চলারপথে রিপোর্ট :
ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে গাছ পড়ে চট্টগ্রামগামী ননস্টপ ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আটকা পড়েছে।
আজ ১৭ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের কালিসীমা এলাকায় রেললাইনে এ ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটগামী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সদর উপজেলায় কালিসীমা এলাকায় রেললাইনের ওপর একটি গাছ পড়ে যায়। এতে চট্টগ্রামগামী ননস্টপ সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর রেলস্টেশনে সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্টপেজ দিতে হয়েছে।
গাছ সরানোর পর ট্রেন ছেড়ে যাবে বলে জানান স্টেশন মাস্টার।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হৃদয় (২৫) নামে এক যুবককে খুন করা হয়েছে।
এ ঘটনা ঘটেছে আজ ১৩ জুন বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামে ।
নিহত হৃদয় যাত্রাপুর গ্রামের মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করেছে। এদিকে ঘটনার ৩ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের মুলহোতা ঘাতক মাদক ব্যবসায়ী রুবেলকে (৪০) বাড়ির পাশে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত হৃদয় ও ঘাতক রুবেলের বাড়ি যাত্রাপুর একই পাড়ায়। রুবেলের নামে থানায় একাধীক মামলা রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানাযায়, বৃহস্পতিবার সকালে হৃদয়কে তার নিজবাড়ি থেকে ডেকে মাদকব্যবসায়ী রুবেল তার বাড়িতে নিয়ে যায়।তার বাড়ির উঠোনে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির এক পর্যায়ে হৃদয়কে ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে রুবেল পালিয়ে যায়।পরে স্থানীয় লোকজন হৃদয়কে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তিতে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে ভৈরব এলাকায় মারা যায়।
খবর পেয়ে প্রথমে থানা পুলিশ ও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘাতক রুবেল বাড়ির পাশেই আত্মগোপন করে আছে জেনে পুলিশ পুরো এলকাটি ঘিরে ফেলে এবং ঘটনার ৩ ঘণ্টার মধ্যেই পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এ ব্যাপারে নিহতের বাবা মো. জসিম উদ্দিন জানান, সকালে আমার ছেলে হৃদয়কে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় রুবেল। কিছুক্ষণ পরে আমার মেয়ের জামাইয়ের ফোনে জানতে পারি আমার ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় উপজেলা হাসপাতালে। পরে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে হৃদয় মারা যায়।
তিনি বলেন, আমার ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। খুনিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।
ঘাতক রুবেলের মা লালু বেগম জানান, বাড়ির উঠোনেই হৃদয়ের সাথে রুবেলের হাতাহাতির এক পর্যায়ে রুবেল হৃদয়কে ছুরিকাঘাত করে ।
তিনি বলেন, আমার এই ছেলে মাদকাসক্ত, তার অত্যাচারে আমার পরিবারটি ধ্বংশ হয়ে গেছে। এব্যাপারে বার বার পুলিশকে বলেও এর কোনো প্রতিকার পায়নি। তার জন্য আমার স্বামী স্ট্রোক করে মারা গেছে। আমি নিজে স্ট্রোক করে চিকিৎসাধীন আছি। সে যেন জেল থেকে বেরিয়ে আসতে না পারে, আমি তার কঠিন শাস্তি দাবি করছি।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নাহিদ আহম্মেদ জানান, হত্যার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও বলা যাচ্ছে না। ঘটনার মূলহোতা রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যা মামলা রুজু করার পর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে উপ-নির্বাচনে ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীকে প্রার্থী শাহজাহান আলম সাজু।
৫ নভেম্বর রবিবার রাত সোয়া ৯টায় এ ফলাফল ঘোষণা করেন উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম।
সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। সাজুর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৫৭৭ ভোট।
বাকি তিন প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ লাঙল প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ১৮৬ ভোট, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল গোলাপ ফুল প্রতীকে পেয়েছেন ৫৫১ ভোট এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আব্দুর রাজ্জাক আম প্রতীকে ৭৩৯ পেয়েছেন। এছাড়া ত্রুটিপূর্ণ থাকায় ভোট বাতিল হয়েছে ১৩০৮টি।
বহুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ৫০ বছর পর আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক জয়লাভ করলো। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর খুনি তাহের উদ্দিন ঠাকুর। এরপর সরাইল-আশুগঞ্জ নিয়ে গঠিত এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে কেউ জয়লাভ করতে পারেননি। তাহের উদ্দিন ঠাকুরের পর ১৯৭৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করে উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা। পরবর্তীতে একই বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিএনপির প্রার্থী ফরিদুল হুদা ধানের শীষ প্রতীককে জয়লাভ করেন।
১৯৮৬ ও ৮৮ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হুমায়ুন কবির লাঙল প্রতীকে জয়লাভ করেন। বিএনপিতে যোগদান করলে ১৯৯১, ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ৯৬-এর ১২ জুন নির্বাচনে উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা জয়লাভ করেন। ২০০১ সালে চার দলীয় জোট থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ফজলুল হক আমিনী জয়লাভ করেন। ২০০৮ ও ২০১৩ সালের নির্বাচনে মহাজোট থেকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয়পার্টির প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা জয় পান।
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের বিএনপির প্রার্থী উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা ফের বিজয়ী হন। এরপর তিনি জাতীয় সংসদ ও বিএনপি থেকে পদত্যাগ করলে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে কলারছড়ি প্রতীকে উকিল আব্দুস সাত্তার আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার মৃত্যুতে রোববার উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান আলম নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করলেন।
৫০ বছর পর আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করায় উচ্ছ্বসিত দলীয় নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর খণ্ডখণ্ড আনন্দ মিছিল বের করেন তারা।
এ বিষয়ে সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সরাইল উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, আমরা নেত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। দীর্ঘদিন পর এ আসনে নৌকা প্রতীক জয় পেয়েছে। এতে দলের সবাই আনন্দিত-উৎফুল্ল। আমরা দীর্ঘদিন পর নৌকা উদ্ধার করতে পেরেছি।
জয়ের পর আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু বলেন, আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি বলেছিলাম দীর্ঘদিন আমরা যে বঞ্চনার শিকার হয়েছি, এর থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা চালিয়ে যাবো। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবের সফল যেন হতে পারি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে ৩৫০ বোতল ফেনসিডিল ও ৪৭ বোতল বিদেশী মদসহ ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় মাদকদ্রব্য বহনকারী দুইটি ট্রাক জব্দ করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ উপজেলার সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে থেকে পৃথক অভিযানে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার ইছামতি গ্রামের ফয়সল আহমদ ( ৩০), একই এলাকার মোঃ মাসুদ আহমেদ (৩৩), নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের মোঃ রাকিব (৩২) ও কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার নেয়ামতপুর গ্রামের রুমন চন্দ্র দাশ (১৯)।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহাম্মেদ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে আশুগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে অভিযান চালিয়ে একটি ট্রাক আটক করা হয়। পরে ট্রাকে তল্লাশী চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী ফয়সল আহমদ ও মাসুদ আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে একই স্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে আরেকটি ট্রাক আটক করা হয়। পরে ট্রাকে তল্লাশী করে ৪৭ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
জন্ম নিবন্ধনের কাগজে সই আনতে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের হাতে সংরক্ষিত নারী সদস্য ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার পর ভুক্তভোগী নারী বিয়ের জন্য চাপ দিলে চেয়ারম্যান প্রথমে রাজি হলেও পরে অস্বীকার করেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত চেয়াম্যানের নাম মো. সোলাইমান মিয়া। তিনি তালশহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। অন্যদিকে ভুক্তভোগী একই ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য।
ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় সাত মাস আগে একটি জন্ম নিবন্ধনে স্বাক্ষর নিতে তিনি চেয়ারম্যান সোলাইমান মিয়ার বাড়িতে যান। সেখানে একা পেয়ে চেয়ারম্যান তাকে ধর্ষণ করেন। পরে ওই নারী ঘটনা প্রকাশ করে দিতে চাইলে, সোলাইমান মিয়া তাৎক্ষণিকভাবে তার কাছে মাফ চান এবং তাকে বিয়ে করবেন বলে কথা দেন। পরে ওই নারী সদস্যকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রায় ৭ মাস ধরে ঢাকার ঈশা খাঁ হোটেলসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখেন।
দুই মাস আগেও তিনি দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে জানান। পরে চেয়ারম্যানের কথায় সেই বাচ্চাও নষ্ট করে ফেলেন ভুক্তভোগী।
এখন ইউপি চেয়ারম্যান সোলাইমান মিয়া তাকে বিয়ে না করলে ভুক্তভোগী ওই নারী বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করবেন বলে জানান। পাশাপাশি তাকে বিষের বোতল হাতে নিয়ে ঘুরতেও দেখা গেছে বলে জানায় স্থানীয়রা।
এদিকে এসব ঘটনা ওই নারীর স্বামী জেনে ফেলেন এবং এর জেরে গত ২৫ মে তাকে তালাক দেন।
অন্যদিকে গত ২৯ মে রাতে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ৬ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে বিষয়টি জোরপূর্বক আপস মীমাংসা করে দিয়েছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে।
এ বিষয়ে তালশহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সোলমান মিয়া বলেন, এ ধরনের অভিযোগের কথা আমি শুনেছি। তবে এখনো মূল কারণ সম্পর্কে অবগত হইনি। আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আশুগঞ্জ প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ বাসায় ফিরেছেন। ২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ৫টার দিকে তিনি বাসায় ফেরেন।
২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সাংবাদিকরা তার বাসায় যান। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘প্রথম থেকে আমার কাছে নির্বাচন অগোছালো মনে হয়েছিল। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি বেশি চাপ নিতে পারছিলাম না। বেশি চাপ অনুভব করাতে আমি নির্বাচন থেকে সরে গেছি। চাপ নিয়ে আমি থাকতে পারব না। এ জন্য আমি নির্বাচন ছাইড়া সইরা গেছি।’
আবু আসিফ বলেন, ‘চাপ নিতে পারছিলাম না। আমি মানসিকভাবে ভেঙে গিয়েছিলাম। নির্বাচন শেষ হয়েছে, আমি চলে এসেছি।’ কোথায় ছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ছিলাম আমার একটি জায়গায়।’ সরে দাঁড়ানোর জন্য কেউ কোনো চাপ বা ভয়ভীতি দেখিয়েছে কিনা, জানতে চাইলে স্ত্রী মেহেরুননিসা মেহেরীন তাকে থামিয়ে দেন।
সন্ধ্যায় আবু আসিফ নিজ কক্ষে বিছানায় কম্বল জড়িয়ে শুয়েছিলেন। কিছুটা অসুস্থ দেখাচ্ছিল তাকে। সেই সময় স্ত্রী মেহেরুননিসা, শ্যালক সায়ায়েত সুমন, দারোয়ান ইছু মিয়াসহ অনেকেই তার কক্ষে ছিলেন।
আসিফের স্ত্রী মেহেরুননিসা মেহেরীন বলেন, ‘আমি আশুগঞ্জের বাসায় ছিলাম। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টার দিকে জানতে পারি, স্বামী ঢাকার বসুন্ধরার বাসায় ফিরেছেন। আমাকে ফোন দেওয়ার পর ঢাকায় চলে যাই। স্বামীকে নিয়ে বিকাল ৫টায় আশুগঞ্জে চলে আসি। তিনি অসুস্থ বোধ করছেন।’
মেহেরুননিসা বলেন, নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন আগে থেকে তিনি চাপ অনুভব করা শুরু করেন। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। তাই চাপমুক্ত থাকতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এক কাপড়ে গেছেন, এক কাপড়েই ফিরেছেন। এতটাই হতাশায় ভুগছিলেন তিনি, নিজের মুঠোফোনটিও বাসায় রেখে চলে যান।
নিরাপত্তাহীনতার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি ভয় পাচ্ছিলেন। নিজে নিজে ভয় পাচ্ছিলেন। অন্য কোনো কারণ নেই। কোনো সংস্থা বা কেউ ভয় দেখিয়েছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানসিক চাপ থেকে ভয় পাচ্ছিলেন। নিখোঁজের দু’দিন আগেও তিনি কাজে বের হননি। মানসিক চাপে থাকলে মানুষ যেমন অসুস্থ থাকে, তেমনই এখন তার অবস্থা।
এর আগে দুপুরে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন মেহেরুননিসার বরাত দিয়ে আসিফের সন্ধান পাওয়ার কথা জানান। তিনি বলেছিলেন, আসিফের স্ত্রী জানিয়েছেন – তিনি রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় তাদের বাসায় আছেন। সন্ধ্যার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌঁছাবেন।
আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে জয়ী বিএনপির দলছুট নেতা আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে আবু আসিফের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। মুঠোফোন বাসায় চার্জারে রেখে বের হন তিনি। এর পর থেকে তার সঙ্গে পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। নিখোঁজের ৯২ ঘণ্টা পর তার সন্ধানে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলমের কাছে লিখিত আবেদন করেছিলেন তার স্ত্রী মেহেরুননিসা।