল না। তারা প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে আমাদের প্রতিপক্ষও প্রতিদ্বন্দ্বি, অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী , বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বি”।
তবে শুনানির সময়ে চীন সম্পর্কে রুবিওর বাহ্যত এই কঠোর বক্তব্য সত্ত্বেও, ঝু বলেন, এটা এখনও বলার সময় আসেনি যে নতুন প্রশাসনের সময়ে এই ভাষা সত্যিকারের নীতিতে পরিণত হবে কীনা।
তিনি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, “ট্রাম্প নিয়োগকৃত কোন কোন ব্যক্তি চীন সম্পর্কে যুদ্ধংদেহী মনোভাব পোষণ করলেও যেহেতু তারা ট্রাম্পের জন্য কাজ করছেন, তারা ট্রাম্পের নীতি লংঘন করবেন না।”
ঝু বলেন যেহেতু এটা পরিস্কার নয় ট্রাম্প চীনের প্রতি কি ভাবে তাঁর নীতি গঠন করবেন, ওয়াশিংটন ও বেইজিং “সতর্কতার সঙ্গেই এগিয়ে যাবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম আমলে দু’পক্ষেরই মারাত্মক অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সুতরাং মনে হচ্ছে এবার তারা নতুন করে শুরু করবে”।
অনলাইন ডেস্ক :
সরাসরি হজে পাঠানোর ক্ষেত্রে হজ এজেন্সির জন্য সর্বনিম্ন হজযাত্রীর কোটা কমিয়েছে সৌদি সরকার। ৫০০ জন থেকে ওই কোটা ২৫০ জনে নামিয়ে আনা হয়েছে। ফলে যেসব এজেন্সির হজযাত্রী ২৫০ জন হবে তারা এখন সরাসরি হজে লোক পাঠাতে পারবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি সরকার সরাসরি হজযাত্রী পাঠাতে কোটা কমানোর এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ২৭ জানুয়ারি শনিবার হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এবং এজেন্সিগুলোকে এটি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে হজ এজেন্সিগুলোকে জানানো হয়, সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিজরি ১৪৪৫/২০২৪ সনের হজ মৌসুমে অনুমোদিত প্রতিটি হজ এজেন্সির সর্বনিম্ন ৫০০ জন হজযাত্রী থাকলে ওই এজেন্সি সৌদি আরবে সরাসরি হজযাত্রী পাঠাতে পারবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কোটা কমানোর চিঠিতে জানিয়েছে, সৌদি সরকার ২০২৪ সালের হজের জন্য বাংলাদেশসহ সব দেশের হজ এজেন্সির সর্বনিম্ন কোটা প্রথমে দুই হাজার জন এবং পরবর্তী সময়ে ৫০০ জন নির্ধারণ করে পত্র দেয়। সর্বনিম্ন কোটা ৫০০ জনের পরিবর্তে আগের মতো বাংলাদেশের সব এজেন্সিকে হজযাত্রী পাঠানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক সৌদি সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, ধর্মমন্ত্রীর নির্দেশে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার সর্বশেষ গত ২৪ জানুয়ারি সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার আবদুল ফাত্তাহ সুলেমান মাশাত এবং হজ অ্যাফেয়ার্স অফিসের মহাপরিচালক ড. বদর আলসোলামির সঙ্গে টেলিফোনে কোটার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানান।
অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ জানুয়ারি ভাইস মিনিস্টারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের হজ এজেন্সির সর্বনিম্ন কোটা ৫০০ জনের পরিবর্তে ২৫০ জন নির্ধারণের কথা ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে জানানো হয়।
এ ক্ষুদে বার্তার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী কোনো হজ এজেন্সি ২৫০ জন হজযাত্রী থাকলে সরাসরি সৌদি আরবে পাঠাতে পারবে। যেসব এজেন্সির হজযাত্রীর সংখ্যা ২৫০-এর কম সেসব এজেন্সিকে অন্য এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় করে লিড এজেন্সি নির্ধারণ করে হজযাত্রী পাঠাতে হবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে জানানো হয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন (১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ সালেও বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমের কোটা ১০ হাজার ১৯৮ জন ও বেসরকারি এজেন্সির কোটায় এক লাখ ১৭ হাজার জন হজ পালন করতে পারবেন বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
এবার হজে যেতে সরকারি-বেসরকারি হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ১৫ নভেম্বর। গত ১০ ডিসেম্বর নিবন্ধন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নিবন্ধনে সাড়া না পাওয়ায় তিন দফা সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ বাড়ানো নিবন্ধনের সময় আগামী ১ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লি যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ১৮ মে পর্যন্ত বাড়াতে সম্মত হয়েছে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে দেওয়া এক বক্তব্যে ইসহাক জানান, দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এরপর তারা যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, পাকিস্তান ভারতের সাথে যুদ্ধবিরতি চায়নি, তবে ইসলামাবাদ নয়াদিল্লির সাথে ‘যৌগিক সংলাপ’ চেয়েছে, যাতে সমস্ত বিতর্কিত বিষয়ের অবসান ঘটে। ভারতের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে যদিও কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি, তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ সূত্রের বরাতে জানায়, যুদ্ধবিরতি ১৮ মে পর্যন্ত চলবে।
সূত্রগুলো সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছে, উভয় দেশের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক (ডিজিএমও) শীঘ্রই পুনরায় আলোচনা করবেন। এর আগে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী বলেছে, ১০ মে দুই মহাপরিচালকের মধ্যে সমঝোতার পর, সতর্কতার মাত্রা কমাতে আস্থা তৈরির ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে এক সশস্ত্র হামলার পর চার দিনের তীব্র আন্তঃসীমান্ত হামলা থামিয়ে ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই দেশ। ভারত কাশ্মীরের ওই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তোলে, যদিও প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। তবে পাকিস্তান এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানায়। এদিকে, আজ ১৬ মে শুক্রবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ‘বর্তমান যুদ্ধবিরতির অর্থ হলো ভারত পাকিস্তানকে তার আচরণের ভিত্তিতে পরীক্ষায় রেখেছে। যদি আচরণের উন্নতি হয়, তাহলে ঠিক আছে; তবে যদি কোনো ঝামেলা হয়, তাহলে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে।’
চলারপথে ডেস্ক :
তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার ছুঁয়েছে। তুরস্কে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮ হাজার ৪৪ দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে সিরিয়ায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার আটশ জন।
ভূমিকম্পের দ্বিতীয় সপ্তাহেও তুরস্কে উদ্ধারকাজ চলছে। তবে প্রতিদিন উদ্ধার হওয়া মানুষের সংখ্যা কমছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার কাহরামানমারাস প্রদেশের ধ্বংসস্তূপ থেকে এক কিশোরীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘ সিরিয়ায় ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকার মানুষের জন্য ৪০ কোটি ডলার সহায়তা জরুরি বলে জানায়। সংস্থাটি আরো জানায়, তুরস্কের দুর্গত এলাকার মানুষদের জন্য ১০০ কোটি ডলার সহায়তা প্রয়োজন।
জাতিসংঘের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বৃহস্পতিবার বলেন, অবর্ণনীয় কষ্ট পাচ্ছেন তারা। আমাদের অবশ্যই তাদের অন্ধকার সময়ে পাশে দাঁড়াতে হবে ও নিশ্চিত করতে হবে তারা প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবেন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরের কাছে। পরে আরও কয়েক দফায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
সূত্র : আল জাজিরা