মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র সংস্কারের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৩০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকালে গোয়ালনগর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে স্থানীয় গোয়ালনগর মাঠ প্রাঙ্গণে উক্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গোয়ালনগর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাজী তারেক মিয়ার সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ হান্নান। এসময় তিনি বলেন দলের ত্যাগী নির্যাতিত এবং আওয়ামী দু:শাসনের সময় মিথ্যা মামলা হামলায় আক্রান্তদেরকে আগামী দিনের দলের ঐক্য ভ্রাতৃত্ব এবং যেকোন ধরনের দেশ ও সংগঠন বিরোধী চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সব ধরনের ভেদাভেদ ভুলে দলকে সুসংগঠিত করতে হবে।
সমাবেশে আগত সকল নেতাকর্মীকে দেশনায়ক তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করার অনুরোধ জানান।
সাবেক সেচ্ছাসেবক দলের নেতা লায়ন মোহাম্মদ কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় আয়োজিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি একেএম খালেদ, নজরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আজিজুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো: আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
সভায় সাবেক যুবদল সভাপতি মোহাম্মদ ওমর ফারুক, সাবেক যুবদল নেতা ইউপি সদস্য জয়নাল মিয়া, জিল্লু মিয়া, নাছির উদ্দিন ভূইঁয়া, মিলন মিয়া, ছাত্রদল নেতা খাইরুল ইসলামসহ ইউনিয়ন ও ওর্য়াড পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এসময় উপজেলা ও গোয়ালনগর ইউনিয়ন বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে দুপুর থেকেই বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বিএনপির নেতাকর্মী ব্যানারসহ মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে পারিবারিক কলহের জেরে গলায় ফাঁস দিয়ে রুবিনা বেগম (২৪) নামের এক গৃহবধূর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের খাগালিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। রুবিনা বেগম খাগালিয়া গ্রামের মাহবুব মিয়ার স্ত্রী। তাদের তিন বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে রুবিনার সাথে মাহবুব মিয়ার বিয়ে হয়। ইদানীংকালে মাঝেমধ্যে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা যেত। ঘটনার দিন বিকেলে মাছ কাটা নিয়ে স্বামীর সঙ্গে বাগবিতন্ডা হয় রুবিনার। এরই জেরে গলায় ফাঁস দেয় সে। পরবর্তীতে রুবিনাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে মাহবুবের পরিবার। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রুবিনাকে মৃত ঘোষণা করলে তারা মরদেহ রেখে পালিয়ে যায়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সায়মা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ভলাকুট থেকে কয়েকজন রুবিনা নামে এক গৃহবধূকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। তবে রোগীকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছিল। এসময় রোগীর স্বজনেরা পালিয়ে গেলে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।
ভলাকুট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুবেল মিয়া জানান, গৃহবধুর গলায় ফাঁস দেওয়ার ঘটনাটি শুনেছি। এমনটি কেন হলো তা জানার চেষ্টা করছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে।
এ ব্যাপারে রুবিনার ভাই মোখলেস মিয়ার সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহাগ রানা জানান, হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ফিলিস্তিনে মুসলিমদের উপর ইসরাইলের আগ্রাসন এবং নির্বিচারে নিরপরাধ নারী ও শিশুসহ মুসলিমদের হত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।
আজ ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে নাসিরনগর উপজেলা উলামা পরিষদ এবং তৌহিদী জনতার ব্যানারে নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি বের হয়। উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় কলেজ মোড় প্রাঙ্গনে সমাবেশ ও দোয়ার মাধ্যমে মিছিলটি শেষ হয়।
নাসিরনগর উপজেলা উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা শামসুদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুস সাত্তার, উপজেলা কমপ্লেক্স মসজিদের খতিব মুফতি মুখলেছুর রহমান, মাওলানা তামজিদুল হক এনামী, হাফেজ ইকবাল, হাফেজ হোসাইন আহমেদ, মাওলানা আব্দুল কাদির, মাওলানা নাসির উদ্দিন, মুফতি সাইদুর রহমান, এস এম শহীদুল্লাহ, মাওলানা ইসলাম উদ্দিন ফারুকী, মাওলানা মুজাহিদুল ইসলাম, মাওলানা আশরাফ আলী, মাওলানা মোবারক উল্লাহ, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আব্দুল করিম, মুফতি মুজিবুর রহমান, হাফেজ কামরুল ইসলাম, মাওলানা নুর আহমদ, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মুফতি সুলাইমান, মুফতি ফিরোজ আহমদ, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা ইসমাইল, মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মাওলানা নুরুল হক, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন, মাওলানা মঞ্জুরুল হক, মাওলানা হুজাইফা, মাওলানা শরিফ উদ্দিন, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন, মোঃ গিয়াস উদ্দিন, মাওলানা নুরুল আমিন, মাওলানা ইউসুফ বিন ইকবাল, মোঃ ইমরানুর রশীদ, মাওলানা জয়নাল আবদিন, মাওলানা ইসহাক, মাওলানা সফিউল্লাহ, মাওলানা জুবায়ের আহমদ প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ইসরাইল একটি অবৈধ রাষ্ট্র। তারা ফিলিস্তিনে মুসলমানদের ওপর হামলা, নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। মুসলমানদের অন্যায়ভাবে হত্যা করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জাতিসংঘ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। প্রত্যেক মুসলমানদের ঈমানি দায়িত্ব অসহায় নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো।
এছাড়াও দেশের সকলের প্রতি ইসরাইলি সমস্ত পণ্য বয়কট করা সহ ফিলিস্তিনিদের উপর নির্যাতনের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে সকল মুসলমানদের এক হয়ে ইসরাইলদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান বক্তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ছোট একটি রুম, পাশে টয়লেট। এই রুমে প্রায় ৮-৯ মাস ধরে বন্দি মানসিক ভারসাম্যহীন সুজিত দাস। রুমের দরজার নিচে একটু ফাঁক, এই ফাঁক দিয়েই দেওয়া হয় খাবার। খাবার দেওয়ার পর এই ফাঁকটুকু আবার বন্ধ করে দেয় স্বজনেরা। এভাবেই চলছিলো সুজিতের প্রায় ৮-৯ মাস।
গতকাল সোমবার দুপুরে স্থানীয় একজন ফাঁক দিয়ে সুজিতকে দেখতে পায়। পরে তিনি পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে সুজিতকে উদ্ধার করে। ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাশিনগর এলাকার। উদ্ধার সুজিত দাস (৩৪) কাশিনগর এলাকার হরেন্দ্র দাসের ছেলে। উদ্ধারের পর পুলিশ সুজিতকে স্বজনদের মাধ্যমে গোসল করান ও ভালো কাপড় পড়ান।
নাসিরনগর থানার ওসি সোহাগ রানা সাংবাদিকদের জানান, সুজিত মানসিক ভারসাম্যহীন। ৭-৮ বছর আগে তিনি তার চাচাকে আঘাত করেন। পরে সুজিতের আঘাতে তার চাচার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর সুজিত জেল খাটে। জেল থেকে বের হয়ে আবার পাগলামি শুরু করে সুজিত। এতে পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। কাকে, কখন আবার আঘাত করে। পরিবারের স্বজনেরা সুজিতকে অনেক চিকিৎসাও করায়। তাতেও তার কোনো কাজ হয়নি। পরে পরিবারের সদস্যরা নিজেদের নিরাপত্তা স্বার্থে ছোট্ট একটি রুমে তাকে আটকে রাখে। এই রুমে সুজিত প্রায় ৮-৯ মাস আটকা ছিলো।
২৯ এপ্রিল সোমবার দুপুরে স্থানীয় একজনের মাধ্যমে খবর পায় পুলিশ। পরে পুলিশ এসে এই রুম থেকে সুজিতকে উদ্ধার করে। পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে সুজিতকে আবারো চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার জেঠাগ্রাম উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিবার্চিত হয়েছেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আব্বাস উদ্দিন।
এ উপলক্ষে আজ ৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আজহারুল ইসলাম ভুইয়ার সভাপতিত্বে বিদ্যালয়ের সদস্য সচিব প্রধান শিক্ষক মো: আওলাদ হোসেন খানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য অভিভাবক সদস্য মো: জাহের মিয়া, বিপ্লব দেব, মোছা আলী, মোঃ মিজানুর রহমান ও সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সদস্য শিরিন আক্তার, শিক্ষক প্রতিনিধি মো: নজরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষক প্রতিনিধি রাখী রানী দেব।
সভায় নির্বাচিত অভিভাবক ও শিক্ষক প্রতিনিধিগণের সর্বসম্মতিক্রমে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অ্যাডভোকেট মোঃ আব্বাস উদ্দিন জেঠাগ্রাম উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। উল্লেখ্য ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ আব্বাস উদ্দিন এর আগেও একাধিবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিবার্চিত হয়েছেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
নব-নির্বাচিত সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আব্বাস উদ্দিন বিদ্যালয়ের উন্নয়নে সব ধরনের কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন জেঠাগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে আমি শিক্ষক ও অভিভাবকদের সাথে নিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ করতে চাই।
চলারপথে রিপোর্ট :
বেঙ্গাউতা গ্রামে বাস করেন এক হাজার পরিবারের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। অবস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নে। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের এ গ্রামে শিশু রয়েছে অন্তত ৫০০। স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের জন্য কোনো বিদ্যালয় নির্মিত হয়নি গ্রামটিতে। সবচেয়ে কাছের যে বিদ্যালয়, সেই কালিউতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থানও প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। রাস্তাঘাট বেহাল হওয়ায় বছরের প্রায় ছয় মাস নৌকা ছাড়া যাতায়াত করতে পারেন না বাসিন্দারা। এ সময় চলাচলে ঝুঁকি থাকায় শিশুরাও দূরের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।
এ গ্রামের বাসিন্দা বোরহান উদ্দিন খান পড়েন রাজধানী ঢাকার তিতুমীর কলেজে। সেখানকার অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র বোরহান আক্ষেপের সুরে বলছিলেন, ‘আমাদের গ্রামে স্কুল নেই, রাস্তাঘাট নেই। মানুষের চেহারা নিয়ে কেবল বেঁচে আছি। শিক্ষার অভাবে প্রকৃত মনুষ্যত্ব জাগছে না।’ বোরহান আরও বলেন, এখানে শিক্ষিত কোনো মানুষ থাকেন না। যাঁদের অবস্থান একটু ভালো, তাঁরা চলে যান শহরে। ফলে বাসিন্দাদের সবাই নিরক্ষর।
মো. আমির বলেন, রাস্তাঘাট না থাকায় পাশের গ্রামেও যেতে হয় ফসলি জমি মাড়িয়ে। বর্ষায় তা-ও ডুবে যায়। যে কারণে ছয় মাস কোথাও যেতে পারেন না। নৌকার পথ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিশুরা পাশের গ্রামের বিদ্যালয়ে যেতে চায় না।
কালিউতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুবনা আক্তার বলেন, বেঙ্গাউতায় আনুমানিক পাঁচ শতাধিক শিশু রয়েছে। নদী পার হয়ে বছরের তিন-চার মাস কিছু শিশু বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। সম্প্রতি তাদের আসা কমে গেছে। তিনি শুনেছেন মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছে অনেকে।
এর ইঙ্গিত মেলে বিদ্যালয়টির দুই ছাত্রীর কথায়। চতুর্থ শ্রেণির আফরোজা আক্তার বলল, ‘আমরার গ্রামে একটা ইস্কুল হইলে ভালা হইতো। এতো দূরের ইস্কুলে যাইতে মন চায় না। আব্বায় কইছে মাদ্রাসায় ভর্তি কইরা দিবো।’
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী বিলকিস আক্তারের আদর্শ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা। তাঁদের মতো সে ভবিষ্যতে শিক্ষাদান করতে চায় অন্যদের। তবে এ পথে যে বাধা অনেক। বিলকিস বলে, ‘এতো দূর থেকে ইস্কুলে আইতে পারি না। বৃষ্টি আইলে বইখাতা ভিইজ্জা যায়। বন্যার সময় নৌকা দিয়া আইতে ডর (ভয়) লাগে।’ তাই স্থানীয় খালের ওপর সেতু নির্মাণের দাবিও জানায় সে।
সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে এ গ্রামের মানুষ বঞ্চিত বলে স্বীকার করেন চাপরতলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মনসুর। তিনি বলেন, এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও রাস্তাঘাট তৈরি জরুরি।
জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার ১৩২টি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১২৪টি। তবে ১৭টি গ্রাম বিদ্যালয়হীন। এর একটি এই বেঙ্গাউতা। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইকবাল মিয়া বলেন, বিদ্যালয় স্থাপনে ৩৩ শতক জায়গার প্রয়োজন। জায়গার খোঁজ পেলে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবেন।
ইউএনও মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জেনেছেন। ওই গ্রামে বিদ্যালয় নির্মাণে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।